জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুব সংগঠন জাতীয় যুবশক্তির নোয়াখালী জেলা আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পদত্যাগের হিড়িক পড়েছে। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাতে কমিটি ঘোষণার পর একে একে ৩১ জন নেতা পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে।
বুধবার (১২ নভেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সংগঠনের সদ্যঘোষিত সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াছিন আরাফাত—যিনি প্রথম পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
সংগঠনটির জেলা সূত্র জানায়, ৪১ সদস্যর এ কমিটিতে আহ্বায়ক নুর আলম ও সদস্যসচিব শিহাব উদ্দিন। এ কমিটি ঘোষণার পর প্রথমেই ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে পদত্যাগের ঘোষণা দেন সংগঠনের জেলা কমিটিচর জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াছিন আরাফাত। এরপর যুগ্ম সদস্যসচিব জহির আহমেদ ছাড়া এ পদে থাকা অন্য সব যুগ্ম সদস্যসচিব, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিবসহ বিভিন্ন পদধারী নেতারা একে একে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
পদত্যাগকারীদের অভিযোগ, তৃণমূলের নিবেদিতপ্রাণ নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন না করে কেন্দ্রীয় লবিংয়ের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে প্রকৃত ত্যাগী ও মাঠের নেতারা বঞ্চিত হয়েছেন।
একাধিক পদত্যাগকারী বলেন, ‘আমরা সংগঠনের প্রতি অনুগত, কিন্তু অন্যায় ও পক্ষপাতদুষ্ট কমিটিতে থেকে আমাদের আদর্শের সঙ্গে আপস করা সম্ভব নয়।’
তাদের দাবি, পদত্যাগকারীদের মধ্যে শহীদ পরিবারের সদস্য এবং আহত জুলাই যোদ্ধারাও রয়েছেন। ফলে কমিটি ঘোষণার পর থেকে সংগঠনের অভ্যন্তরে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে।
পদত্যাগ করা সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াছিন আরাফাত বলেন, ‘আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে উঠে এসেছি, কিন্তু এখন আমরাই বৈষম্যের শিকার। কেন্দ্রীয় নেতারা পছন্দের লোকজন দিয়ে কমিটি করেছেন। তাই পদত্যাগের হিড়িক পড়েছে। এই কমিটি এখন আর টিকে থাকার মতো নয়।’
তিনি আরও জানান, ৪১ সদস্যের মধ্যে ২৩ জন ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন। তাদের মধ্যে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব, মুখ্য সংগঠক, শহীদ পরিবারের সদস্য ও জুলাই আহত যোদ্ধারা আছেন। আমরা সংবাদ সম্মেলন করে এই কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করব।
কেন্দ্রীয় যুবশক্তির একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘কমিটি গঠনের আগে সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সে অনুযায়ী চূড়ান্ত তালিকা হয়নি। তৃণমূলের ক্ষোভ আমরা জানি। বিষয়টি কেন্দ্রীয়ভাবে পর্যালোচনা করা হবে।’