
কুমিল্লার দেবিদ্বারে সংবাদ সংগ্রহে যাওয়া আট সাংবাদিক সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার এলাহাবাদ ইউনিয়নের উটখাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হামলায় সাংবাদিকসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। হামলাকারীরা সাংবাদিকদের মোবাইল ফোন, ক্যামেরা ও নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, উটখাড়া মাজারের খাদেম মৃত আব্দুল খালেক ফকিরের স্ত্রী কমলা খাতুনের পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী শাহজাহানের পরিবারের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে একাধিকবার গ্রাম্য সালিস হলেও সমাধান হয়নি। বিরোধের জেরে উভয়পক্ষের মধ্যে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে, যা তদন্তাধীন রয়েছে।
সম্প্রতি কমলা খাতুনের বাড়িতে যাওয়ার একমাত্র পথটি দেয়াল তুলে বন্ধ করে দেয় শাহজাহানপক্ষ। এর প্রতিবাদে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী সোহরাব হোসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। বিষয়টি তদন্ত করে স্থানীয় ইউপি সদস্য লিটন মিয়াকে সালিস ডাকতে দায়িত্ব দেন দেবিদ্বার থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সালিস বসানোর সময় সাংবাদিকরা নিকটস্থ একটি চা দোকানে অবস্থান করছিলেন। এসময় শাহজাহানের নেতৃত্বে ২৫-৩০ জন অতর্কিতভাবে তাদের উপর হামলা চালায়।
হামলায় আহত সাংবাদিকরা হলেন পারভেজ সরকার (দৈনিক দিনকাল), নেছার উদ্দিন (এশিয়ান টিভি), সোহরাব হোসেন (দৈনিক আজকের কুমিল্লা), মো. আনোয়ার হোসেন (দৈনিক ডাক প্রতিদিন), আবু বক্কর ছিদ্দিক (দৈনিক আমার দেশ), জহিরুল ইসলাম মারুফ (দৈনিক কালবেলা), মো. শাহজালাল (দৈনিক ভোরের দর্পণ) এবং সাইফুল ইসলাম সজিব (এটিএন-এমসিএল নিউজ)।
এ ছাড়া হামলাকারীরা সাংবাদিক সোহরাব হোসেনের পরিবারের উপরও চড়াও হয়। তার বাবা জাকির হোসেনের মাথা ফাটিয়ে দেয়, মা নার্গিস বেগম ও স্ত্রী বৃষ্টি আক্তারকে পিটিয়ে আহত করে এবং ছোট বোন রুমি আক্তারের হাত ভেঙে দেয়। গুরুতর আহতদের দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
দৈনিক আমার দেশের প্রতিনিধি আবু বক্কর ছিদ্দিক বলেন, “আমরা সোহরাব হোসেনের পরিবারের বাড়ির রাস্তা বন্ধের ঘটনাটি কভার করতে গিয়েছিলাম। সালিস থেকে কিছুটা দূরে চা দোকানে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলার সময় হঠাৎ ২৫-৩০ জন আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য লিটন মিয়া বলেন, রাস্তা বন্ধের ঘটনা মীমাংসার জন্য সালিস ডাকলেও তার আগেই চা দোকানে সংঘর্ষ শুরু হয়। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে সাংবাদিকদের রক্ষার চেষ্টা করেছি।
এ বিষয়ে দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. মাঈনুদ্দিন জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং আহত সাংবাদিকদের খোঁজ নিয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Reporter Name 



















