ঢাকা ০৬:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo ১৩ নভেম্বর রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইসির সংলাপ শুরু Logo যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘতম শাটডাউন অবসানের পথ খুঁজছেন সিনেটররা Logo যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউনে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি ফ্লাইট বাতিল Logo সারাদেশে প্রাথমিকের শিক্ষকদের কর্মবিরতি, শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি Logo নাটোর-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ Logo কারও দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়ন করা এই সরকারের কাজ নয়: তারেক রহমান Logo আগামীকাল থেকে সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা Logo বিচারিক প্রক্রিয়ায় নিষিদ্ধ হবে আ,লীগ ও  জাতীয় পার্টি–নুরুল হক নুর Logo শীতের আগমনে কুয়াশার চাদরে ঢাকা  সৈয়দপুর শহর Logo পাবনা ৪ আসনে বিএনপি’র হাবিবকে সমর্থন করেও বিপক্ষে গেলেন মনোনয়ন প্রত্যাশী জাকারিয়া পিন্টু

নবীনগরে গুলিকরে দুইজনকে হত্যার ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত (৩১ অক্টোবর) রাতে বিবদমান দুই গ্রুপের সন্ত্রাসী হামলায় গুলিবিদ্ধ দুজন নিহত ও একজন গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় বুধবার (৫ অক্টোবর) রাতে নবীনগর থানায় দুটি পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে।

ঘটনার চার দিন পর দায়ের হওয়া একটি মামলার বাদী হয়েছেন নিহত শিপন মিয়ার মা, এলাকার কুখ্যাত মনেক ডাকাতের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম। এই হত্যা মামলায় ঢাকায় কর্মরত পুলিশের ডিসি বিল্লাল হোসেনের আপন ছোট ভাই গুলিবিদ্ধ গুরুতর আহত এমরান হোসেন মাস্টারকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়াও মামলাটিতে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

অপর মামলাটির বাদী হয়েছেন বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন গুলিবিদ্ধ এমরান মাস্টারের চাচাতো ভাই হাসিবুর রহমান। এই মামলায় নিহত শিপনের বাবা বহু মামলার আসামি কুখ্যাত মনেক ডাকাতকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়াও এই মামলায় ২৫ জনের নাম উল্লেখসহ ৬০/৭০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।

নবীনগর থানার ওসি শাহীনূর ইসলাম( ৬ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার সকালে সাংবাদিকদের কাছে এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দুটি মামলাই নেওয়াই হয়েছে।

এখন সুষ্ঠু তদন্ত করে এ বিষযে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে দুই মামলায় এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি বলেও জানান ওসি।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের গণি শাহ মাজার সংলগ্ন বাজারে স্থানীয় একটি হোটেলে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত( ৩১ অক্টোবর) শনিবার রাত ৯টার দিকে এলাকার কুখ্যাত ডাকাত মোন্নাফ মিয়া ওরফে মনেক ডাকাতের ছেলে শিপন মিয়া (৩০) সন্ত্রাসী হামলায় আক্রান্ত হন।

ওই সময় আচমকা থোল্লাকান্দি গ্রামের রিফাতের নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী হোটেলটিতে গুলি করতে করতে ঢুকে।

সে সময় শিপন মিয়া (৩০) এবং হোটেলের দুই কর্মচারী ইয়াছিন (২০) ও নূর আলম (১৮) গুলিবিদ্ধ হন। তাদের ঢাকায় পাঠানো হলে ওই দিনই ভোর রাতে গুলিবিদ্ধ শিপন মিয়া ও পর দিন ইয়াছিন মিয়া মারা যান।
এদিকে মনেক ডাকাতের ছেলে শিপনকে সন্ত্রাসীরা গুলি করেছে- এই খবর মনেক ডাকাতের বাড়ি পার্শ্ববর্তী নূরজাহানপুর গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে মনেকের নেতৃত্বে বিক্ষুব্ধ লোকজন সশস্ত্র অবস্থায় গণিশাহ মাজারের অদূরে তালতলায় গিয়ে হামলাকারী রিফাতের চাচাতো ভাই স্থানীয় এমরান হোসেন মাস্টারের অফিসে হামলা চালায়। এসময় মনেকের সশস্ত্র লোকজন এমরান মাস্টারকে (৪২) বেধড়ক পিটিয়ে গুলি করে। বর্তমানে গুলিবিদ্ধ এমরান মাস্টার ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে।

পুলিশ জানায়, কুখ্যাত মনেক ডাকাত ও তার ছেলে শিপন দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক, চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতিসহ নানা অপরাধে জড়িত ছিল। তাদের সঙ্গে থোল্লাকান্দি গ্রামের রিফাত ও তার সহযোগীদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও ছিল। সম্প্রতি অবৈধ ব্যবসার অর্থ ভাগাভাগি নিয়ে শিপন ও রিফাতের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। ওই বিরোধের জের ধরেই (৩১ অক্টোবর) রাতে রিফাতের নেতৃত্বে সশস্ত্র হামলাকারীরা গণিশাহ মাজারসংলগ্ন হোটেলে ঢুকে শিপনের ওপর গুলি চালায়।

নবীনগর থানার (ওসি) শাহীনূর ইসলাম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, শিপনকে গুলি করে রিফাত, যিনি থোল্লাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা এবং এমরান মাস্টারের আত্মীয়। ফলে শিপন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর শুনে মনেক ডাকাতের অনুসারীরা এমরান মাস্টারের অফিসে হামলা চালিয়ে তাকে বেধড়ক পেটায় ও গুলি করেছে বলে শুনেছি।

আমিরজাদা চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
৬/১১/২০২৫
০১৭২৯৭৪১২৯৫

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

১৩ নভেম্বর রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইসির সংলাপ শুরু

নবীনগরে গুলিকরে দুইজনকে হত্যার ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা

Update Time : ০৮:২০:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত (৩১ অক্টোবর) রাতে বিবদমান দুই গ্রুপের সন্ত্রাসী হামলায় গুলিবিদ্ধ দুজন নিহত ও একজন গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় বুধবার (৫ অক্টোবর) রাতে নবীনগর থানায় দুটি পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে।

ঘটনার চার দিন পর দায়ের হওয়া একটি মামলার বাদী হয়েছেন নিহত শিপন মিয়ার মা, এলাকার কুখ্যাত মনেক ডাকাতের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম। এই হত্যা মামলায় ঢাকায় কর্মরত পুলিশের ডিসি বিল্লাল হোসেনের আপন ছোট ভাই গুলিবিদ্ধ গুরুতর আহত এমরান হোসেন মাস্টারকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়াও মামলাটিতে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

অপর মামলাটির বাদী হয়েছেন বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন গুলিবিদ্ধ এমরান মাস্টারের চাচাতো ভাই হাসিবুর রহমান। এই মামলায় নিহত শিপনের বাবা বহু মামলার আসামি কুখ্যাত মনেক ডাকাতকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়াও এই মামলায় ২৫ জনের নাম উল্লেখসহ ৬০/৭০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।

নবীনগর থানার ওসি শাহীনূর ইসলাম( ৬ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার সকালে সাংবাদিকদের কাছে এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দুটি মামলাই নেওয়াই হয়েছে।

এখন সুষ্ঠু তদন্ত করে এ বিষযে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে দুই মামলায় এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি বলেও জানান ওসি।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের গণি শাহ মাজার সংলগ্ন বাজারে স্থানীয় একটি হোটেলে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত( ৩১ অক্টোবর) শনিবার রাত ৯টার দিকে এলাকার কুখ্যাত ডাকাত মোন্নাফ মিয়া ওরফে মনেক ডাকাতের ছেলে শিপন মিয়া (৩০) সন্ত্রাসী হামলায় আক্রান্ত হন।

ওই সময় আচমকা থোল্লাকান্দি গ্রামের রিফাতের নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী হোটেলটিতে গুলি করতে করতে ঢুকে।

সে সময় শিপন মিয়া (৩০) এবং হোটেলের দুই কর্মচারী ইয়াছিন (২০) ও নূর আলম (১৮) গুলিবিদ্ধ হন। তাদের ঢাকায় পাঠানো হলে ওই দিনই ভোর রাতে গুলিবিদ্ধ শিপন মিয়া ও পর দিন ইয়াছিন মিয়া মারা যান।
এদিকে মনেক ডাকাতের ছেলে শিপনকে সন্ত্রাসীরা গুলি করেছে- এই খবর মনেক ডাকাতের বাড়ি পার্শ্ববর্তী নূরজাহানপুর গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে মনেকের নেতৃত্বে বিক্ষুব্ধ লোকজন সশস্ত্র অবস্থায় গণিশাহ মাজারের অদূরে তালতলায় গিয়ে হামলাকারী রিফাতের চাচাতো ভাই স্থানীয় এমরান হোসেন মাস্টারের অফিসে হামলা চালায়। এসময় মনেকের সশস্ত্র লোকজন এমরান মাস্টারকে (৪২) বেধড়ক পিটিয়ে গুলি করে। বর্তমানে গুলিবিদ্ধ এমরান মাস্টার ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে।

পুলিশ জানায়, কুখ্যাত মনেক ডাকাত ও তার ছেলে শিপন দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক, চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতিসহ নানা অপরাধে জড়িত ছিল। তাদের সঙ্গে থোল্লাকান্দি গ্রামের রিফাত ও তার সহযোগীদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও ছিল। সম্প্রতি অবৈধ ব্যবসার অর্থ ভাগাভাগি নিয়ে শিপন ও রিফাতের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। ওই বিরোধের জের ধরেই (৩১ অক্টোবর) রাতে রিফাতের নেতৃত্বে সশস্ত্র হামলাকারীরা গণিশাহ মাজারসংলগ্ন হোটেলে ঢুকে শিপনের ওপর গুলি চালায়।

নবীনগর থানার (ওসি) শাহীনূর ইসলাম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, শিপনকে গুলি করে রিফাত, যিনি থোল্লাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা এবং এমরান মাস্টারের আত্মীয়। ফলে শিপন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর শুনে মনেক ডাকাতের অনুসারীরা এমরান মাস্টারের অফিসে হামলা চালিয়ে তাকে বেধড়ক পেটায় ও গুলি করেছে বলে শুনেছি।

আমিরজাদা চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
৬/১১/২০২৫
০১৭২৯৭৪১২৯৫