
চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি থানার ভূয়া জিনের বাদশা সাজিয়ে প্রতারণা ও অর্থ আত্মত্মসাৎ মামলার পলাতক আসামীকে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার মানিকার হাট বাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার কৃত প্রতারক হচ্ছেন জিনের বাদশা জাহাঙ্গীর মাঝি (৫৭)। তিনি লালমোন উপজেলার কালমা ইউনিয়নের চর কালিদাশ এলাকার মাঝি বাড়ীর মৃত আজগর মাঝির ছেলে। রবিবার রাতেই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভোলা র্যাব-৮ ক্যাম্প অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট মো: রিফাত।
জানা গেছে, লালমোহন উপজেলার কালমা ইউনিয়নের চর কালিদাশ এলাকার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর মাঝি এবং অজ্ঞাতনামা কতিপয় প্রতারক জিনের বাদশাহ সেজে প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে ভূয়া নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে তাদের ব্যক্তিগত অনলাইনে বিভিন্ন পারিবারিক সমস্যা সমাধানসহ বশীকরণ করার বিজ্ঞাপন প্রদান করে দেশের বিভিন্ন স্থানের সাধারণ মানুষের সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ প্রতারণা করে আসছে। তাদের এ বিজ্ঞাপন দেখে চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি থানার দক্ষিণ সাদেক নগর এলাকার সৈয়দ মুহুরী বাড়ীর মৃত আব্দুস ছবুরের ছেলে মোঃ দিদারুল আলম (৪০) বিজ্ঞাপন দেখে তাদের দেয়া মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করে ব্যক্তিগত সমস্যার কথা বললে উল্লেখিত প্রতারকরা বশিকরণের মাধ্যমে তাহার সমস্যার সমাধান করার জন্য তাকে আস্বস্ত করে। চলতি বছরের বিগত ৭ ফেব্রুয়ারী থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিকাশ নম্বরে সর্বমোট ৫৩ লাখ ৫ হাজার টাকা প্রতারণা করতঃ হাতিয়ে নেয়।
পরবর্তীতে মোঃ দিদারুল আলম (৪০) উল্লেখিত প্রতারকদের প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে নিজে বাদী হয়ে চট্টগ্রামের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশক্রমে চট্টগ্রাম ফটিকছড়ি থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ভোলা র্যাব ক্যাম্প-৮ এর একটি চৌকস দল আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি এবং স্থানীয় সোর্সের তথ্যের ভিত্তিতে রবিবার (২৬ অক্টোবর) ৬টার দিকে বোরহানউদ্দিন উপজেলার মানিকার হাট বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক আসামী জাহাঙ্গীর মাঝি (৫৭) কে গ্রেফতার করে। তিনি লালমোন উপজেলার কালমা ইউনিয়নের চর কালিদাশ এলাকার মাঝি বাড়ীর মৃত আজগর মাঝির ছেলে।
এদিকে চলতি বছরের গত ১ সেপ্টেম্বর তারিখ উল্লেখিত মামলার ঘটনায় জড়িত আসামী প্রতারক মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন মীর (৪৭) কে র্যাব-৮ ভোলা ক্যাম্প তাকে আটক করে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রতারক জাহাঙ্গীর মাঝি (৫৭) কে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া অপরাপর পলাতক সহযোগীদের গ্রেফতারে র্যাবের অভিযান অব্যহত রয়েছে। দেশ ও জনগণের জানমাল রক্ষার্থে এবং সন্ত্রাসীমূলক কার্যক্রম প্রতিরোধে র্যাবের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে এমনটাই জানিয়েছে ভোলা র্যাব-৮ এর ক্যাম্প অধিনায়ক। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাস বিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর ঘটনা, বিশেষ করে হত্যা, ধর্ষণ, গণ-ধর্ষণ, ডাকাতি, প্রতারণা এবং অপহরণসহ বিভিন্ন আলোচিত ঘটনার সহিত জড়িত আসামীদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করার ক্ষেত্রে র্যাব সর্বদাই সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। অপরাধ দমন এবং নিয়ন্ত্রণ পূর্বক দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে র্যাব। এছাড়া মহাপরিচালক র্যাব ফোর্সেস মহোদয়ের সুস্পষ্ট নির্দেশনা মোতাবেক র্যাব ব্যাটালিয়ন সমূহ আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে সর্বাত্মক অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
ভোলা প্রতিবেদক 



















