ঢাকা ০৭:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo স্কয়ার ফার্মারর বিরুদ্ধে ডোজ প্রতারণা ও রিপ্যাকিংয়ের অভিযোগে প্রেস কনফারেন্স শনিবার Logo ৫৭ বছরেও শেবাচিমে চালু হয়নি নিউরো ওয়ার্ড, স্ট্রোকের রোগীদের চরম ভোগান্তি Logo সৈয়দপুরে আর্মি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান দিবস পালিত Logo তানোরে নতুন ধানের জাত ব্রি ধান ১০৩ এর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত Logo প্রিপেইড মিটার স্থাপন বন্ধ ও মামলা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে মৌন মিছিল ও স্মারকলিপি হস্তান্তর Logo সৈয়দপুরে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার Logo শ্রীমঙ্গলে সাংবাদিকদের সাথে সংসদ সদস্য প্রার্থী হারুনুর রশিদের মতবিনিময় সভা Logo মোবাইল-ই কাল হলো নবম শ্রেণীর ছাত্রী জ্যামির, শিক্ষকের শাসন -অতঃপর বিষপানের মৃত্যু Logo রাজধানীর বাড্ডা ও শাহজাদপুরে ২ বাসে আগুন Logo রাজধানীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে একজন নিহত

পাঁচ মাসে ১৪১টি মব হামলায় নিহত ৫২

ঢাকা: দেশে ১৪১টি মব হামলার ঘটনা ঘটেছে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত। এই পাঁচ মাসে নিহত হয়েছেন ৫২ জন। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ২৮৯ জন। মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের পরিসংখ্যানে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

সম্প্রতি রাজধানীর উত্তরায় দিনে-দুপুরে মব (জনতার উচ্ছৃঙ্খলা) তৈরি করে চেষ্টা করা হয় আবাসিক হোটেল দখলের। মোটরসাইকেলে এসে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে দুর্বৃত্তরা। এর আগে গত মে মাসে, ধানমন্ডিতে স্বৈরাচার সরকারের দোসর রয়েছে দাবি করে একটি বাড়িতে ঢুকতে চায় একদল তরুণ। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এরপর ২২ জুন উত্তরায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদাকে জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছনার ঘটনায় আবারও সামনে আসে মবের দৌরাত্ম্য। মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিলেও নৈরাজ্য যেনো থামছেই না। এদিকে অপরাধ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পাঁচ আগস্টের পর বেশিরভাগ মব হামলার ঘটনাই ছিলো পরিকল্পিত। নিরাপত্তা শঙ্কায় নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হয় পুলিশের।

এদিকে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের এক তথ্য বলছে, সারাদেশে জানুয়ারি মাসে ২১টি মবের ঘটনায় ১২ জন নিহত ও ৩৮ জন আহত হয়েছেন। ফেব্রুয়ারিতে নিহত ৮ ও আহত ৩৪ জন। মার্চে ৩৯টি ঘটনায় উচ্ছৃঙ্খল জনতার হাতে নিহত ১৩ ও আহত ৯৬। এপ্রিলে ২৭টি মবের ঘটনায় ১০ জন নিহত ও আহত ৫৩। আর মে মাসে মবের বিশৃঙ্খলার ঘটনা ৩৬টি এবং নিহত ৯, আহত ৬৮ জন।

এদিকে মব জাস্টিস এর নামে হামলার ঘটনায় নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও। সরকার এক বিবৃতিতে, মবে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিলেও থামছে না মব সন্ত্রাস।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর বলেন, ‘যারা মবের সঙ্গে জড়িত তাদের কিন্তু আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। ভবিষ্যতে এই ঘটনা আর ঘটুক এটি আমরা আর প্রত্যাশা করি না। যদি কেউ এমন ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করে তাহলে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’

এদিকে অপরাধ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পুলিশ সদস্যদের মাঝেই নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা কাটেনি এখনও। তাই পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণও করতে পারছে না বাহিনী। সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক এই বিষয়ে নিজের মতামত জানিয়ে বলেন, ‘এই পরিকল্পিত আক্রমণকে মব দিয়ে কাটিয়ে ওঠা যাবে না। বিবৃতির দেশ বাংলাদেশ না, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।’

এদিকে একাধিক মানবাধিকার সংস্থা মব সন্ত্রাসকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে বিবৃতি দিয়েছে। এর পাশাপাশি আইন ও সালিশ কেন্দ্রসহ অনেক সংগঠনই জানিয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

স্কয়ার ফার্মারর বিরুদ্ধে ডোজ প্রতারণা ও রিপ্যাকিংয়ের অভিযোগে প্রেস কনফারেন্স শনিবার

পাঁচ মাসে ১৪১টি মব হামলায় নিহত ৫২

Update Time : ০৫:০৬:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫
ঢাকা: দেশে ১৪১টি মব হামলার ঘটনা ঘটেছে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত। এই পাঁচ মাসে নিহত হয়েছেন ৫২ জন। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ২৮৯ জন। মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের পরিসংখ্যানে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

সম্প্রতি রাজধানীর উত্তরায় দিনে-দুপুরে মব (জনতার উচ্ছৃঙ্খলা) তৈরি করে চেষ্টা করা হয় আবাসিক হোটেল দখলের। মোটরসাইকেলে এসে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে দুর্বৃত্তরা। এর আগে গত মে মাসে, ধানমন্ডিতে স্বৈরাচার সরকারের দোসর রয়েছে দাবি করে একটি বাড়িতে ঢুকতে চায় একদল তরুণ। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এরপর ২২ জুন উত্তরায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদাকে জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছনার ঘটনায় আবারও সামনে আসে মবের দৌরাত্ম্য। মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিলেও নৈরাজ্য যেনো থামছেই না। এদিকে অপরাধ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পাঁচ আগস্টের পর বেশিরভাগ মব হামলার ঘটনাই ছিলো পরিকল্পিত। নিরাপত্তা শঙ্কায় নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হয় পুলিশের।

এদিকে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের এক তথ্য বলছে, সারাদেশে জানুয়ারি মাসে ২১টি মবের ঘটনায় ১২ জন নিহত ও ৩৮ জন আহত হয়েছেন। ফেব্রুয়ারিতে নিহত ৮ ও আহত ৩৪ জন। মার্চে ৩৯টি ঘটনায় উচ্ছৃঙ্খল জনতার হাতে নিহত ১৩ ও আহত ৯৬। এপ্রিলে ২৭টি মবের ঘটনায় ১০ জন নিহত ও আহত ৫৩। আর মে মাসে মবের বিশৃঙ্খলার ঘটনা ৩৬টি এবং নিহত ৯, আহত ৬৮ জন।

এদিকে মব জাস্টিস এর নামে হামলার ঘটনায় নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও। সরকার এক বিবৃতিতে, মবে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিলেও থামছে না মব সন্ত্রাস।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর বলেন, ‘যারা মবের সঙ্গে জড়িত তাদের কিন্তু আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। ভবিষ্যতে এই ঘটনা আর ঘটুক এটি আমরা আর প্রত্যাশা করি না। যদি কেউ এমন ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করে তাহলে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’

এদিকে অপরাধ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পুলিশ সদস্যদের মাঝেই নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা কাটেনি এখনও। তাই পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণও করতে পারছে না বাহিনী। সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক এই বিষয়ে নিজের মতামত জানিয়ে বলেন, ‘এই পরিকল্পিত আক্রমণকে মব দিয়ে কাটিয়ে ওঠা যাবে না। বিবৃতির দেশ বাংলাদেশ না, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।’

এদিকে একাধিক মানবাধিকার সংস্থা মব সন্ত্রাসকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে বিবৃতি দিয়েছে। এর পাশাপাশি আইন ও সালিশ কেন্দ্রসহ অনেক সংগঠনই জানিয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই।