
নিজ প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীর সাথে প্রেমের নামে একাধিক বার দৈহিক সম্পর্ক স্থাপনের পরে অবশেষে মামলা ও চাকুরী অপসারণের হাত থেকে বাঁচতে সেই ছাত্রীকে তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করলেন নওগাঁর মান্দা উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও যুবলীগ নেতা আকরাম হোসেন।
আজ বুধবার (২৬ মার্চ) ওই প্রতিষ্ঠানের এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী দোলা আক্তার (১৬) কে বিয়ে করে তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে তাকে ঘরে তোলেন। এ ঘটনাটি জনসম্মুখে প্রকাশ হয়ে পড়ায় এলাকাজুড়ে ব্যাপক তোলপাড়া শুরু হয়েছে ।
প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন হাজীগোবিন্দপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আফছার আলী মণ্ডলের ছেলে। অভিযোগে উঠেছে বাবা মুক্তিযোদ্ধা এবং ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হওয়ায় সবধরণের অপরাধ করেও বারবার পার পেয়ে যান তিনি।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন এর আগেও একই প্রতিষ্ঠানের নবম শ্রেণি পড়ুয়া শিক্ষার্থী রিনা আক্তার পুতুল (১৫) কে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সেই সময় দ্বিতীয় স্ত্রী পুতুলকে নিয়ে ব্যাপক প্রেমের গুঞ্জনর উঠেছিল প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেনের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এলাকাবাসি ফুঁসে উঠেন। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ও চাকরি বাঁচাতে সেই সময় ছাত্রী পুতুলকে দ্বিতীয় বিয়ে করে সে যাত্রায় রক্ষা পান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষক জানান, দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেনের সাথো শিক্ষার্থী দোলা আক্তারকে নিয়ে প্রেমের গুঞ্জনর শোনা যাচ্ছিল। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানে একাধিক বৈঠকও হয়। বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে সংবাদও প্রকাশ হয়েছিল। কিন্তু প্রধান শিক্ষক আকরাম এসবের তোয়াক্কা না করে ওই ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক চালিয়ে যান। প্রধান শিক্ষকের এসব আচরনের কারণে বিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন হওয়াসহ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমতে শুরু করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেনের বাবা মুক্তিযোদ্ধা আফছার আলী মণ্ডল এই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি। এ কারণে বাবার প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড করেও তিনি বারবার পার পেয়ে যান। একাধিক ছাত্রী কেলেঙ্কারীর ঘটনা ঘটালেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। প্রধান শিক্ষকের চরিত্রগত সমস্যায় ছাত্রীদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন অভিভাবকেরা।
স্থানীয়রা বলেন, গতকাল মঙ্গলবার সকালে ছাত্রী দোলাকে প্রধান শিক্ষক আকরামের প্রথম স্ত্রী স্বপ্না খাতুনের বাসায় তুলে দেন তার অভিভাবকেরা। এর পর থেকে দোলা সেখানেই অবস্থান করছিলেন। আর কোন উপায় না থাকায় এরকম বাধ্য হয়ে আজ বুধবার তাকে সামাজিকভাবে বিয়ে করেন আকরাম হোসেন।
ছাত্রীকে তৃতীয় বিয়ে করা বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন বলেন, ছাত্রী দোলাকে আমি সামাজিকভাবে বিয়ে করেছি। তাকে অনেক আগেই বিয়ে করতাম। কিস্তু বয়স সমস্যার কারণে করিনি। আমি একাধিক বিয়ে করতেই পারি। এখানে কারো কিছুই আসে যায় না।
মান্দা (নওগাঁ) প্রতিবেদক 


















