ঢাকা ০৯:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo তানোরে নতুন ধানের জাত ব্রি ধান ১০৩ এর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত Logo প্রিপেইড মিটার স্থাপন বন্ধ ও মামলা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে মৌন মিছিল ও স্মারকলিপি হস্তান্তর Logo সৈয়দপুরে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার Logo শ্রীমঙ্গলে সাংবাদিকদের সাথে সংসদ সদস্য প্রার্থী হারুনুর রশিদের মতবিনিময় সভা Logo মোবাইল-ই কাল হলো নবম শ্রেণীর ছাত্রী জ্যামির, শিক্ষকের শাসন -অতঃপর বিষপানের মৃত্যু Logo রাজধানীর বাড্ডা ও শাহজাদপুরে ২ বাসে আগুন Logo রাজধানীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে একজন নিহত Logo চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ সার ব্যবসায়ীকে ১ মাসের কারাদণ্ড ও জরিমানা Logo মহাদেবপুরে আদালতের আদেশ অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা Logo দুর্গাপুরে ‎রাজশাহী-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন 

শীতের গন্ধ, তাপমাত্রা কমছে প্রতিদিন দুই ডিগ্রি ঈশ্বরদীতে দোকানে উঠছে শীতের সোয়েটার-জ্যাকেট, কম্বল

ঈশ্বরদীতে হালকা শীতের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিদিন তাপমাত্রা কমছে প্রায় দুই ডিগ্রি করে। অভিজাত বিপনী বিতান গুলো সহ গরিবের মার্কেট খ্যাত হকার্স মার্কেটেও শুরু হয়েছে শীতের পোশাক বিক্রির প্রস্তুতি। ঈশ্বরদীর হাওয়া এখন আর আগের মতো উষ্ণ নেই। ভোরবেলা কিংবা সন্ধ্যা রাতেই বাতাসে হালকা শীতের ছোঁয়া অনুভূত হচ্ছে। রাস্তায় কিছু মানুষকে দেখা যাচ্ছে পাতলা সোয়েটার বা জ্যাকেট পরে চলাফেরা করতে।  এদিকে ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে আজ রবিবার ( ৯ নভেম্বর ) সকালে এখানকার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঠিক একই সময়ে আগের দিন শনিবার( ৮ নভেম্বর ) এখানকার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৮ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। একই সময়ে ঠিক তার আগের দিন শুক্রবার ( ৭ নভেম্বর )তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত তিন দিনের ঈশ্বরদীর আবহাওয়ার রেকর্ড পর্যালোচনা করে এবং ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: হেলাল উদ্দিন জানান, গত তিনদিন ধরেই এখানকার তাপমাত্রা প্রায় দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস করে কমছে।
নভেম্বরের শুরুতেই এই ঠান্ডার ইঙ্গিত বুঝে নিয়েছে পোশাক ব্যবসায়ীরাও।
রবিবার (৯ নভেম্বর) সরেজমিনে  ঈশ্বরদী শহরের  বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে ও শহরের বাইরে কয়েকটি এলাকায় হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে ইতোমধ্যে  দোকানগুলো সাজতে শুরু করেছে শীতের বাহারি পোশাকে।
তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতের পোশাক বিক্রি এখনো ঠিক জমে ওঠেনি। আবহাওয়া পুরোপুরি ঠান্ডা না হওয়ায় ক্রেতারা এখনো অপেক্ষা করছেন।  প্রস্তুতি কিন্তু আগেভাগেই নিয়ে রেখেছেন বিক্রেতারা।
শহরের বঙ্গবন্ধু সুপার মার্কেটের পোশাক ব্যবসায়ী মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা চলতি সপ্তাহ থেকেই দোকানে সোয়েটার, জ্যাকেট আর উলের টুপি তুলেছি। কিন্তু ক্রেতা এখনো খুব একটা আসছে না। সকালে একটু ঠান্ডা থাকে, কিন্তু দুপুরে আবার গরম পড়ে যায়। তাই মানুষ এখনো কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।’
তিনি আশা করছেন, নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে বিক্রি বাড়বে। আরেক সপ্তাহ গেলেই ঠান্ডা পড়বে। তখন ক্রেতার ভিড় বাড়বে, তখন বিক্রিও জমে উঠবে।
জাকের প্লাজার দোকানদার আসলাম আলী জানান, ‘গত বছর নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই বিক্রি শুরু হয়েছিল। এবারও একই রকম হবে মনে হচ্ছে। এখন শুধু মানুষ এসে দেখে যাচ্ছে, দাম জিজ্ঞেস করছে, কিন্তু কিনছে না। শীত একটু নামলেই বাজারে জোয়ার আসবে।’
মনির প্লাজার তরুণ ব্যবসায়ী আরিফুল রহমান বলেন, ‘আমরা এবার নতুন ডিজাইনের সোয়েটার আর জ্যাকেট এনেছি, বিশেষ করে তরুণদের জন্য। দামও তুলনামূলক কম। ৭০০ টাকার মধ্যে ভালো মানের সোয়েটার পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু মানুষ এখনো ‘দেখে যাওয়া’র পর্যায়ে আছে।’
তবে ক্রেতাদের কথায় বোঝা যায়, তারা শীতের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু এখনো পুরোপুরি কেনাকাটার সময় এসেছে বলে মনে করছেন না।
গরিবের মার্কেট হিসেবে খ্যাত হকার্স মার্কেটে কেনাকাটা করতে এসেছিলেন গৃহিণী নাজমুন নাহার। তিনি বলেন, ‘শীত এখনো পড়েনি, তবে বাচ্চাদের জন্য আগেভাগে কিছু নিতে এসেছি। ওরা সকালে স্কুলে যায়, তখন একটু ঠান্ডা লাগে। তাই হালকা সোয়েটার কিনছি।’
অন্যদিকে শিক্ষার্থী সামিয়া ইসলাম জানান, ‘আমি একটু ট্রেন্ডি পোশাক পছন্দ করি। নতুন ডিজাইনের জ্যাকেট আর হুডি আসছে শুনে দেখতে এসেছি। দাম এখন একটু বেশি মনে হচ্ছে, তাই ভেবে দেখছি।’
বিক্রেতারা বলছেন, তারা আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখেন যাতে হঠাৎ ঠান্ডা বেশি পড়লেই বিক্রির সুযোগ হাতছাড়া না হয়। বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পাইকাররা আগেভাগেই জ্যাকেট, সোয়েটার, মোজা, টুপি, কম্বল ইত্যাদি তুলেছেন।

তবে ক্রেতারা অভিযোগ করছেন, দাম তুলনামূলক বেশি মনে হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় অন্তত ১০ থেকে ২০ শতাংশ বেড়েছে।
ক্রেতা আবেদা সুলতানা বলেন, ‘গত বছর যেটা ৬০০ টাকায় কিনেছিলাম, এখন সেটা ৭৫০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এখন প্রতিদিন দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস করে তাপমাত্রা নামলেও নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে রাতের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে আরো নামবে।
এই প্রেক্ষাপটে বাজারের দোকানদাররা এখন ব্যস্ত নতুন পোশাক সাজাতে। দোকানে দোকানে চলছে দামি ও সস্তা দুই ধাঁচের পোশাকের সমাহার। কারও জন্য বিদেশি জ্যাকেট, আবার কারও জন্য স্থানীয় উলের সোয়েটার। দোকানপাটে শীতের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। পোশাকের রঙ, নকশা আর সাজে যেন আগাম শীতের বার্তা মেলে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

তানোরে নতুন ধানের জাত ব্রি ধান ১০৩ এর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত

শীতের গন্ধ, তাপমাত্রা কমছে প্রতিদিন দুই ডিগ্রি ঈশ্বরদীতে দোকানে উঠছে শীতের সোয়েটার-জ্যাকেট, কম্বল

Update Time : ০৮:১১:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৫

ঈশ্বরদীতে হালকা শীতের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিদিন তাপমাত্রা কমছে প্রায় দুই ডিগ্রি করে। অভিজাত বিপনী বিতান গুলো সহ গরিবের মার্কেট খ্যাত হকার্স মার্কেটেও শুরু হয়েছে শীতের পোশাক বিক্রির প্রস্তুতি। ঈশ্বরদীর হাওয়া এখন আর আগের মতো উষ্ণ নেই। ভোরবেলা কিংবা সন্ধ্যা রাতেই বাতাসে হালকা শীতের ছোঁয়া অনুভূত হচ্ছে। রাস্তায় কিছু মানুষকে দেখা যাচ্ছে পাতলা সোয়েটার বা জ্যাকেট পরে চলাফেরা করতে।  এদিকে ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে আজ রবিবার ( ৯ নভেম্বর ) সকালে এখানকার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঠিক একই সময়ে আগের দিন শনিবার( ৮ নভেম্বর ) এখানকার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৮ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। একই সময়ে ঠিক তার আগের দিন শুক্রবার ( ৭ নভেম্বর )তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত তিন দিনের ঈশ্বরদীর আবহাওয়ার রেকর্ড পর্যালোচনা করে এবং ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: হেলাল উদ্দিন জানান, গত তিনদিন ধরেই এখানকার তাপমাত্রা প্রায় দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস করে কমছে।
নভেম্বরের শুরুতেই এই ঠান্ডার ইঙ্গিত বুঝে নিয়েছে পোশাক ব্যবসায়ীরাও।
রবিবার (৯ নভেম্বর) সরেজমিনে  ঈশ্বরদী শহরের  বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে ও শহরের বাইরে কয়েকটি এলাকায় হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে ইতোমধ্যে  দোকানগুলো সাজতে শুরু করেছে শীতের বাহারি পোশাকে।
তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতের পোশাক বিক্রি এখনো ঠিক জমে ওঠেনি। আবহাওয়া পুরোপুরি ঠান্ডা না হওয়ায় ক্রেতারা এখনো অপেক্ষা করছেন।  প্রস্তুতি কিন্তু আগেভাগেই নিয়ে রেখেছেন বিক্রেতারা।
শহরের বঙ্গবন্ধু সুপার মার্কেটের পোশাক ব্যবসায়ী মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা চলতি সপ্তাহ থেকেই দোকানে সোয়েটার, জ্যাকেট আর উলের টুপি তুলেছি। কিন্তু ক্রেতা এখনো খুব একটা আসছে না। সকালে একটু ঠান্ডা থাকে, কিন্তু দুপুরে আবার গরম পড়ে যায়। তাই মানুষ এখনো কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।’
তিনি আশা করছেন, নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে বিক্রি বাড়বে। আরেক সপ্তাহ গেলেই ঠান্ডা পড়বে। তখন ক্রেতার ভিড় বাড়বে, তখন বিক্রিও জমে উঠবে।
জাকের প্লাজার দোকানদার আসলাম আলী জানান, ‘গত বছর নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই বিক্রি শুরু হয়েছিল। এবারও একই রকম হবে মনে হচ্ছে। এখন শুধু মানুষ এসে দেখে যাচ্ছে, দাম জিজ্ঞেস করছে, কিন্তু কিনছে না। শীত একটু নামলেই বাজারে জোয়ার আসবে।’
মনির প্লাজার তরুণ ব্যবসায়ী আরিফুল রহমান বলেন, ‘আমরা এবার নতুন ডিজাইনের সোয়েটার আর জ্যাকেট এনেছি, বিশেষ করে তরুণদের জন্য। দামও তুলনামূলক কম। ৭০০ টাকার মধ্যে ভালো মানের সোয়েটার পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু মানুষ এখনো ‘দেখে যাওয়া’র পর্যায়ে আছে।’
তবে ক্রেতাদের কথায় বোঝা যায়, তারা শীতের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু এখনো পুরোপুরি কেনাকাটার সময় এসেছে বলে মনে করছেন না।
গরিবের মার্কেট হিসেবে খ্যাত হকার্স মার্কেটে কেনাকাটা করতে এসেছিলেন গৃহিণী নাজমুন নাহার। তিনি বলেন, ‘শীত এখনো পড়েনি, তবে বাচ্চাদের জন্য আগেভাগে কিছু নিতে এসেছি। ওরা সকালে স্কুলে যায়, তখন একটু ঠান্ডা লাগে। তাই হালকা সোয়েটার কিনছি।’
অন্যদিকে শিক্ষার্থী সামিয়া ইসলাম জানান, ‘আমি একটু ট্রেন্ডি পোশাক পছন্দ করি। নতুন ডিজাইনের জ্যাকেট আর হুডি আসছে শুনে দেখতে এসেছি। দাম এখন একটু বেশি মনে হচ্ছে, তাই ভেবে দেখছি।’
বিক্রেতারা বলছেন, তারা আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখেন যাতে হঠাৎ ঠান্ডা বেশি পড়লেই বিক্রির সুযোগ হাতছাড়া না হয়। বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পাইকাররা আগেভাগেই জ্যাকেট, সোয়েটার, মোজা, টুপি, কম্বল ইত্যাদি তুলেছেন।

তবে ক্রেতারা অভিযোগ করছেন, দাম তুলনামূলক বেশি মনে হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় অন্তত ১০ থেকে ২০ শতাংশ বেড়েছে।
ক্রেতা আবেদা সুলতানা বলেন, ‘গত বছর যেটা ৬০০ টাকায় কিনেছিলাম, এখন সেটা ৭৫০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এখন প্রতিদিন দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস করে তাপমাত্রা নামলেও নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে রাতের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে আরো নামবে।
এই প্রেক্ষাপটে বাজারের দোকানদাররা এখন ব্যস্ত নতুন পোশাক সাজাতে। দোকানে দোকানে চলছে দামি ও সস্তা দুই ধাঁচের পোশাকের সমাহার। কারও জন্য বিদেশি জ্যাকেট, আবার কারও জন্য স্থানীয় উলের সোয়েটার। দোকানপাটে শীতের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। পোশাকের রঙ, নকশা আর সাজে যেন আগাম শীতের বার্তা মেলে।