
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাবনা-৩ আসনে বিএনপি থেকে প্রাথমিক মনোনয়নপ্রাপ্ত কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনের প্রার্থিতা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনের ডাক দিলেন চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাসাদুল ইসলাম হীরা ও পাবনা-৩ এমপি পদপ্রার্থী সাবেক সংসদ কে. এম. আনোয়ার ইসলাম।
বৃহস্পতিবার বিকালে স্থানীয় প্রার্থী মনোনয়ন দাবিতে সাবেক সংসদ সদস্য কে. এম. আনোয়ারুল ইসলামের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন বিএনপি থেকে দুই মনোনয়ন প্রত্যাশী আন্দোলনের ডাক দিয়েছে।
আগামী শনিবার বিকালে পৌর শহরের বালুরচর মাঠে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে এক সমাবেশ ডাকেন বিএনপি থেকে
মনোনয়ন প্রত্যাশী এই দুই নেতা।
জানা গেছে, চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর এই তিন উপজেলা নিয়ে গঠিত পাবনা-৩ আসনের মধ্যে সবচেয়ে ভোটার সংখ্যা বেশি চাটমোহর উপজেলায়। ভোটার সংখ্যা বেশি হলেও বিগত দিনগুলোতে এ উপজেলা থেকে কোনো এমপি পাননি উপজেলাবাসী। এতে উন্নয়ন বঞ্চিত হয়ে আসছিল এই উপজেলার সাধারণ মানুষ। তবে ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর চাটমোহরবাসী স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলেন বিএনপি থেকে আগামী নির্বাচনে এই উপজেলাবাসী প্রার্থী পাবেন।
কিন্তু পাবনা-৩ আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সুজানগরের সন্তান কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন। এরপর থেকেই বিএনপি নেতাকর্মী ও চাটমোহরের সাধারণ মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোভ দেখা দেয়। শুধু তাই নয়, এতে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দেয়। বিশেষ করে দুই হেভিওয়েট মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক এমপি কেএম আনোয়ারুল ইসলাম ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাসাদুল ইসলাম হীরার অনুসারীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
অনেকেই দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে বিএনপি থেকে প্রাথমিক মনোনয়নপ্রাপ্ত হাসান জাফির তুহিনের সঙ্গে কাজ করলেও মন থেকে অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। ক্ষোভ দেখা দেয় চাটমোহর উপজেলার সাধারণ মানুষের মধ্যেও।
অন্যদিকে পাবনা-৩ আসনে ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না করে ‘বহিরাগত’ প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়ে ঘাড়ে চাপানোর বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে এবার মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে আন্দোলনের ডাক দিলেন দুই হেভিওয়েট মনোনয়ন প্রত্যাশী। প্রার্থী বাতিল না করলে ভোটের সমীকরণে এ আসন হারানোর আশঙ্কা করছেন এলাকার অধিকাংশ বিএনপি নেতা।
জানতে চাইলে চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাসাদুল ইসলাম হীরা বলেন, ’’কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন একজন কেন্দ্রীয় নেতা ও সুজানগরের বাসিন্দা। পাবনা-৩ এলাকার মানুষ তাকে চেনে না। দলের (বিএনপি) পক্ষ থেকে একজন বহিরাগত প্রার্থীকে এ আসনে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকেই এ আসনের জামায়াতের নেতাকর্মীরা মিলাদ পড়াচ্ছেন, মিষ্টি বিতরণ করছেন। এতেই বোঝা যায়, জামায়াত কতটা খুশি হয়েছে এ ঘোষণায়।তিনি আরও বলেন, যে মানুষকে কেউ চেনে না, যার গ্রহণযোগ্যতা নেই এমন মানুষকে পাবনা-৩ এর মানুষ মেনে নেবে না। দল কী চায়? দলের কাছে একজন নেতা, নাকি একটি আসন জেতা বড়? তাই মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে আন্দোলনের ডাক দিয়েছি। আশা করি দলের হাইকমান্ড এই এলাকার মানুষের মনের ভাষা বুঝবে এবং সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবে।’’
সাবেক সংসদ সদস্য কে. এম. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “পাবনা-৩ আসনের মানুষের অনুভূতি ও দাবি উপেক্ষা করা যাবে না। আমরা দীর্ঘদিন ধরে এ অঞ্চলে দলকে সংগঠিত করেছি। দলীয় সিদ্ধান্তে স্থানীয় জনমতের প্রতিফলন থাকতে হবে।”
Reporter Name 



















