ঢাকা ০১:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo দুর্গাপুরে ‎রাজশাহী-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন  Logo শীতের গন্ধ, তাপমাত্রা কমছে প্রতিদিন দুই ডিগ্রি ঈশ্বরদীতে দোকানে উঠছে শীতের সোয়েটার-জ্যাকেট, কম্বল Logo পদ্মার চরজুড়ে চলছে ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’ Logo নীলফামারীতে চার দফা দাবী বাস্তবায়নে বিসিএস প্রভাষক পরিষদের মানবন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন Logo বিএনপি অফিস ভাংচুর মামলায়  ছাত্রলীগ নেতা আটক   Logo দেশের চলমান সব সংকট নাটকের অংশ, মানুষ ভোট দিতে চায়: মির্জা ফখরুল Logo ধেয়ে আসছে মৌসুমের প্রথম কুয়াশা বেল্ট Logo ১৩ নভেম্বর রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইসির সংলাপ শুরু Logo যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘতম শাটডাউন অবসানের পথ খুঁজছেন সিনেটররা Logo যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউনে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি ফ্লাইট বাতিল

সংবাদপত্র ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলের জন্য সরকারি সুবিধা বাড়ানো হবে : তথ্য উপদেষ্টা

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, সংবাদপত্র ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলের জন্য সরকারি সুবিধা বাড়ানো হবে। একই সঙ্গে মিডিয়ার মালিকপক্ষকে সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে।

আজ রোববার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

সাংবাদিকদের বেতন বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, সরকার সাংবাদিকদের প্রবেশ পদে একটি ন্যূনতম বেতন নির্ধারণ করতে চায়। যেসব মিডিয়া সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন দেবে না, তারা কোনো ধরনের সরকারি সুবিধা পাবে না।

মাহফুজ আলম বলেন, সরকার বেসরকারি টেলিভিশন সম্প্রচার ব্যবস্থাকে ডিজিটাল করবে। সম্প্রচার ব্যবস্থা ডিজিটাল হলে কোন টেলিভিশন চ্যানেল কতজন দর্শক দেখছেন, সেটাও জানা যাবে। যেসব টেলিভিশন চ্যানেলের পারফরম্যান্স ভালো হবে, তারা ভালো বিজ্ঞাপন পাবে। এতে ভালো পারফরম্যান্স দেখানো টেলিভিশন চ্যানেলের আয় বাড়বে।

নতুন টেলিভিশন চ্যানেল অনুমোদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার বিদ্যমান নীতিমালা মেনে নতুন টেলিভিশন চ্যানেল অনুমোদন দিয়েছে। সরকার মিডিয়ার মধ্যে ইতিবাচক প্রতিযোগিতা দেখতে চায়। এজন্য নতুন মিডিয়া অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে।

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি তুলে ধরে তিনি বলেন, কমিশন-প্রস্তাবিত আশু করণীয় ২৩টি সুপারিশ পর্যালোচনা করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ১৩টি সুপারিশ বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। নীতিমালা ও অধ্যাদেশ প্রণয়ন করে এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে। কিছু বিষয় উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে।

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা জানান, সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া ইতোমধ্যে ভেটিংয়ে পাঠানো হয়েছে। ভেটিং শেষে এই অধ্যাদেশের খসড়া দ্রুত উপদেষ্টা পরিষদে উপস্থাপন করা হবে। পাশাপাশি গণমাধ্যম কর্মী আইন প্রণয়নের বিষয়টিও পর্যালোচনা করা হচ্ছে। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের জন্য নীতিমালা প্রণয়নের বিষয়টিও সরকারের বিবেচনায় রয়েছে।

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, অনলাইন মিডিয়া ও ওটিটি প্ল্যাটফর্মের পরিধি অনেক বড়। পুরো অনলাইন মিডিয়াকে একটি কাঠামোয় আনতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং আইসিটি বিভাগ কাজ করছে। যেসব অনলাইন মিডিয়ায় কোনো কনটেন্ট প্রচার করে অর্থ আয় হয়, সেসব অনলাইন মিডিয়া রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আসা প্রয়োজন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

পত্রিকার প্রচারসংখ্যার বর্তমান অবস্থা বর্ণনা করে তিনি বলেন, পত্রিকার প্রচারসংখ্যায় অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। গত তিন মাসে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর (ডিএফপি) দেশের অধিকাংশ পত্রিকার প্রচারসংখ্যা মনিটর করেছে। অনেক পত্রিকা প্রতিদিন ৫০০ বা ১০০০ কপি ছাপায়। উপদেষ্টা বলেন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে পত্রিকার প্রচারসংখ্যা কমানো হবে এবং বিজ্ঞাপন হার দ্বিগুণ করা হবে। তিনি সঠিক প্রচারসংখ্যা দেখানোর জন্য পত্রিকার মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। স্থায়ী গণমাধ্যম কমিশন প্রতিষ্ঠা-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্থায়ী গণমাধ্যম কমিশন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার কর্মপরিধি নতুন করে নির্ধারণ করতে হবে। এ কারণে স্বল্প সময়ে স্থায়ী গণমাধ্যম কমিশন গঠন করা সম্ভব নয়। গুজব প্রতিরোধ প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, সকল মিডিয়ার একটি করে ফ্যাক্ট-চেকিং টিম থাকা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম বলেন, সরকার সাংবাদিকতায় নৈতিকতা দেখতে চায়। এজন্য সাংবাদিকদের বেতন বাড়ানো জরুরি। তিনি আরও বলেন, দেশে ব্যাঙের ছাতার মতো অসংখ্য ওয়েবসাইট চালু হয়েছে, যেখানে কপিরাইট লঙ্ঘন করে অন্য মিডিয়ার সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। তিনি সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে কপিরাইট মেনে চলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল। অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

দুর্গাপুরে ‎রাজশাহী-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন 

সংবাদপত্র ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলের জন্য সরকারি সুবিধা বাড়ানো হবে : তথ্য উপদেষ্টা

Update Time : ০৯:৪৩:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, সংবাদপত্র ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলের জন্য সরকারি সুবিধা বাড়ানো হবে। একই সঙ্গে মিডিয়ার মালিকপক্ষকে সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে।

আজ রোববার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

সাংবাদিকদের বেতন বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, সরকার সাংবাদিকদের প্রবেশ পদে একটি ন্যূনতম বেতন নির্ধারণ করতে চায়। যেসব মিডিয়া সাংবাদিকদের ন্যূনতম বেতন দেবে না, তারা কোনো ধরনের সরকারি সুবিধা পাবে না।

মাহফুজ আলম বলেন, সরকার বেসরকারি টেলিভিশন সম্প্রচার ব্যবস্থাকে ডিজিটাল করবে। সম্প্রচার ব্যবস্থা ডিজিটাল হলে কোন টেলিভিশন চ্যানেল কতজন দর্শক দেখছেন, সেটাও জানা যাবে। যেসব টেলিভিশন চ্যানেলের পারফরম্যান্স ভালো হবে, তারা ভালো বিজ্ঞাপন পাবে। এতে ভালো পারফরম্যান্স দেখানো টেলিভিশন চ্যানেলের আয় বাড়বে।

নতুন টেলিভিশন চ্যানেল অনুমোদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার বিদ্যমান নীতিমালা মেনে নতুন টেলিভিশন চ্যানেল অনুমোদন দিয়েছে। সরকার মিডিয়ার মধ্যে ইতিবাচক প্রতিযোগিতা দেখতে চায়। এজন্য নতুন মিডিয়া অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে।

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি তুলে ধরে তিনি বলেন, কমিশন-প্রস্তাবিত আশু করণীয় ২৩টি সুপারিশ পর্যালোচনা করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ১৩টি সুপারিশ বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। নীতিমালা ও অধ্যাদেশ প্রণয়ন করে এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে। কিছু বিষয় উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে।

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা জানান, সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া ইতোমধ্যে ভেটিংয়ে পাঠানো হয়েছে। ভেটিং শেষে এই অধ্যাদেশের খসড়া দ্রুত উপদেষ্টা পরিষদে উপস্থাপন করা হবে। পাশাপাশি গণমাধ্যম কর্মী আইন প্রণয়নের বিষয়টিও পর্যালোচনা করা হচ্ছে। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের জন্য নীতিমালা প্রণয়নের বিষয়টিও সরকারের বিবেচনায় রয়েছে।

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, অনলাইন মিডিয়া ও ওটিটি প্ল্যাটফর্মের পরিধি অনেক বড়। পুরো অনলাইন মিডিয়াকে একটি কাঠামোয় আনতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং আইসিটি বিভাগ কাজ করছে। যেসব অনলাইন মিডিয়ায় কোনো কনটেন্ট প্রচার করে অর্থ আয় হয়, সেসব অনলাইন মিডিয়া রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আসা প্রয়োজন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

পত্রিকার প্রচারসংখ্যার বর্তমান অবস্থা বর্ণনা করে তিনি বলেন, পত্রিকার প্রচারসংখ্যায় অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। গত তিন মাসে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর (ডিএফপি) দেশের অধিকাংশ পত্রিকার প্রচারসংখ্যা মনিটর করেছে। অনেক পত্রিকা প্রতিদিন ৫০০ বা ১০০০ কপি ছাপায়। উপদেষ্টা বলেন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে পত্রিকার প্রচারসংখ্যা কমানো হবে এবং বিজ্ঞাপন হার দ্বিগুণ করা হবে। তিনি সঠিক প্রচারসংখ্যা দেখানোর জন্য পত্রিকার মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। স্থায়ী গণমাধ্যম কমিশন প্রতিষ্ঠা-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্থায়ী গণমাধ্যম কমিশন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার কর্মপরিধি নতুন করে নির্ধারণ করতে হবে। এ কারণে স্বল্প সময়ে স্থায়ী গণমাধ্যম কমিশন গঠন করা সম্ভব নয়। গুজব প্রতিরোধ প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, সকল মিডিয়ার একটি করে ফ্যাক্ট-চেকিং টিম থাকা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম বলেন, সরকার সাংবাদিকতায় নৈতিকতা দেখতে চায়। এজন্য সাংবাদিকদের বেতন বাড়ানো জরুরি। তিনি আরও বলেন, দেশে ব্যাঙের ছাতার মতো অসংখ্য ওয়েবসাইট চালু হয়েছে, যেখানে কপিরাইট লঙ্ঘন করে অন্য মিডিয়ার সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। তিনি সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে কপিরাইট মেনে চলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল। অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।