
রাজশাহীর তানোর সদরে অবস্থিত সরকারি পোস্ট অফিসে গ্রাহকের বিপুল পরিমান টাকা লোপাট করে গা ঢাকা দেন পোস্ট মাস্টার। এ ঘটনায় এবার পোস্ট অফিস ঘেরাও করে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে গ্রাহকরা। আজ ৮ জুলাই মঙ্গলবার দুপুরে তানোর সদরের কুঠিপাড়াস্থ পোস্ট অফিসের সামনে বিক্ষোভ করে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়। পরে অফিসের সংশ্লিষ্টরা এক সপ্তার ভিতরে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলে তালা খুলে দেয় বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা।
ভুক্তভোগি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ পোস্ট অফিস ব্যাংকে তানোর পোস্ট অফিসের মাধ্যমে এফডিএ মেয়াদি আমানত হিসাবে বিপুল পরিমান গ্রাহক সঞ্চয় আমানত জমা রাখেন। এরমধ্যে ৫৩ জন গ্রাহকের ১ কোটি ৮৪ লক্ষ টাকা নিয়ে আত্মগোপনে চলে যান তৎকালিন সময়ের পোস্ট মাস্টার মকছেদ আলী। টাকা গায়েবের ঘটনার বিষয়ে সত্যতা পাওয়ায় মকছেদ আলীকে সাময়িক বরখাস্ত করে দায় সারেন সংশ্লিষ্টরা। তবে, ওই সময় ভুক্তভোগি গ্রাহকরা থানায় মামলাও করেন। পরে দুদক মামলার তদন্ত করে। কিন্তু গ্রাহকের এতো টাকা লোপাট করা হলেও আজও উদ্ধার হয়নি বলে জানান নুরুল ইসলাম, তাবারুক হোসেন, রাশিদুল হক, নিরমল ও সুমনসহ বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগি।
ভুক্তভোগি গ্রাহক রেজিয়া খাতুন বলেন, তাদের এতো টাকা আত্নসাৎ করা হলেও কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ফলে নিরুপাই হয়ে গ্রাহকরা পোস্ট অফিস ঘেরাও করে গেটে তালা ঝুলিয়ে এক সপ্তার মধ্যে ব্যবস্থা নিতে আল্টিমেটাম দেন।
ভুক্তভোগীদের একজন তানোর উপজেলার কামারগাঁ বারঘরিয়া গ্রামের জয়নাল আবেদীন। তিনি বলেন, আমি ২০২১ সালে বাংলাদেশ পোস্ট অফিস সঞ্চয় ব্যাংকে তানোর পোস্ট অফিসে মেয়াদি আমানত হিসাবে এফডিএ করি ছয় লাখ টাকা। পরে ২০২২ সালে আবারও চার লাখ টাকা এফডিএ করি। প্রথম বারের ছয় লাখ টাকার সরকারি খাতাসহ পাস বইতে আছে। কিন্তু পরের চার লাখ টাকা আমার পাস বইতে হাতে লিখে তুলে দিয়েছে। কিন্তু সরকারি রেজিস্ট্রি খাতায় লেখা নেই। এই চার লাখ টাকার কোনো হদিস নেই।
এভাবে অরূপ কুমার নামে এক গ্রাহকের পাঁচ লাখ ৩৮ হাজার, পুষ্পা রানীর পাঁচ লাখ, সাবিয়া খাতুনের চার লাখ, কৃষ্ণা রানীর পাঁচ লাখ, রাশেদুলের তিন লাখ, পার্থ দাসের এক লাখ, আঙ্গুরা খাতুনের পাঁচ লাখ, রেজিয়া খাতুনের পাঁচ লাখ টাকাসহ ৫৩ জন গ্রাহকের ১ কোটি ৮৪ লক্ষ টাকার কোন হদিস নেই। আত্নসাৎ করেছেন মকছেদ আলী। কিন্তু এতো টাকা আত্নসাতের ঘটনায় ডাকবিভাগের পদক্ষেপ নেই। তবে, টাকা উদ্ধারে কাজ করছে ডাক বিভাগ বলে দাবি করেছেন বর্তমান পোস্ট মাস্টার আব্দুল মালেক।
তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফজাল হোসেন এমন ঘটনা এব্যাপারে তিনি অবগত নন বলে জানান। এব্যাপারে কথা বলার জন্য মকছেদ আলীর মোবাইলে ফোন দেয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়।
তানোর প্রতিবেদক 



















