ঢাকা ১২:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo রাজধানীর বাড্ডা ও শাহজাদপুরে ২ বাসে আগুন Logo রাজধানীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে একজন নিহত Logo চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ সার ব্যবসায়ীকে ১ মাসের কারাদণ্ড ও জরিমানা Logo মহাদেবপুরে আদালতের আদেশ অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা Logo দুর্গাপুরে ‎রাজশাহী-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন  Logo শীতের গন্ধ, তাপমাত্রা কমছে প্রতিদিন দুই ডিগ্রি ঈশ্বরদীতে দোকানে উঠছে শীতের সোয়েটার-জ্যাকেট, কম্বল Logo পদ্মার চরজুড়ে চলছে ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’ Logo নীলফামারীতে চার দফা দাবী বাস্তবায়নে বিসিএস প্রভাষক পরিষদের মানবন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন Logo বিএনপি অফিস ভাংচুর মামলায়  ছাত্রলীগ নেতা আটক   Logo দেশের চলমান সব সংকট নাটকের অংশ, মানুষ ভোট দিতে চায়: মির্জা ফখরুল

দুর্গাপুরে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে দুই পুলিশ কনস্টেবলকে গণধোলাই, পুলিশ লাইনে ক্লোজড 

রাজশাহীর দুর্গাপুর থানার দুই পুলিশ কনস্টেবল সাদা পোশাকে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে জনতার আটক ও গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ওই দুই পুলিশ কনস্টেবলকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়। ঘটনার পর অভিযুক্ত দুই পুলিশ কনস্টেবলকে পুলিশ লাইন্সে (ক্লোজড) সংযুক্ত করা হয়েছে।
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা হলেন, দুর্গাপুর থানার জরুরী সেবা ট্রিপল নাইনের ড্রাইভার ইমরান আলী ও থানার কম্পিউটার অপারেটর মাজেদ হোসেন। মঙ্গলবার বিকেলে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের আবু বাক্কারের ছেলে সজীব আহমেদ (২৫) অনলাইনের ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত। এমন অভিযোগ নিয়ে অভিযুক্ত দুই পুলিশ কনস্টেবল সজীবের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করে। অন্যথায় সজীবকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়। বিষয়টি স্থানীয়দের কাছে সন্দেহজনক হলে অভিযুক্ত দুই পুলিশ কনস্টেবলের পরিচয় জানতে চান। একপর্যায়ে স্থানীয়দের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়ান অভিযুক্ত দুই পুলিশ কনস্টেবল। এ সময় স্থানীয়রা ওই দুই পুলিশ কনস্টেবলকে গণধোলাই দিয়ে আটকে রেখে থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের একটি টিম অভিযুক্ত দুই পুলিশ কনস্টেবলকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়।
অপর একটি সূত্র জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে কনস্টেবল ইমরান ও মাজেদ নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে শ্যামপুর এলাকায় গিয়ে সজীবকে ফোন করে ডেকে নিয়ে নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে গ্রেফতার করবে মর্মে ভয়-ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের অর্থ দাবি করেন।
বিষয়টি স্থানীয়রা জানতে পেরে তারা দুই পুলিশ সদস্যর কাছে তাদের পরিচয় জানতে চায়। কিন্তু তাদের কাছে আইডি কার্ড না থাকায় তারা তাৎক্ষনিক নিজেদের পুলিশ পরিচয় নিশ্চিত করতে ব্যার্থ হোন।
দুর্গাপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পরপরই ওই দুই কনস্টেবলকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়া হয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হলে অভিযুক্ত দুই পুলিশ কনস্টেবলকে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত (ক্লোজড) করা হয়।
জেলা পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হবে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশের শৃঙ্খলাবিরোধী কোনো অনৈতিক আচরণ বরদাশত করা হবে না। পুলিশ সদস্যদের যেকোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান পুলিশের ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সাম্প্রতিক সময়ে থানা এলাকায় কিছু অসাধু পুলিশ সদস্য সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছে। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
তবে অভিযুক্তদের মধ্যে পুলিশ কনস্টেবল ইমরান আলী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাদের মিথ্যা অভিযোগ সাজিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। আমি ওই ছেলেকে (সজীব) চিনি না। সে আমাকে ডেকে নিয়ে গেছে। আমরা তাকে গ্রেপ্তার করতে যাইনি বা করিনি।
পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড হওয়ার বিষয়ে তিনি দাবি করেন, ঘটনাস্থল থেকেই কে বা কারা জাতীয় জরুরি সেবা ৩৩৩ নম্বরে ফোন দেয়। এরপরই আমাদেরকে পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড করা হয়েছে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

রাজধানীর বাড্ডা ও শাহজাদপুরে ২ বাসে আগুন

দুর্গাপুরে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে দুই পুলিশ কনস্টেবলকে গণধোলাই, পুলিশ লাইনে ক্লোজড 

Update Time : ১০:৫৯:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫
রাজশাহীর দুর্গাপুর থানার দুই পুলিশ কনস্টেবল সাদা পোশাকে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে জনতার আটক ও গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ওই দুই পুলিশ কনস্টেবলকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়। ঘটনার পর অভিযুক্ত দুই পুলিশ কনস্টেবলকে পুলিশ লাইন্সে (ক্লোজড) সংযুক্ত করা হয়েছে।
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা হলেন, দুর্গাপুর থানার জরুরী সেবা ট্রিপল নাইনের ড্রাইভার ইমরান আলী ও থানার কম্পিউটার অপারেটর মাজেদ হোসেন। মঙ্গলবার বিকেলে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের আবু বাক্কারের ছেলে সজীব আহমেদ (২৫) অনলাইনের ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত। এমন অভিযোগ নিয়ে অভিযুক্ত দুই পুলিশ কনস্টেবল সজীবের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করে। অন্যথায় সজীবকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়। বিষয়টি স্থানীয়দের কাছে সন্দেহজনক হলে অভিযুক্ত দুই পুলিশ কনস্টেবলের পরিচয় জানতে চান। একপর্যায়ে স্থানীয়দের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়ান অভিযুক্ত দুই পুলিশ কনস্টেবল। এ সময় স্থানীয়রা ওই দুই পুলিশ কনস্টেবলকে গণধোলাই দিয়ে আটকে রেখে থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের একটি টিম অভিযুক্ত দুই পুলিশ কনস্টেবলকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়।
অপর একটি সূত্র জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে কনস্টেবল ইমরান ও মাজেদ নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে শ্যামপুর এলাকায় গিয়ে সজীবকে ফোন করে ডেকে নিয়ে নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে গ্রেফতার করবে মর্মে ভয়-ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের অর্থ দাবি করেন।
বিষয়টি স্থানীয়রা জানতে পেরে তারা দুই পুলিশ সদস্যর কাছে তাদের পরিচয় জানতে চায়। কিন্তু তাদের কাছে আইডি কার্ড না থাকায় তারা তাৎক্ষনিক নিজেদের পুলিশ পরিচয় নিশ্চিত করতে ব্যার্থ হোন।
দুর্গাপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পরপরই ওই দুই কনস্টেবলকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়া হয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হলে অভিযুক্ত দুই পুলিশ কনস্টেবলকে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত (ক্লোজড) করা হয়।
জেলা পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হবে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশের শৃঙ্খলাবিরোধী কোনো অনৈতিক আচরণ বরদাশত করা হবে না। পুলিশ সদস্যদের যেকোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান পুলিশের ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সাম্প্রতিক সময়ে থানা এলাকায় কিছু অসাধু পুলিশ সদস্য সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছে। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
তবে অভিযুক্তদের মধ্যে পুলিশ কনস্টেবল ইমরান আলী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাদের মিথ্যা অভিযোগ সাজিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। আমি ওই ছেলেকে (সজীব) চিনি না। সে আমাকে ডেকে নিয়ে গেছে। আমরা তাকে গ্রেপ্তার করতে যাইনি বা করিনি।
পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড হওয়ার বিষয়ে তিনি দাবি করেন, ঘটনাস্থল থেকেই কে বা কারা জাতীয় জরুরি সেবা ৩৩৩ নম্বরে ফোন দেয়। এরপরই আমাদেরকে পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড করা হয়েছে।