ঢাকা ০৩:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo স্কয়ার ফার্মারর বিরুদ্ধে ডোজ প্রতারণা ও রিপ্যাকিংয়ের অভিযোগে প্রেস কনফারেন্স শনিবার Logo ৫৭ বছরেও শেবাচিমে চালু হয়নি নিউরো ওয়ার্ড, স্ট্রোকের রোগীদের চরম ভোগান্তি Logo সৈয়দপুরে আর্মি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান দিবস পালিত Logo তানোরে নতুন ধানের জাত ব্রি ধান ১০৩ এর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত Logo প্রিপেইড মিটার স্থাপন বন্ধ ও মামলা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে মৌন মিছিল ও স্মারকলিপি হস্তান্তর Logo সৈয়দপুরে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার Logo শ্রীমঙ্গলে সাংবাদিকদের সাথে সংসদ সদস্য প্রার্থী হারুনুর রশিদের মতবিনিময় সভা Logo মোবাইল-ই কাল হলো নবম শ্রেণীর ছাত্রী জ্যামির, শিক্ষকের শাসন -অতঃপর বিষপানের মৃত্যু Logo রাজধানীর বাড্ডা ও শাহজাদপুরে ২ বাসে আগুন Logo রাজধানীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে একজন নিহত

সৈয়দপুর রেলকারখানায় স্প্রিংয়ের সংকট,  মেরামত করা যাচ্ছে না ট্রেনের কোচ

দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেল কারখানার ইয়ার্ডে প্রায় তিন মাস ধরে পড়ে আছে ট্রেনের ৩ টি কোচ। স্প্রিং সংকটের কারণে কোচগুলো মেরামত করা হচ্ছে না। দুই কোটি টাকা ব্যয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা ওই কোচগুলো খোলা আকাশের নিচে পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
কারখানা সুত্রে জানা গেছে, আমদানি নির্ভর হওয়ায়  দরপত্রে জটিলতায় এ রেলকারখানায় স্প্রিংয়ের অভাব দেখা দিয়েছে। যার ফলে শুধু ওই তিনটি কোচই নয় মেরামতযোগ্য অন্যান্য কোচগুলোও সময়মতো মেরামত করা যাচ্ছে না। এতে কারখানায় ক্যারেজ মেরামতের প্রতিদিনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হচ্ছে না। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন পড়ে কোচ গুলো দ্রুত সংস্কার করার চেষ্টা চলছে।
সূত্রটি আরো জানায়, ২০০৬ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ে  ইন্দোনেশিয়া  ব্রডগেজ লাইনের ৫০টি কোচ আমদানি করে। এগুলোর মধ্যে ছিল ওই তিনটি কোচ। কোচ ৩ টি  চিলাহাটি ও রাজশাহী পথে চলাচলরত বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ট্রেনে যুক্ত করা হয়। যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায়  কোচগুলো খুলে মেরামতের জন্য সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় পাঠানো হয় প্রায় ৩ মাস আগে। সেগুলো বর্তমানে কারখানায় ইয়ার্ডে পড়ে আছে। স্প্রিং না থাকায় মেরামত করা যাচ্ছে না। এদিকে ওই ৩টি কোচ খুলে রাখায় বরেন্দ্র ট্রেনটির ১০ টি কোচের পরিবর্তে মাত্র ৬ টি কোচ নিয়ে চলাচল করছে। এতে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
গতকাল সোমবার কারখানায় গিয়ে দেখা গেছে, কোচ ৩ টি  ক্যারেজ সপের ইয়ার্ডে পড়ে আছে। এগুলোতে মরিচা ধরে গেছে। আশপাশে আগাছা গজিয়েছে। কোচগুলোর ভেতরের অবস্থাও নাজুক।
রেলওয়ে কারখানার বগি সপের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী শাহিনুর আলম শাহ  জানান ট্রেনের বগিগুলো স্থাপন করা থাকে ট্রলির ওপর। এই ট্রলি স্থাপন করা হয় চাকার ফ্রেমে। এর মাঝে থাকে স্প্রিং এবং সূক্ষ্ম কিছু যন্ত্রাংশ। চারটি স্প্রিং পুরো কোচের ওজন বহন করে। চলাচল করলে বল বিয়ারিং, স্প্রিং ও চাকা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে আগুনেরও সূত্রপাত হয়। একারনে এগুলো নিয়মিত সার্ভিসিং করতে হয়। নিয়ম অনুযায়ী প্রতি ৫ বছর পরপর স্প্রিং পরিবর্তন করতে হয়। বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ট্রেনের খুলে রাখা ওই কোচগুলোর স্প্রিংগুলো পুরোটায় নস্ট হয়ে গেছে। রেলওয়ের কোচের এসব  স্প্রিং আমদানি নির্ভর।  কিন্তু দরপত্রে জটিলতায় রেলকারখানায় স্প্রিংয়ের অভাব দেখা দিয়েছে। এই কারণে কোচগুলো মেরামত করা যাচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ে কারখানার  প্রকৌশল বিভাগের এক কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, ইন্দোনেশিয়া থেকে আনা বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ট্রেনের খুলে রাখা ওই কোচগুলোর আমাদানির পর থেকেই  স্প্রিং পরিবর্তন করা হয়নি। এতদিন  স্প্রিংয়ের নিচে প্লেট ঢুকিয়ে প্যাকিং দিয়ে উচ্চতা বাড়ানো হতো। কিন্তু অল্প দিনের মধ্যেই প্যাকিং খুলে যাচ্ছে। কোচগুলো ভার বহন করতে পারছে না। এতে ট্রেনে অতিরিক্ত ঝাঁকুনি হচ্ছে। ওই কর্মকর্তার  মতে, পুরোনো স্প্রিং ও চাকা পরিবর্তন না করে এভাবে চালানো হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এ নিয়ে কথা হয় সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) শাহ সুফী নুর মোহাম্মদের সাথে।  তিনি স্প্রিং সংকটের কারণে উৎপাদন ব্যহত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন,  এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। সমস্যা সমাধানের চেস্টা চলছে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

স্কয়ার ফার্মারর বিরুদ্ধে ডোজ প্রতারণা ও রিপ্যাকিংয়ের অভিযোগে প্রেস কনফারেন্স শনিবার

সৈয়দপুর রেলকারখানায় স্প্রিংয়ের সংকট,  মেরামত করা যাচ্ছে না ট্রেনের কোচ

Update Time : ০৬:৪৯:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেল কারখানার ইয়ার্ডে প্রায় তিন মাস ধরে পড়ে আছে ট্রেনের ৩ টি কোচ। স্প্রিং সংকটের কারণে কোচগুলো মেরামত করা হচ্ছে না। দুই কোটি টাকা ব্যয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা ওই কোচগুলো খোলা আকাশের নিচে পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
কারখানা সুত্রে জানা গেছে, আমদানি নির্ভর হওয়ায়  দরপত্রে জটিলতায় এ রেলকারখানায় স্প্রিংয়ের অভাব দেখা দিয়েছে। যার ফলে শুধু ওই তিনটি কোচই নয় মেরামতযোগ্য অন্যান্য কোচগুলোও সময়মতো মেরামত করা যাচ্ছে না। এতে কারখানায় ক্যারেজ মেরামতের প্রতিদিনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হচ্ছে না। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন পড়ে কোচ গুলো দ্রুত সংস্কার করার চেষ্টা চলছে।
সূত্রটি আরো জানায়, ২০০৬ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ে  ইন্দোনেশিয়া  ব্রডগেজ লাইনের ৫০টি কোচ আমদানি করে। এগুলোর মধ্যে ছিল ওই তিনটি কোচ। কোচ ৩ টি  চিলাহাটি ও রাজশাহী পথে চলাচলরত বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ট্রেনে যুক্ত করা হয়। যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায়  কোচগুলো খুলে মেরামতের জন্য সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় পাঠানো হয় প্রায় ৩ মাস আগে। সেগুলো বর্তমানে কারখানায় ইয়ার্ডে পড়ে আছে। স্প্রিং না থাকায় মেরামত করা যাচ্ছে না। এদিকে ওই ৩টি কোচ খুলে রাখায় বরেন্দ্র ট্রেনটির ১০ টি কোচের পরিবর্তে মাত্র ৬ টি কোচ নিয়ে চলাচল করছে। এতে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
গতকাল সোমবার কারখানায় গিয়ে দেখা গেছে, কোচ ৩ টি  ক্যারেজ সপের ইয়ার্ডে পড়ে আছে। এগুলোতে মরিচা ধরে গেছে। আশপাশে আগাছা গজিয়েছে। কোচগুলোর ভেতরের অবস্থাও নাজুক।
রেলওয়ে কারখানার বগি সপের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী শাহিনুর আলম শাহ  জানান ট্রেনের বগিগুলো স্থাপন করা থাকে ট্রলির ওপর। এই ট্রলি স্থাপন করা হয় চাকার ফ্রেমে। এর মাঝে থাকে স্প্রিং এবং সূক্ষ্ম কিছু যন্ত্রাংশ। চারটি স্প্রিং পুরো কোচের ওজন বহন করে। চলাচল করলে বল বিয়ারিং, স্প্রিং ও চাকা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে আগুনেরও সূত্রপাত হয়। একারনে এগুলো নিয়মিত সার্ভিসিং করতে হয়। নিয়ম অনুযায়ী প্রতি ৫ বছর পরপর স্প্রিং পরিবর্তন করতে হয়। বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ট্রেনের খুলে রাখা ওই কোচগুলোর স্প্রিংগুলো পুরোটায় নস্ট হয়ে গেছে। রেলওয়ের কোচের এসব  স্প্রিং আমদানি নির্ভর।  কিন্তু দরপত্রে জটিলতায় রেলকারখানায় স্প্রিংয়ের অভাব দেখা দিয়েছে। এই কারণে কোচগুলো মেরামত করা যাচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ে কারখানার  প্রকৌশল বিভাগের এক কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, ইন্দোনেশিয়া থেকে আনা বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ট্রেনের খুলে রাখা ওই কোচগুলোর আমাদানির পর থেকেই  স্প্রিং পরিবর্তন করা হয়নি। এতদিন  স্প্রিংয়ের নিচে প্লেট ঢুকিয়ে প্যাকিং দিয়ে উচ্চতা বাড়ানো হতো। কিন্তু অল্প দিনের মধ্যেই প্যাকিং খুলে যাচ্ছে। কোচগুলো ভার বহন করতে পারছে না। এতে ট্রেনে অতিরিক্ত ঝাঁকুনি হচ্ছে। ওই কর্মকর্তার  মতে, পুরোনো স্প্রিং ও চাকা পরিবর্তন না করে এভাবে চালানো হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এ নিয়ে কথা হয় সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) শাহ সুফী নুর মোহাম্মদের সাথে।  তিনি স্প্রিং সংকটের কারণে উৎপাদন ব্যহত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন,  এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। সমস্যা সমাধানের চেস্টা চলছে।