ঢাকা ০৭:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo শ্রীমঙ্গলে সাংবাদিকদের সাথে সংসদ সদস্য প্রার্থী হারুনুর রশিদের মতবিনিময় সভা Logo মোবাইল-ই কাল হলো নবম শ্রেণীর ছাত্রী জ্যামির, শিক্ষকের শাসন -অতঃপর বিষপানের মৃত্যু Logo রাজধানীর বাড্ডা ও শাহজাদপুরে ২ বাসে আগুন Logo রাজধানীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে একজন নিহত Logo চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ সার ব্যবসায়ীকে ১ মাসের কারাদণ্ড ও জরিমানা Logo মহাদেবপুরে আদালতের আদেশ অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা Logo দুর্গাপুরে ‎রাজশাহী-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন  Logo শীতের গন্ধ, তাপমাত্রা কমছে প্রতিদিন দুই ডিগ্রি ঈশ্বরদীতে দোকানে উঠছে শীতের সোয়েটার-জ্যাকেট, কম্বল Logo পদ্মার চরজুড়ে চলছে ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’ Logo নীলফামারীতে চার দফা দাবী বাস্তবায়নে বিসিএস প্রভাষক পরিষদের মানবন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন

এ দেশের মানুষ পিআর বোঝে না, মেনেও নেবে না: মির্জা ফখরুল*

বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি এ দেশের মানুষ বোঝে না। একটি রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতির কথা বলছে। সেটার জন্য আন্দোলন করছে। এর মূল লক্ষ্য হলো, নির্বাচন বিলম্বিত করা। জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা। পিআর পদ্ধতি এই দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না। চাপিয়ে দেওয়া কোনো কিছুই এই দেশের মানুষ মেনে নেবে না।

গতকাল দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল আলম মিলনায়তনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) আয়োজিত এক স্মরণসভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। ডেমোক্রেটিক লীগের (ডিএল) প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মণির দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা ইতিহাসের এক ক্রান্তিকাল পার করছি। গত ১৫ বছর একটি ফ্যাসিস্ট দল বাংলাদেশের গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও আত্মাকে ধ্বংস করেছে। সেই দলের বিরুদ্ধে লড়াই শেষে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা সুযোগ পেয়েছি বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার।’

বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, তাঁরা সব সময় সংস্কারের পক্ষে। অথচ প্রচারণা চালানো হচ্ছে যে বিএনপি নাকি সংস্কারের বিরোধী। এটা একেবারেই ভুল ধারণা। বিএনপির জন্মই হয়েছে সংস্কারের মধ্য দিয়ে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতাও তিনি নিশ্চিত করেছিলেন।

একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচন বিলম্বিত করার উদ্দেশ্যে পিআর সামনে এনেছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, এই পদ্ধতি সম্পর্কে জনগণের কোনো ধারণাই নেই। যাঁরা সংসদ সদস্য হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যেও কেউ এটা ভালোভাবে বোঝেন না। যাঁরা সংস্কার কমিশনে আছেন, তাঁরাও এটি প্রস্তাব করেননি। একটি রাজনৈতিক দল শুধু নির্বাচন বিলম্বিত করার উদ্দেশ্যেই এটি সামনে এনেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটা কথা খুব স্পষ্ট, সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যেই নির্বাচন হবে। আমরা সেটাই দেখতে চাই। জনগণও চায়, দ্রুত নির্বাচন হোক এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাক দেশ। রাতারাতি বাংলাদেশকে বদলে ফেলা সম্ভব নয়। কিন্তু প্রক্রিয়াটি শুরু হোক, এটাই জনগণের প্রত্যাশা।’

এখন সবার দায়িত্ব, বাংলাদেশকে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে রূপান্তর করা বলে উল্লেখ করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘কিছু মানুষ আমাদের ১৯৭১ সালের ইতিহাস ভুলিয়ে দিতে চায়। কিন্তু মনে রাখতে হবে, একাত্তরের যুদ্ধের কারণেই আমরা স্বাধীন হয়েছি। আর স্বাধীন হয়েছি বলেই আজ নতুন রাষ্ট্র ও নতুন চিন্তার কথা ভাবতে পারছি। আমাদের মধ্যে অনেকে আছেন, যাঁরা পরবর্তীকালে গণতান্ত্রিক আন্দোলনগুলোতে অংশ নিয়েছেন। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানেও অংশ নিয়েছেন। এখন আমাদের দায়িত্ব, এই বাংলাদেশকে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে রূপান্তর করা।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

শ্রীমঙ্গলে সাংবাদিকদের সাথে সংসদ সদস্য প্রার্থী হারুনুর রশিদের মতবিনিময় সভা

এ দেশের মানুষ পিআর বোঝে না, মেনেও নেবে না: মির্জা ফখরুল*

Update Time : ১০:৪৮:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫

বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি এ দেশের মানুষ বোঝে না। একটি রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতির কথা বলছে। সেটার জন্য আন্দোলন করছে। এর মূল লক্ষ্য হলো, নির্বাচন বিলম্বিত করা। জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা। পিআর পদ্ধতি এই দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না। চাপিয়ে দেওয়া কোনো কিছুই এই দেশের মানুষ মেনে নেবে না।

গতকাল দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল আলম মিলনায়তনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) আয়োজিত এক স্মরণসভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। ডেমোক্রেটিক লীগের (ডিএল) প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মণির দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা ইতিহাসের এক ক্রান্তিকাল পার করছি। গত ১৫ বছর একটি ফ্যাসিস্ট দল বাংলাদেশের গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও আত্মাকে ধ্বংস করেছে। সেই দলের বিরুদ্ধে লড়াই শেষে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা সুযোগ পেয়েছি বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার।’

বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, তাঁরা সব সময় সংস্কারের পক্ষে। অথচ প্রচারণা চালানো হচ্ছে যে বিএনপি নাকি সংস্কারের বিরোধী। এটা একেবারেই ভুল ধারণা। বিএনপির জন্মই হয়েছে সংস্কারের মধ্য দিয়ে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একদলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতাও তিনি নিশ্চিত করেছিলেন।

একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচন বিলম্বিত করার উদ্দেশ্যে পিআর সামনে এনেছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, এই পদ্ধতি সম্পর্কে জনগণের কোনো ধারণাই নেই। যাঁরা সংসদ সদস্য হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যেও কেউ এটা ভালোভাবে বোঝেন না। যাঁরা সংস্কার কমিশনে আছেন, তাঁরাও এটি প্রস্তাব করেননি। একটি রাজনৈতিক দল শুধু নির্বাচন বিলম্বিত করার উদ্দেশ্যেই এটি সামনে এনেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটা কথা খুব স্পষ্ট, সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যেই নির্বাচন হবে। আমরা সেটাই দেখতে চাই। জনগণও চায়, দ্রুত নির্বাচন হোক এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাক দেশ। রাতারাতি বাংলাদেশকে বদলে ফেলা সম্ভব নয়। কিন্তু প্রক্রিয়াটি শুরু হোক, এটাই জনগণের প্রত্যাশা।’

এখন সবার দায়িত্ব, বাংলাদেশকে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে রূপান্তর করা বলে উল্লেখ করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘কিছু মানুষ আমাদের ১৯৭১ সালের ইতিহাস ভুলিয়ে দিতে চায়। কিন্তু মনে রাখতে হবে, একাত্তরের যুদ্ধের কারণেই আমরা স্বাধীন হয়েছি। আর স্বাধীন হয়েছি বলেই আজ নতুন রাষ্ট্র ও নতুন চিন্তার কথা ভাবতে পারছি। আমাদের মধ্যে অনেকে আছেন, যাঁরা পরবর্তীকালে গণতান্ত্রিক আন্দোলনগুলোতে অংশ নিয়েছেন। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানেও অংশ নিয়েছেন। এখন আমাদের দায়িত্ব, এই বাংলাদেশকে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে রূপান্তর করা।’