ঢাকা ০৯:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo তানোরে নতুন ধানের জাত ব্রি ধান ১০৩ এর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত Logo প্রিপেইড মিটার স্থাপন বন্ধ ও মামলা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে মৌন মিছিল ও স্মারকলিপি হস্তান্তর Logo সৈয়দপুরে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার Logo শ্রীমঙ্গলে সাংবাদিকদের সাথে সংসদ সদস্য প্রার্থী হারুনুর রশিদের মতবিনিময় সভা Logo মোবাইল-ই কাল হলো নবম শ্রেণীর ছাত্রী জ্যামির, শিক্ষকের শাসন -অতঃপর বিষপানের মৃত্যু Logo রাজধানীর বাড্ডা ও শাহজাদপুরে ২ বাসে আগুন Logo রাজধানীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে একজন নিহত Logo চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ সার ব্যবসায়ীকে ১ মাসের কারাদণ্ড ও জরিমানা Logo মহাদেবপুরে আদালতের আদেশ অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা Logo দুর্গাপুরে ‎রাজশাহী-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন 

এএসআই মাসুদ আলমের এত সম্পদ !

এ এস আই মাসুদ

পুলিশের পোশাকে আইন রক্ষক, কিন্তু ভেতরে অন্য এক কাহিনী। বর্তমানে কক্সবাজার টেকনাফে (ডিএসবি) কর্মরত এএসআই মো. মাসুদ আলমকে ঘিরে উঠে আসছে বিস্ময়কর সব অভিযোগ। এক সাধারণ কনস্টেবল থেকে যাত্রা শুরু করা এই কর্মকর্তা কীভাবে বিপুল সম্পদের মালিক হলেন, কীভাবে ঘুষ-বাণিজ্য আর রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় তার এমন উথ্থান ঘটল এই রহস্য এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
সূত্রে জানা যায়, মো. মাসুদ আলম পুলিশের কনস্টেবল হিসেবে চাকরি জীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে পদোন্নতি পেয়ে তিনি এএসআই পদে অধিষ্ঠিত হন। দীর্ঘদিন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিশেষ শাখা (এসবি)-তে কর্মরত থাকার সময় থেকেই অভিযোগ, তিনি অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, একসময় পতিত আওয়ামী সরকারের দুজন ক্ষমতাশালী মন্ত্রীর গানম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন মাসুদ আলম। তবে গত ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর তাকে বদলি করে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার ডিএসবি শাখায় পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার বিবির বাগিচা এলাকায় বসবাস করছেন এবং বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা ওসি মাজাহারের বাড়িতে ভাড়া থাকেন।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, এএসআই মাসুদ আলমের সম্পদের আড়ালে লুকানো অনেক রহস্য। যাত্রাবাড়ীতে ওসি মাজাহারের বাড়ির পাশেই নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে মাসুদ আলম উচ্চ মূল্যে একটি ফ্ল্যাট বুকিং দিয়েছেন। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী কাজলা স্কুল গলির ভিতরে মদিনা মসজিদের বিপরীতে একটি একতলা বাড়ি কিনেছেন। এছাড়া নিজের উপজেলার বাকেরগঞ্জে নাম-বেনামে একাধিক সম্পদ রয়েছে। শুধু তাই নয়, এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি নিজেকে বারবার দানবীর হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করে। অভিযোগ রয়েছে, টেকনাফে বদলি হওয়া সত্ত্বেও মোটা অঙ্কের অর্থে আবার ঢাকায় পোস্টিং নেওয়ার জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।

স্থানীয়রা বলছেন, “একজন এএসআই হয়ে এতো সম্পদ আর প্রভাব… এটা স্বাভাবিক হতে পারে না। তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।”

প্রতিবেদন প্রকাশ করার স্বার্থে এই বিষয় নিয়ে প্রতিবেদকের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত এএসআই মাসুদ আলমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে সাংবাদিককে ‘ম্যানেজ’ করার চেষ্টা করেন এবং সংবাদ প্রকাশ না করার করজোড়ে অনুরোধ জানান। কিন্তু সাংবাদিক অনৈতিক প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে, তিনি বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিতে শুরু করেন। শুধু নয় এমনকি এই প্রতিবেদককে মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে সংবাদ প্রকাশ ঠেকানোর চেষ্টাও করেন।

আইনের পোশাকে থাকা ব্যক্তির হাতে সাংবাদিক হুমকির শিকার হওয়া গণতান্ত্রিক সমাজের জন্য এক অশনি সংকেত। প্রশাসনের দ্রুত তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপই এই ঘটনার সঠিক জবাব হতে পারে — এমনটাই মনে করছেন সাধারণ মানুষ ও সংবাদকর্মীরা।

একজন সাধারণ কনস্টেবল থেকে এএসআই হওয়া মাসুদ আলমের এই উত্থান কি কেবল ভাগ্যের খেলা, নাকি ক্ষমতার অপব্যবহার নাকি সীমাহীন দুর্নীতি,তা এখনো অজানা। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রশ্নগুলো থেকে যাচ্ছে অমীমাংসিত—কিন্তু নিশ্চিত একটিই, পুলিশি পোশাকে এমন বিতর্কিত কর্মকাণ্ড দেশের সাধারণ মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে। (চলবে)

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

তানোরে নতুন ধানের জাত ব্রি ধান ১০৩ এর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত

এএসআই মাসুদ আলমের এত সম্পদ !

Update Time : ১০:২০:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

পুলিশের পোশাকে আইন রক্ষক, কিন্তু ভেতরে অন্য এক কাহিনী। বর্তমানে কক্সবাজার টেকনাফে (ডিএসবি) কর্মরত এএসআই মো. মাসুদ আলমকে ঘিরে উঠে আসছে বিস্ময়কর সব অভিযোগ। এক সাধারণ কনস্টেবল থেকে যাত্রা শুরু করা এই কর্মকর্তা কীভাবে বিপুল সম্পদের মালিক হলেন, কীভাবে ঘুষ-বাণিজ্য আর রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় তার এমন উথ্থান ঘটল এই রহস্য এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
সূত্রে জানা যায়, মো. মাসুদ আলম পুলিশের কনস্টেবল হিসেবে চাকরি জীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে পদোন্নতি পেয়ে তিনি এএসআই পদে অধিষ্ঠিত হন। দীর্ঘদিন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিশেষ শাখা (এসবি)-তে কর্মরত থাকার সময় থেকেই অভিযোগ, তিনি অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, একসময় পতিত আওয়ামী সরকারের দুজন ক্ষমতাশালী মন্ত্রীর গানম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন মাসুদ আলম। তবে গত ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর তাকে বদলি করে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার ডিএসবি শাখায় পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার বিবির বাগিচা এলাকায় বসবাস করছেন এবং বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা ওসি মাজাহারের বাড়িতে ভাড়া থাকেন।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, এএসআই মাসুদ আলমের সম্পদের আড়ালে লুকানো অনেক রহস্য। যাত্রাবাড়ীতে ওসি মাজাহারের বাড়ির পাশেই নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে মাসুদ আলম উচ্চ মূল্যে একটি ফ্ল্যাট বুকিং দিয়েছেন। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী কাজলা স্কুল গলির ভিতরে মদিনা মসজিদের বিপরীতে একটি একতলা বাড়ি কিনেছেন। এছাড়া নিজের উপজেলার বাকেরগঞ্জে নাম-বেনামে একাধিক সম্পদ রয়েছে। শুধু তাই নয়, এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি নিজেকে বারবার দানবীর হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করে। অভিযোগ রয়েছে, টেকনাফে বদলি হওয়া সত্ত্বেও মোটা অঙ্কের অর্থে আবার ঢাকায় পোস্টিং নেওয়ার জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।

স্থানীয়রা বলছেন, “একজন এএসআই হয়ে এতো সম্পদ আর প্রভাব… এটা স্বাভাবিক হতে পারে না। তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।”

প্রতিবেদন প্রকাশ করার স্বার্থে এই বিষয় নিয়ে প্রতিবেদকের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত এএসআই মাসুদ আলমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে সাংবাদিককে ‘ম্যানেজ’ করার চেষ্টা করেন এবং সংবাদ প্রকাশ না করার করজোড়ে অনুরোধ জানান। কিন্তু সাংবাদিক অনৈতিক প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে, তিনি বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিতে শুরু করেন। শুধু নয় এমনকি এই প্রতিবেদককে মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে সংবাদ প্রকাশ ঠেকানোর চেষ্টাও করেন।

আইনের পোশাকে থাকা ব্যক্তির হাতে সাংবাদিক হুমকির শিকার হওয়া গণতান্ত্রিক সমাজের জন্য এক অশনি সংকেত। প্রশাসনের দ্রুত তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপই এই ঘটনার সঠিক জবাব হতে পারে — এমনটাই মনে করছেন সাধারণ মানুষ ও সংবাদকর্মীরা।

একজন সাধারণ কনস্টেবল থেকে এএসআই হওয়া মাসুদ আলমের এই উত্থান কি কেবল ভাগ্যের খেলা, নাকি ক্ষমতার অপব্যবহার নাকি সীমাহীন দুর্নীতি,তা এখনো অজানা। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রশ্নগুলো থেকে যাচ্ছে অমীমাংসিত—কিন্তু নিশ্চিত একটিই, পুলিশি পোশাকে এমন বিতর্কিত কর্মকাণ্ড দেশের সাধারণ মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে। (চলবে)