
পাবনার ঈশ্বরদী ও আশপাশের উপজেলায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতি জানার জন্য গত তিন দিন ধরে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) থেকে ছয় সদস্যের একটি তদন্ত দল ঈশ্বরদীতে অবস্থান করছে।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার ( ৫ জুন )বেলা ২টা পর্যন্ত নতুন ৭২ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ২২ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। ২৯ মে থেকে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৬৬ জন। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে দুই নারী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। ঈশ্বরদী ইপিজেড মেডিকেল সেন্টারে এ পর্যন্ত ৫৯২ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। শুধু গতকাল সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত নতুন ২১ জন রোগী চিকিৎসার জন্য এসেছেন। এর বাইরে ঈশ্বরদীর পার্শ্ববর্তী উপজেলা লালপুর ও আটঘরিয়াউপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রেও শ
অনেক ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন।
স্থানীয় চিকিৎসকরা ধারণা করছেন, ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাবের প্রধান কারণ হতে পারে পানির দূষণ বা পানিবাহিত ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক শাহেদুল ইসলাম শিশির বলেন, “যেসব রোগী হাসপাতালে আসছেন, তারা সবাই ইপিজেডের সাপ্লাই পানি পান করার কথা বলেছেন। তাই পানির মাধ্যমে সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি।”
অন্য একজন চিকিৎসক জানিয়েছেন, বেশিরভাগ শ্রমিক নিজ বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে আসেন এবং কারখানার ক্যানটিনে খাওয়ার সুযোগ খুব কম। তারা খাবারের পর ইপিজেডের সাপ্লাই পানি পান করেন। কারখানার কেন্দ্রীয় শোধনাগার থেকে পানি সরবরাহ করা হয়। তাই পানির কোনো সমস্যা থাকলে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়তে পারে। এছাড়া, বৃষ্টির কারণে পানির প্ল্যান্টে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ঘটার সম্ভাবনাও থাকতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আলী এহসান বলছেন, ‘পানিদূষণই ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধির প্রধান কারণ বলে মনে হচ্ছে। কারণ ডায়রিয়া পানিবাহিত রোগ। তাই আমাদের সন্দেহ এখন পানির দূষণের দিকে।’
ঢাকা থেকে আসা তদন্ত কমিটির টিম লিডার ডাক্তার এ এইচ এম মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরা সরেজমিন তদন্তে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। ডায়রিয়ার সংক্রমণ কেন বেশি হয়েছে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।’
তিনি আরও জানান, ‘ঈশ্বরদীর ইপিজেডের কেন্দ্রীয় পানি শোধনাগার, পানি সরবরাহের উৎস ও স্যানিটারি ব্যবস্থা বিস্তারিতভাবে যাচাই করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে পানির নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
আলমাস আলী, ঈশ্বরদী ( পাবনা )প্রতিবেদক 



















