
ঈশ্বরদী উপজেলার ২৩নং চররূপপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা মোছাঃ লতিফা আক্তারের বিরুদ্ধে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও সরকারি চাকরির আচরণ বিধিমালা ভঙ্গের অভিযোগ এনে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন অত্র প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।
ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর এ অভিযোগ পত্র দায়ের করেন চররূপপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ পারভেজ রেজা।
অভিযোগের সূত্র ধরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চররূপপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোছাঃ লতিফা আক্তার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও ঔদ্ধতাপূর্ণ ব্যবহার, সময়মত বিদ্যালয়ে না আসা, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে রুঢ় ও অশালীন আচরণসহ না অভিযোগ উঠে এসেছে। যার অনুলিপি তিনি জেলা শিক্ষা অফিসার, উপ-পরিচালক রাজশাহী ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকা বরাবর প্রেরণ করেছেন। এর আগে ২০২৪ সালে অসংখ্য অভিযোগ সম্বলিত একটি চিঠি ঈশ্বরদী উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর দাখিল করা হয় অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষিকা মোছাঃ লতিফা আক্তারের বিরুদ্ধে। সেই সময় তিনি আওয়ামীলীগের প্রভাবশালীদের দাপট ও ক্ষমতা দেখিয়ে লিখিত অভিযোগটি ধামাচাপা দেন। সেই কারণেই একই অপরাধ বার বার করেও তিনি পার পেয়ে যাচ্ছেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে আরো জানা গেছে, স্কুলে ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য পরিচালিত শিশু জরিপ কার্যক্রমে অংশ না নিয়ে তিনি বিদ্যালয়ে ও বাড়িতে অলস সময় পার করেন। এছাড়াও জাতীয় দিবস গুলোতে বেশির ভাগ অনুপস্থিত থাকেন।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে, নিজের খেয়াল খুশি মত চলাফেরা এবং অন্য শিক্ষকদের এসব কাজে উৎসাহিত করেন। প্রধান শিক্ষক থেকে অনুমতি না নিয়ে বিদ্যালয় থেকে চলে যান। অনুমোদিত সিলেবাস অনুযায়ী পাঠদান না করানোসহ শিক্ষকদের সাথে খারাপ আচরণ, গালমন্দ, কুটু বাক্য প্রদর্শন করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ পারভেজ রেজা জানান, স্কুলটি সুষ্টু ও শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালনার জন্য সকল অভিযোগ লিখিত আকারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারসহ উর্ধ্বতন দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। তারই সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এর সূরাহা করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অভিযুক্ত মোছাঃ লতিফা আক্তার বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমাদের সাথে খুব খারাপ ব্যবহার ও বাজে আচরণ করেন। তাই অনেক সময় বাধ্য হয়ে রুঢ় আচরণ হয়ে যায়। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অশালীন আচরণের কারণে স্কুলের সবাই তার প্রতি ক্ষিপ্ত। তার কারণে কোন শিক্ষক স্কুলে থাকতে চাই না।
লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক অফিসার মোসাঃ শাহীনা আক্তার বলেন, অভিযোগটি তদন্তের জন্য সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ বেলাল হোসেনকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। তিনি সরেজমিন তদন্ত করে রিপোর্ট দাখিল করলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঈশ্বরদী উপজেলা সরকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ বেলাল হোসেন লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে জানান, সরকারী একটি ট্রেনিং এ থাকায় অভিযোগটির তদন্ত করতে কিছুটা সময় লাগছে। তাছাড়াও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ পারভেজ রেজা আমাকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন। এছাড়াও বিগত সরকারের সময় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষিকা মোছাঃ লতিফা আক্তার বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা আদায় করেছেন বলে জেনেছি। বিষয়টি নিয়ে অধিকতর তদন্ত শেষে সঠিক রিপোর্ট প্রদান করা হবে।
ঈশ্বরদি প্রতিবেদক 



















