ঢাকা ১০:৫৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo তানোর-গোদাগাড়ীতে প্রার্থী ঘোষণায় সরগরম বিএনপির তৃণমূল Logo বিএনপিতে ফেরায় সংবর্ধিত হলেন কমেট চৌধুরী Logo ঈশ্বরদীতে ক্ষুধায় বাবা মায়ের কবরের কাছে গিয়ে খাবার চাওয়া সাগরের দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান Logo জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ১৮ প্রকল্প অনুমোদন Logo দেড় হাজার কোটি টাকার প্রকল্প  গ্যাস পাওয়ার অপেক্ষা ফুরাচ্ছে না দুই বছরেও Logo আটঘরিয়া জ্যামীর আত্মহত্যাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ মিছিল, প্রশাসনে স্মারকলিপি প্রদান Logo দৈনিক বার্তার অনলাইন ও মাল্টিমিডিয়ার প্রকাশনার সফলতা কামনা করলেন রোকেয়া রাজ্জাক জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন’-এর প্রতিষ্ঠাতা সিদ্দিকুর রহমান হাওলাদার Logo পাবনা-৩ আসনে বিএনপির জনসমুদ্রে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবী Logo স্কয়ার ফার্মারর বিরুদ্ধে ডোজ প্রতারণা ও রিপ্যাকিংয়ের অভিযোগে প্রেস কনফারেন্স শনিবার Logo ৫৭ বছরেও শেবাচিমে চালু হয়নি নিউরো ওয়ার্ড, স্ট্রোকের রোগীদের চরম ভোগান্তি

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ  কেন্দ্র আন্তর্জাতিক মানের কাছাকাছি পৌঁছেছে: আইএইএ এর বিশেষজ্ঞ দল

পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুরে নির্মাণাধীন দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র  পরিচালনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান অর্জনের পথে রয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)।
বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) পরিদর্শন শেষে সংস্থাটির বিশেষজ্ঞ দল জানায়, কেন্দ্রটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়ালেও, আগুন প্রতিরোধ ব্যবস্থা এবং তত্ত্বাবধানে আরও উন্নতির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আইএইএ-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১০ থেকে ২৭ আগস্ট পর্যন্ত ‘প্রাক-পরিচালনা নিরাপত্তা পর্যালোচনা মিশন’ পরিচালনা করে বিশেষজ্ঞ দলটি। সরকারের অনুরোধে আয়োজিত এই মিশনের লক্ষ্য ছিল রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে বাণিজ্যিক উৎপাদনের আগে এর পরিচালন নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করা।

বিশেষজ্ঞরা কেন্দ্রটির কর্মকর্তাদের পেশাগত দক্ষতা ও নিরাপত্তার প্রতি প্রতিশ্রুতিকে ইতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করেছেন। তারা জানান, সিমুলেটরের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ এবং ফুয়েল রিফুয়েলিং মেশিন পরিচালনায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার আন্তর্জাতিক মানের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।

আইএইএ-এর সিনিয়র নিউক্লিয়ার সেফটি অফিসার সাইমন মরগ্যান বলেন, “কমিশনিং থেকে পরিচালনায় উত্তরণের সময়ই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। রূপপুর কেন্দ্র এই রূপান্তর নিরাপদে সম্পন্ন করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

তবে, নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে দলটি বেশ কিছু সুপারিশ দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি হ্রাসে প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করা, সার্বিক তত্ত্বাবধান ও ব্যবস্থাপনার মানোন্নয়ন, বিভিন্ন যন্ত্রপাতির সংরক্ষণ প্রক্রিয়া আরও শক্তিশালী করা।

রূপপুর প্রকল্পের পরিচালক মো. কবির হোসেন জানান, ‘বাংলাদেশ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চায়। আইএইএ’র এই পর্যালোচনা আমাদের দুর্বলতা চিহ্নিত করে নিরাপত্তা সংস্কৃতি গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।’

পরিদর্শন শেষে ২৭ আগস্ট এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আনোয়ার হোসেন, পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মো. মজিবুর রহমান, প্রকল্প পরিচালক ড. মো. কবির হোসেন, নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানির এমডি ড. জায়েদুল হাসান, রাশিয়ার এতমস্ত্রয় এক্সপোর্ট ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিশেষজ্ঞ দলটি তাদের মূল্যায়নের একটি খসড়া প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, যা চূড়ান্ত করে আগামী তিন মাসের মধ্যে বাংলাদেশকে প্রদান করা হবে।

প্রসঙ্গত, রাশিয়ার কারিগরি ও অর্থায়নে ১২.৬৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে রূপপুরে ভিভিইআর-১২০০ প্রযুক্তির দুটি চুল্লি নির্মিত হচ্ছে। প্রথম ইউনিট হস্তান্তরের সময় নির্ধারিত হয়েছে ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর, এবং দ্বিতীয় ইউনিটের জন্য ২০২৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

তানোর-গোদাগাড়ীতে প্রার্থী ঘোষণায় সরগরম বিএনপির তৃণমূল

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ  কেন্দ্র আন্তর্জাতিক মানের কাছাকাছি পৌঁছেছে: আইএইএ এর বিশেষজ্ঞ দল

Update Time : ০৭:০৪:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫

পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুরে নির্মাণাধীন দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র  পরিচালনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান অর্জনের পথে রয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)।
বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) পরিদর্শন শেষে সংস্থাটির বিশেষজ্ঞ দল জানায়, কেন্দ্রটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়ালেও, আগুন প্রতিরোধ ব্যবস্থা এবং তত্ত্বাবধানে আরও উন্নতির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আইএইএ-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১০ থেকে ২৭ আগস্ট পর্যন্ত ‘প্রাক-পরিচালনা নিরাপত্তা পর্যালোচনা মিশন’ পরিচালনা করে বিশেষজ্ঞ দলটি। সরকারের অনুরোধে আয়োজিত এই মিশনের লক্ষ্য ছিল রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে বাণিজ্যিক উৎপাদনের আগে এর পরিচালন নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করা।

বিশেষজ্ঞরা কেন্দ্রটির কর্মকর্তাদের পেশাগত দক্ষতা ও নিরাপত্তার প্রতি প্রতিশ্রুতিকে ইতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করেছেন। তারা জানান, সিমুলেটরের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ এবং ফুয়েল রিফুয়েলিং মেশিন পরিচালনায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার আন্তর্জাতিক মানের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।

আইএইএ-এর সিনিয়র নিউক্লিয়ার সেফটি অফিসার সাইমন মরগ্যান বলেন, “কমিশনিং থেকে পরিচালনায় উত্তরণের সময়ই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। রূপপুর কেন্দ্র এই রূপান্তর নিরাপদে সম্পন্ন করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

তবে, নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে দলটি বেশ কিছু সুপারিশ দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি হ্রাসে প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করা, সার্বিক তত্ত্বাবধান ও ব্যবস্থাপনার মানোন্নয়ন, বিভিন্ন যন্ত্রপাতির সংরক্ষণ প্রক্রিয়া আরও শক্তিশালী করা।

রূপপুর প্রকল্পের পরিচালক মো. কবির হোসেন জানান, ‘বাংলাদেশ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চায়। আইএইএ’র এই পর্যালোচনা আমাদের দুর্বলতা চিহ্নিত করে নিরাপত্তা সংস্কৃতি গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।’

পরিদর্শন শেষে ২৭ আগস্ট এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আনোয়ার হোসেন, পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মো. মজিবুর রহমান, প্রকল্প পরিচালক ড. মো. কবির হোসেন, নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানির এমডি ড. জায়েদুল হাসান, রাশিয়ার এতমস্ত্রয় এক্সপোর্ট ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিশেষজ্ঞ দলটি তাদের মূল্যায়নের একটি খসড়া প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, যা চূড়ান্ত করে আগামী তিন মাসের মধ্যে বাংলাদেশকে প্রদান করা হবে।

প্রসঙ্গত, রাশিয়ার কারিগরি ও অর্থায়নে ১২.৬৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে রূপপুরে ভিভিইআর-১২০০ প্রযুক্তির দুটি চুল্লি নির্মিত হচ্ছে। প্রথম ইউনিট হস্তান্তরের সময় নির্ধারিত হয়েছে ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর, এবং দ্বিতীয় ইউনিটের জন্য ২০২৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর।