ঢাকা ০৫:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo সীমান্তে ৪ কোটি টাকার পণ্যসহ গাড়ি জব্দ করছে বিজিবি ৬০ ব্যাটালিয়ান Logo আত্রাইয়ে ইটভাটা বন্ধের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও ইউএনও বরাবর স্মারকলিপি প্রদান Logo সাঁথিয়ায় প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ Logo বিজয়নগরে গ্রামীণ ব্যাংকে পেট্রোল ঢেলে আগুন Logo ঢাকা ও আশপাশে ১৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন, সতর্ক পুলিশ-র‍্যাবও Logo ছাত্রদলের প্যানেলে শীর্ষ দুই পদেই বহিরাগত! তৃণমূলে অসন্তোষ Logo মাঠে ময়লার ভাগাড় থাকায় খেলাধুলা বন্ধ পাঁচ বছর; ওয়াসব্লকে ছাগলের খামার! Logo তানোর-গোদাগাড়ীতে প্রার্থী ঘোষণায় সরগরম বিএনপির তৃণমূল Logo বিএনপিতে ফেরায় সংবর্ধিত হলেন কমেট চৌধুরী Logo ঈশ্বরদীতে ক্ষুধায় বাবা মায়ের কবরের কাছে গিয়ে খাবার চাওয়া সাগরের দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

কোনো উন্নয়ন প্রকল্প যেন প্রকৃতির ক্ষতি না করে: প্রধান উপদেষ্টা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৯:৩২:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
  • ১৪ Time View
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বুধবার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষার ওপর জোর দিয়েছেন। বুধবার (১৮ জুন) যমুনায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি ‘টেকনাফ টু তেঁতুলিয়া ইন্টিগ্রেটেড ইকোনমিক করিডোর ডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় জলাধার যেন ‘অক্ষত ও বিঘ্নহীন’ থাকে তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন। এ প্রকল্পটি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) প্রণয়ন করেছে।

বৈঠকে এডিবির বাংলাদেশ প্রতিনিধি হো ইউন জেওং এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)-এর কর্মকর্তারা করিডোর প্রকল্পের ভিশন, কৌশল ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া তুলে ধরেন। এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো দেশের দক্ষিণ-পূর্ব থেকে উত্তর-পশ্চিম পর্যন্ত পরিবহন নেটওয়ার্ক জুড়ে অবকাঠামো, শিল্পায়ন, লজিস্টিকস ও আঞ্চলিক সংযুক্তির একীভূত উন্নয়নের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই অর্থনৈতিক রূপান্তর নিশ্চিত করা।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফৌজুল কবির খান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDGs) বিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক লামিয়া মোর্শেদ, এবং প্রধান সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া।

প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস প্রকল্পটির জন্য তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারণ করেন: জলাধার সংরক্ষণ, জনসংখ্যা বণ্টনের বিবেচনা, এবং আন্তর্জাতিক সংযুক্তি বৃদ্ধি।

তিনি বলেন, ‘আমরা ভুলে গেলে চলবে না, বাংলাদেশ একটি বদ্বীপ। আমরা আমাদের পানিপ্রবাহে বিঘ্ন চাই না। আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার আমাদের নদী। প্রয়োজনে আমরা ভিন্ন পথে যাব।’

তিনি আরও বলেন, ‘যে কোনো নির্মাণের সময় আমাদের জনসংখ্যার অবস্থান মনে রাখতে হবে। আমরা একটি বন্যাপ্রবণ দেশ। এমনভাবে কাজ করতে হবে যাতে নদীর গতিপথ বাধাগ্রস্ত না হয়।’

‘আমরা এমন কোনো সড়ক নির্মাণ করতে চাই না, যা বন্যার পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তোলে। বন্যার সময় মানুষ রাস্তা, সেতু এবং রেললাইনের ওপর নিরাপদ আশ্রয় খোঁজে। তাই এটা শুধু সেতু নয়, এটা মানুষের নিরাপত্তার বিষয়,’ যোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘তৃতীয় বিষয়টি হলো আন্তর্জাতিক সংযুক্তি। আমরা এখানে একটি বিনিয়োগ কেন্দ্র গড়ে তুলতে চাই। তাই সড়ক যেন বাংলাদেশেই থেমে না যায়। আমরা নেপাল ও ভূটানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত হতে চাই। কারণ, সেটাই ভবিষ্যৎ।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রকৃতির সন্তান। আমরা প্রকৃতিকে ধ্বংস করতে চাই না। আমরা প্রকৃতির সঙ্গে বসবাস করতে চাই।’

প্রকল্পে পরিবেশগত দিকগুলো যাতে গুরুত্বপূর্ণভাবে বিবেচনায় নেওয়া হয়, সেজন্য প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দেন প্রকল্পে জলসম্পদ বিশেষজ্ঞ অন্তর্ভুক্ত করতে এবং একটি সমন্বিত মাস্টার প্ল্যান তৈরি করতে।

উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খান পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘আমাদের প্রকৃতিকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা দেখেছি, হাওর অঞ্চলে একটি বিশাল রাস্তা নির্মাণের ফলে পরিবেশের ওপর কী ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে—সেটা এলাকাবাসীর জন্য মারাত্মক বন্যার কারণ হয়েছে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

সীমান্তে ৪ কোটি টাকার পণ্যসহ গাড়ি জব্দ করছে বিজিবি ৬০ ব্যাটালিয়ান

কোনো উন্নয়ন প্রকল্প যেন প্রকৃতির ক্ষতি না করে: প্রধান উপদেষ্টা

Update Time : ০৯:৩২:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বুধবার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষার ওপর জোর দিয়েছেন। বুধবার (১৮ জুন) যমুনায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি ‘টেকনাফ টু তেঁতুলিয়া ইন্টিগ্রেটেড ইকোনমিক করিডোর ডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় জলাধার যেন ‘অক্ষত ও বিঘ্নহীন’ থাকে তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন। এ প্রকল্পটি এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) প্রণয়ন করেছে।

বৈঠকে এডিবির বাংলাদেশ প্রতিনিধি হো ইউন জেওং এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)-এর কর্মকর্তারা করিডোর প্রকল্পের ভিশন, কৌশল ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া তুলে ধরেন। এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো দেশের দক্ষিণ-পূর্ব থেকে উত্তর-পশ্চিম পর্যন্ত পরিবহন নেটওয়ার্ক জুড়ে অবকাঠামো, শিল্পায়ন, লজিস্টিকস ও আঞ্চলিক সংযুক্তির একীভূত উন্নয়নের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই অর্থনৈতিক রূপান্তর নিশ্চিত করা।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফৌজুল কবির খান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDGs) বিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক লামিয়া মোর্শেদ, এবং প্রধান সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া।

প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস প্রকল্পটির জন্য তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারণ করেন: জলাধার সংরক্ষণ, জনসংখ্যা বণ্টনের বিবেচনা, এবং আন্তর্জাতিক সংযুক্তি বৃদ্ধি।

তিনি বলেন, ‘আমরা ভুলে গেলে চলবে না, বাংলাদেশ একটি বদ্বীপ। আমরা আমাদের পানিপ্রবাহে বিঘ্ন চাই না। আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার আমাদের নদী। প্রয়োজনে আমরা ভিন্ন পথে যাব।’

তিনি আরও বলেন, ‘যে কোনো নির্মাণের সময় আমাদের জনসংখ্যার অবস্থান মনে রাখতে হবে। আমরা একটি বন্যাপ্রবণ দেশ। এমনভাবে কাজ করতে হবে যাতে নদীর গতিপথ বাধাগ্রস্ত না হয়।’

‘আমরা এমন কোনো সড়ক নির্মাণ করতে চাই না, যা বন্যার পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তোলে। বন্যার সময় মানুষ রাস্তা, সেতু এবং রেললাইনের ওপর নিরাপদ আশ্রয় খোঁজে। তাই এটা শুধু সেতু নয়, এটা মানুষের নিরাপত্তার বিষয়,’ যোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘তৃতীয় বিষয়টি হলো আন্তর্জাতিক সংযুক্তি। আমরা এখানে একটি বিনিয়োগ কেন্দ্র গড়ে তুলতে চাই। তাই সড়ক যেন বাংলাদেশেই থেমে না যায়। আমরা নেপাল ও ভূটানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত হতে চাই। কারণ, সেটাই ভবিষ্যৎ।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রকৃতির সন্তান। আমরা প্রকৃতিকে ধ্বংস করতে চাই না। আমরা প্রকৃতির সঙ্গে বসবাস করতে চাই।’

প্রকল্পে পরিবেশগত দিকগুলো যাতে গুরুত্বপূর্ণভাবে বিবেচনায় নেওয়া হয়, সেজন্য প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দেন প্রকল্পে জলসম্পদ বিশেষজ্ঞ অন্তর্ভুক্ত করতে এবং একটি সমন্বিত মাস্টার প্ল্যান তৈরি করতে।

উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খান পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘আমাদের প্রকৃতিকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা দেখেছি, হাওর অঞ্চলে একটি বিশাল রাস্তা নির্মাণের ফলে পরিবেশের ওপর কী ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে—সেটা এলাকাবাসীর জন্য মারাত্মক বন্যার কারণ হয়েছে।’