
ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে বলু খেকোরা। ইউ এন ও তাঁর দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছেন।
তিনি তার আত্মপক্ষ সমর্থন করে বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন।ঈশ্বরদীতে পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে জাকারিয়া পিন্টু ও তার ভাই মেহেদী। এরাই ভাড়াটে লোকদের দিয়ে ইউ এন ও’র বিরুদ্ধে মানবন্ধন করেছে। ইউএনও মনিরুজ্জামান বিষয়টি নিয়ে যে ব্যাখা দিলেন তা হুবুহু তুলে ধরলাম –
প্রিয় ঈশ্বরদীবাসী,
আসসালামু আলাইকুম। খুবই দু:খের সাথে বলতে হচ্ছে আমি এখানে যোগদান করে কাজ শুরু করার আগেই আজ ঈশ্বরদী উপজেলায় আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করা হল। মানববন্ধনের বিষয় ছিল আমার স্বেচ্ছাচারী আচরণ ও গণ অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র জনতার সাথে দুর্ব্যবহার যা একেবারে ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কেউ স্পেসিফিক করে আমার কাছে জুলাই যোদ্ধা পরিচয় দিয়ে দেখা করেনি বা কোন সেবা প্রার্থনা করেনি। দ্বিতীয়ত, আমার কাছে সেবা গ্রহণ করতে আসলে আমি কারও সাথে দুর্ব্যবহার করেছি বলে কেউ দাবি করতে পারবে না। করে থাকলে তার কথা সুস্পষ্ট শুনতে চাই। আর একটা বিষয় হল আপনারা জানেন যে, গত ০৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস ছিল। এই উপলক্ষে শিক্ষকদের নিয়ে র্যালি ও পরবর্তিতে আলোচনা সভা ছিল। শিক্ষক দিবসে সকল শিক্ষকদের ইনভাইটেশন সহ পরিচালনার দায়িত্বে ছিল শিক্ষা অফিস। একাডেমিক সুপারভাইজার এর পরিচালনায় বিশ্ব শিক্ষক দিবসের আলোচনা সভার এই প্রোগ্রাম কে গুপ্ত মিটিং বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হয়েছে এবং মানববন্ধনে উল্লেখ করা হয়েছে।
মূল বিষয় হল, আমি ঈশ্বরদী উপজেলায় যোগদান করার ৩-৪ দিন পরে নৌপুলিশ মারফত জানতে পারি ইসলামপুর ঘাট ও সাড়া ঘাটে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, আমাদের এই উপজেলায় সরকার ঘোষিত কোন বালুমহাল নেই। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাতক্ষণিকভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ২ দিনে মোট ১১ টি মামলায় ১১ জনকে ১(এক) মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়। যার ফলে ঈশ্বরদীর উপজেলায় অবৈধভাবে বালু তোলা বন্ধ হয়ে যায় এবং মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীর কেউ কেউ অসন্তুষ্ট হয়। দ্বিতীয়ত, সাড়াঘাটে রানাখড়িয়া তরিয়া মহল ঘাটের ইজারা গ্রহীতা নিজে কার্যক্রম না করে মানববন্ধনকারীদের কারও কারও কাছে সম্ভবত সাবলিজ প্রদান করে যা আইনসংগত নয়। সাবলীজ বা মানববন্ধনের এই কিছু অংশগ্রহণকারী ঘাটের ইজারার কাগজ নিয়ে পুরো নদীর মধ্যে প্রবাহিত হওয়া নৌকা থেকে ২০০০-৩০০০ করে টাকা আদায় শুরু করে, যা সঠিক নয়। আমি স্পষ্টভাবে জানিয়ে রাখি, ঘাট ইজারার শর্তানুযায়ী, ঘাটে কোন নৌকা পণ্য লোড- আনলোড করলে বা মানুষ পারাবার করলে প্রকৃত ইজারাদার ঘাট থেকে সরকারি নির্ধারিত ফি হারে টোল আদায় করবে। নদী পথ ব্যবহার করে কেউ যাতায়াত করলে সেক্ষেত্রে তাদের কাছ থেকে টোল আদায়ের সুযোগ নেই। আমি এই বিষয়টা ইজারাদার, নৌপুলিশ ও থানার অফিসার ইনচার্জকে জানালে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলে কিছু ব্যক্তি অসন্তুষ্ট হয় এবং তারা আমার বিপক্ষে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য উল্লেখ করে অপপ্রচার ও মানববন্ধন করে। আমি এই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য উল্লেখপূর্বক মানববন্ধনের তীব্র নিন্দা জানাই বিবেকের তাগিদে সত্যগুলি তুলে ধরলাম। সদাশয় সরকার আমাকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে এই উপজেলার আইনশৃংখলা রক্ষা, উন্নয়ন কার্যক্রম ও উপজেলার সকল মানুষকে আইন ও বিধির আলোকে সেবা প্রদানের জন্য দায়িত্ব অর্পন করেছেন। আমি সততা ও নৈতিকতার সাথে অর্পিত দায়িত্ব পালন করা চেষ্টা করছি এবং আপনাকে সহযোগিতা পেলে এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। ধন্যবাদ ঈশ্বরদীর সকল নাকরিক কে।
-মনিরুজ্জামান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ঈশ্বরদী, পাবনা।
নিজস্ব প্রতিবেদক,পাবনা 


















