প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ১১, ২০২৫, ৯:৪২ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুলাই ৩, ২০২৫, ৫:০৬ পি.এম
পাঁচ মাসে ১৪১টি মব হামলায় নিহত ৫২

ঢাকা: দেশে ১৪১টি মব হামলার ঘটনা ঘটেছে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত। এই পাঁচ মাসে নিহত হয়েছেন ৫২ জন। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ২৮৯ জন। মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের পরিসংখ্যানে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
সম্প্রতি রাজধানীর উত্তরায় দিনে-দুপুরে মব (জনতার উচ্ছৃঙ্খলা) তৈরি করে চেষ্টা করা হয় আবাসিক হোটেল দখলের। মোটরসাইকেলে এসে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে দুর্বৃত্তরা। এর আগে গত মে মাসে, ধানমন্ডিতে স্বৈরাচার সরকারের দোসর রয়েছে দাবি করে একটি বাড়িতে ঢুকতে চায় একদল তরুণ। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এরপর ২২ জুন উত্তরায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদাকে জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছনার ঘটনায় আবারও সামনে আসে মবের দৌরাত্ম্য। মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিলেও নৈরাজ্য যেনো থামছেই না। এদিকে অপরাধ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পাঁচ আগস্টের পর বেশিরভাগ মব হামলার ঘটনাই ছিলো পরিকল্পিত। নিরাপত্তা শঙ্কায় নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হয় পুলিশের।
এদিকে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের এক তথ্য বলছে, সারাদেশে জানুয়ারি মাসে ২১টি মবের ঘটনায় ১২ জন নিহত ও ৩৮ জন আহত হয়েছেন। ফেব্রুয়ারিতে নিহত ৮ ও আহত ৩৪ জন। মার্চে ৩৯টি ঘটনায় উচ্ছৃঙ্খল জনতার হাতে নিহত ১৩ ও আহত ৯৬। এপ্রিলে ২৭টি মবের ঘটনায় ১০ জন নিহত ও আহত ৫৩। আর মে মাসে মবের বিশৃঙ্খলার ঘটনা ৩৬টি এবং নিহত ৯, আহত ৬৮ জন।
এদিকে মব জাস্টিস এর নামে হামলার ঘটনায় নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও। সরকার এক বিবৃতিতে, মবে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিলেও থামছে না মব সন্ত্রাস।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর বলেন, ‘যারা মবের সঙ্গে জড়িত তাদের কিন্তু আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। ভবিষ্যতে এই ঘটনা আর ঘটুক এটি আমরা আর প্রত্যাশা করি না। যদি কেউ এমন ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করে তাহলে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’
এদিকে অপরাধ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পুলিশ সদস্যদের মাঝেই নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা কাটেনি এখনও। তাই পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণও করতে পারছে না বাহিনী। সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক এই বিষয়ে নিজের মতামত জানিয়ে বলেন, ‘এই পরিকল্পিত আক্রমণকে মব দিয়ে কাটিয়ে ওঠা যাবে না। বিবৃতির দেশ বাংলাদেশ না, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।’
এদিকে একাধিক মানবাধিকার সংস্থা মব সন্ত্রাসকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে বিবৃতি দিয়েছে। এর পাশাপাশি আইন ও সালিশ কেন্দ্রসহ অনেক সংগঠনই জানিয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই।
Copyright © 2025 দৈনিক বার্তা. All rights reserved.