ঢাকা ০৩:৪৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo তানোর-গোদাগাড়ীতে প্রার্থী ঘোষণায় সরগরম বিএনপির তৃণমূল Logo বিএনপিতে ফেরায় সংবর্ধিত হলেন কমেট চৌধুরী Logo ঈশ্বরদীতে ক্ষুধায় বাবা মায়ের কবরের কাছে গিয়ে খাবার চাওয়া সাগরের দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান Logo জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ১৮ প্রকল্প অনুমোদন Logo দেড় হাজার কোটি টাকার প্রকল্প  গ্যাস পাওয়ার অপেক্ষা ফুরাচ্ছে না দুই বছরেও Logo আটঘরিয়া জ্যামীর আত্মহত্যাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ মিছিল, প্রশাসনে স্মারকলিপি প্রদান Logo দৈনিক বার্তার অনলাইন ও মাল্টিমিডিয়ার প্রকাশনার সফলতা কামনা করলেন রোকেয়া রাজ্জাক জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন’-এর প্রতিষ্ঠাতা সিদ্দিকুর রহমান হাওলাদার Logo পাবনা-৩ আসনে বিএনপির জনসমুদ্রে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবী Logo স্কয়ার ফার্মারর বিরুদ্ধে ডোজ প্রতারণা ও রিপ্যাকিংয়ের অভিযোগে প্রেস কনফারেন্স শনিবার Logo ৫৭ বছরেও শেবাচিমে চালু হয়নি নিউরো ওয়ার্ড, স্ট্রোকের রোগীদের চরম ভোগান্তি
জবানবন্দিতে ইমরান

হাসপাতালে ‘নো ট্রিটমেন্ট নো রিলিজ’ নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় আসামি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে জবানবন্দি দিয়েছেন শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ইমরান।

সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ মামলার দ্বিতীয় সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন তিনি।

জবানবন্দিতে আবদুল্লাহ আল ইমরান বলেন, রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (পঙ্গু হাসপাতাল) পরিদর্শনে গিয়ে শেখ হাসিনা ‘নো ট্রিটমেন্ট নো রিলিজ’ নির্দেশ দিয়েছিলেন।

জবানবন্দিতে শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ইমরান বলেন, গত বছরের ১৯ জুলাই রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংক এলাকায় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। তার বাঁ হাঁটুর নিচে গুলি লাগে।

আবদুল্লাহ আল ইমরান বলেন, রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুর্নবাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতাল) তার চিকিৎসা চলছিল। গত বছরের ২৬ অথবা ২৭ জুলাই সকাল ৯টা-১০টার দিকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পঙ্গু হাসপাতাল পরিদর্শনে যান। একপর্যায়ে শেখ হাসিনা তার কাছে যান। শেখ হাসিনাকে তিনি ‘ম্যাডাম’ বলে সম্বোধন করেন। শেখ হাসিনা তাকে ‘আপা’ বলে ডাকতে বলেন।

আবদুল্লাহ আল ইমরান আরও বলেন, তিনি কোথায় পড়াশোনা করেন, হলে থাকেন কি না, কেন থাকেন না, সে সম্পর্কে শেখ হাসিনা জানতে চান।

তিনি বলেন, ‘একপর্যায়ে শেখ হাসিনা বুঝতে পারেন, আমি আন্দোলনকারী। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, পুলিশ তোমাকে গুলি করেছে? আমি বলি, পুলিশ আমাকে সরাসরি গুলি করে। পুলিশের পোশাকে কারা ছিল, সেটা আমি জানি না। আমার পর আরও চার থেকে পাঁচজনের সঙ্গে তিনি কথা বলেন। পরে শেখ হাসিনা যখন চলে যাচ্ছিলেন, তখন হেল্পডেস্কের কাছে গিয়ে “নো ট্রিটমেন্ট নো রিলিজ” অর্ডার দিয়ে যান, যা আমি শুনতে পাই।’

তবে ‘নো ট্রিটমেন্ট নো রিলিজ’ মানে কী, তখন বুঝতে পারেননি বলেও জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন আবদুল্লাহ আল ইমরান।

তিনি বলেন, একপর্যায়ে তিনি দেখেন, যথাসময়ে তার অস্ত্রোপচার হচ্ছে না। বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে পারছেন না। তার বাবা হাসপাতাল থেকে নিয়ে যেতে চাইলেও নিতে পারছিলেন না। তখন তিনি বুঝতে পারেন ‘নো ট্রিটমেন্ট নো রিলিজ’–এর মানে। তার পা কেটে তাকে কারাগারে নিতে চেয়েছিল।

এ ঘটনার জন্য শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দায়ী করেন আবদুল্লাহ আল ইমরান।

গতকাল রোববার এই মামলার প্রথম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন মাইক্রোবাসচালক খোকন চন্দ্র বর্মণ।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় গতকাল ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন ও সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়।

গত বছরের জুলাই ও আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে যে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল, তার এক বছরের মাথায় এই মামলার মাধ্যমে সেই অপরাধের আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

তানোর-গোদাগাড়ীতে প্রার্থী ঘোষণায় সরগরম বিএনপির তৃণমূল

জবানবন্দিতে ইমরান

হাসপাতালে ‘নো ট্রিটমেন্ট নো রিলিজ’ নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা

Update Time : ০৩:১৩:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় আসামি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে জবানবন্দি দিয়েছেন শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ইমরান।

সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ মামলার দ্বিতীয় সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন তিনি।

জবানবন্দিতে আবদুল্লাহ আল ইমরান বলেন, রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (পঙ্গু হাসপাতাল) পরিদর্শনে গিয়ে শেখ হাসিনা ‘নো ট্রিটমেন্ট নো রিলিজ’ নির্দেশ দিয়েছিলেন।

জবানবন্দিতে শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ইমরান বলেন, গত বছরের ১৯ জুলাই রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংক এলাকায় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। তার বাঁ হাঁটুর নিচে গুলি লাগে।

আবদুল্লাহ আল ইমরান বলেন, রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুর্নবাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতাল) তার চিকিৎসা চলছিল। গত বছরের ২৬ অথবা ২৭ জুলাই সকাল ৯টা-১০টার দিকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পঙ্গু হাসপাতাল পরিদর্শনে যান। একপর্যায়ে শেখ হাসিনা তার কাছে যান। শেখ হাসিনাকে তিনি ‘ম্যাডাম’ বলে সম্বোধন করেন। শেখ হাসিনা তাকে ‘আপা’ বলে ডাকতে বলেন।

আবদুল্লাহ আল ইমরান আরও বলেন, তিনি কোথায় পড়াশোনা করেন, হলে থাকেন কি না, কেন থাকেন না, সে সম্পর্কে শেখ হাসিনা জানতে চান।

তিনি বলেন, ‘একপর্যায়ে শেখ হাসিনা বুঝতে পারেন, আমি আন্দোলনকারী। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, পুলিশ তোমাকে গুলি করেছে? আমি বলি, পুলিশ আমাকে সরাসরি গুলি করে। পুলিশের পোশাকে কারা ছিল, সেটা আমি জানি না। আমার পর আরও চার থেকে পাঁচজনের সঙ্গে তিনি কথা বলেন। পরে শেখ হাসিনা যখন চলে যাচ্ছিলেন, তখন হেল্পডেস্কের কাছে গিয়ে “নো ট্রিটমেন্ট নো রিলিজ” অর্ডার দিয়ে যান, যা আমি শুনতে পাই।’

তবে ‘নো ট্রিটমেন্ট নো রিলিজ’ মানে কী, তখন বুঝতে পারেননি বলেও জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন আবদুল্লাহ আল ইমরান।

তিনি বলেন, একপর্যায়ে তিনি দেখেন, যথাসময়ে তার অস্ত্রোপচার হচ্ছে না। বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে পারছেন না। তার বাবা হাসপাতাল থেকে নিয়ে যেতে চাইলেও নিতে পারছিলেন না। তখন তিনি বুঝতে পারেন ‘নো ট্রিটমেন্ট নো রিলিজ’–এর মানে। তার পা কেটে তাকে কারাগারে নিতে চেয়েছিল।

এ ঘটনার জন্য শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দায়ী করেন আবদুল্লাহ আল ইমরান।

গতকাল রোববার এই মামলার প্রথম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন মাইক্রোবাসচালক খোকন চন্দ্র বর্মণ।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় গতকাল ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন ও সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়।

গত বছরের জুলাই ও আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে যে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল, তার এক বছরের মাথায় এই মামলার মাধ্যমে সেই অপরাধের আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।