
ঢাকা: খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদের অপসারণের দাবিতে বুধবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ করেছে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ।
ছাত্র বিক্ষোভে বক্তব্য রাখেন- জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সহকারী সদস্য সচিব গালীব ইহসান, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব মুহিব মুশফিক খান।
গালীব ইহসান ভিসি মাছুদকে নয়া ফ্যাসিস্ট আখ্যায়িত করে বলেন, তিনি বহিরাগতদের দিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা করিয়ে আবার তাদের ৩৭ জনকে অবৈধভাবে বহিষ্কার করেছেন; যা বিগত ফ্যাসিবাদকেও ছাপিয়ে গেছে। যেহেতু ফ্যাসিস্ট মাছুদ পদত্যাগ করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সেহেতু তাকে আর পদত্যাগ করার মতো সম্মানের সুযোগ দেওয়া হবে না। ছাত্র-জনতার রক্তে গড়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এখন একমাত্র দায়িত্ব হচ্ছে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে অনতিবিলম্বে কুয়েট ভিসিকে অপসারণ করা।
এ সময় তিনি শিক্ষা উপদেষ্টার সফরের সমালোচনা করে বলেন, ছাত্রদের অনশন কর্মসূচিতে গিয়ে তাদের অনশন না ভাঙিয়ে, সন্ত্রাসী ভিসিকে অপসারণ না করে, অন্য প্রোগ্রামে চলে যাওয়া একটি ফ্যাসিস্ট আচরণ। বাংলাদেশে আর কোনো ফ্যাসিবাদ সহ্য করা হবে না। শিক্ষা উপদেষ্টাকে ছাত্রদের সমস্যা সমাধানের জন্য বসানো হয়েছে, কারো তাঁবেদারি করার জন্য নয়।
সরকার অনতিবিলম্বে কুয়েট ভিসিকে অপসারণ না করলে ‘মার্চ ফর কুয়েট’ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারিও দেন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের এই সহকারী সদস্য সচিব।
আবদুল ওয়াহেদ বলেন, আমরা দেখেছি প্রায় ৪৮ ঘণ্টা অনশন করে শিক্ষার্থীরা গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর শিক্ষা উপদেষ্টা অনশনরত শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়েছেন, কিন্তু তিনি ভিসির অপসারণের বিষয়ে কোনো কথা বলেননি, এটি লজ্জাজনক। এছাড়া ছাত্রদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে ছাত্র উপদেষ্টারাও কোনো কথা বলছেন না, রক্তের সঙ্গে বেইমানি করছেন। কুয়েটে অনশনরত শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে সারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনশন ও আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা, তাতেও সাড়া দিচ্ছেন না ইন্টেরিম সরকার। যদি শিক্ষার্থীদের কোনো ক্ষতি হয়, তার দায়ভার শিক্ষা উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিতে হবে। কারো ক্ষতি হলে সংশ্লিষ্ট কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি আরও বলেন, অতি দ্রুত ভিসিকে অপসারণ করতে হবে, হলগুলো খুলে দিতে হবে, বহিষ্কারকৃত ছাত্রদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে হবে এবং নতুন ভিসি নিয়োগ করে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে হামলায় জড়িত বহিরাগতদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
মুহিব মুশফিক খান বলেন, কুয়েট ভিসি বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে ছাত্রদের ওপর যে হামলা চালিয়েছিল তা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সময়ের ঢাবির ভিসি মাকসুদ কামালের সমতুল্য। ড. মাছুদ বহিরাগত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নিয়ে স্বৈরাচারী কায়দায় আন্দোলনরত ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছেন। নব্য ফ্যাসিস্ট মাছুদকে অনতিবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।
ছাত্র বিক্ষোভে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের সহকারী সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম নূর শাফায়েতুল্লাহ, সহকারী সদস্য সচিব ফারজায়ান আহসান কৃতিত্ব, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম; ঢাকা মাদরাসা-ই-আলিয়া শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক সালমান ফারসী, সদস্য সচিব মো. জিনাত হোসেন, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব শরীফ খান প্রমুখ।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা 


















