ঢাকা ০৬:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo নাটোর-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ Logo কারও দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়ন করা এই সরকারের কাজ নয়: তারেক রহমান Logo আগামীকাল থেকে সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা Logo বিচারিক প্রক্রিয়ায় নিষিদ্ধ হবে আ,লীগ ও  জাতীয় পার্টি–নুরুল হক নুর Logo শীতের আগমনে কুয়াশার চাদরে ঢাকা  সৈয়দপুর শহর Logo পাবনা ৪ আসনে বিএনপি’র হাবিবকে সমর্থন করেও বিপক্ষে গেলেন মনোনয়ন প্রত্যাশী জাকারিয়া পিন্টু Logo গণভোট নিয়ে দলগুলো ঐকমত্যে না এলে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার: প্রেস সচিব Logo ড. ইউনূসকে শব্দ চয়নে সতর্ক থাকার আহ্বান ভারতের Logo সংবিধানে গণভোট নেই, কথায় কথায় রাস্তায় নামবেন না: আমীর খসরু Logo সাপের কামড়ের ওষুধ সব উপজেলায় পাঠানোর নির্দেশ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাংবাদিক ইয়াসিন মাহমুদের বিরুদ্ধে মামলা সাংবাদিক সমাজের নিন্দা ও মামলার প্রত্যাহারের দাবি

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:৩১:৫৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ২৪ Time View

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলার তালিকায় যুক্ত হলো আরেকটি নাম। গত ৭ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলার পূর্ব মেড্ডা এলাকায় বাখরাবাদ গ্যাস কোম্পানির গ্যাস লিকেজ সনাক্তের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ নিয়ে সংবাদ সংগ্রহে গেলে সাপ্তাহিক অগ্রযাত্রা ও সংবাদ সারাবেলা প্রতিনিধি ইয়াসিন মাহমুদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা ও সাংবাদিক সমাজ।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, গ্যাস লিকেজ সনাক্তের নামে দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি চলছে। বিষয়টি অনুসন্ধান করতে সাংবাদিক ইয়াসিন মাহমুদ ঘটনাস্থলে গেলে উল্টো তার বিরুদ্ধেই মামলা করা হয়। স্থানীয়দের মতে, এই মামলার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে অনিয়ম ও দুর্নীতি ধামাচাপা দেওয়া।

ঘটনার সূত্রপাত যে বাড়ি থেকে, সেই পরিবারের কারও নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওই পরিবার রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের নাম এড়িয়ে সাংবাদিককে টার্গেট করা হয়েছে।

পাইকপাড়া এলাকার বাসিন্দা হেলাল বলেন, “ঘটনার দিন সাংবাদিক ইয়াসিন ভাইকে আমি সরাসরি বলতে শুনেছি—‘সরকারি লোকজনের সঙ্গে ঝামেলায় যাবেন না।’ অথচ আজ শুনছি তার বিরুদ্ধেই মামলা হয়েছে। এতে মনে হচ্ছে মানুষ অন্যায় দেখলেও আর সামনে আসতে চাইবে না।”

একইভাবে আরও অনেকে জানান, সত্য প্রকাশে বাধা দিতেই এই হয়রানিমূলক মামলা করা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পরিচিত মুখ কবি ও সাংবাদিক জয়দুল হক বলেন, “ইয়াসিন মাহমুদ একজন পেশাদার সাংবাদিক। সাংবাদিকরা কাজ করে মূলত অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে। কিন্তু যারা অন্যায় করে তারাই যদি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, তাহলে দেশ চলবে কিভাবে? দুর্নীতি রোধে সাংবাদিকদের ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না।”

স্থানীয় বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন এই মামলার নিন্দা জানিয়েছে। তারা বলেন, “সাংবাদিক ইয়াসিন মাহমুদের বিরুদ্ধে মামলা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও গণমাধ্যমকে ভয় দেখানোর একটি কৌশল। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাই।”

সচেতন মহল মনে করছে, সাংবাদিকদের হয়রানিমূলক মামলায় জড়িয়ে দেওয়া গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পরিপন্থী। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, “যেখানে প্রকৃত অপরাধীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে, সেখানে সাংবাদিকদের কেনো টার্গেট করা হচ্ছে?”

সাংবাদিক সমাজ বলছে, ইয়াসিন মাহমুদের বিরুদ্ধে করা মামলা শুধু একজন সাংবাদিক নয়, পুরো সংবাদপেশার উপর চাপ সৃষ্টি করছে। তারা জোর দাবি জানিয়েছেন, অবিলম্বে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার এবং প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

এ বিশেষ সাংবাদিক ইয়াসিনের সাথে কথা হলে তিনি আরও বলেন, “আমি একজন পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে দায়িত্বশীলভাবে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম কেবলমাত্র তথ্য সংগ্রহ করার জন্য। সেখানে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটিও আমি সংবাদ মাধ্যমের স্বার্থে ভিডিও করে রেখেছি এবং তা ইতোমধ্যেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ওই ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা না থাকা সত্ত্বেও আমাকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। প্রশাসন তদন্ত না করেই আমাকে মামলার আসামি করেছে, যা শুধু একজন সাংবাদিক নয়, স্বাধীন গণমাধ্যম ও বাকস্বাধীনতার ওপরও হুমকি সৃষ্টি করছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমি চাই এই মামলার যথাযথ তদন্ত হোক এবং প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হোক। আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হয়রানিমূলক মামলায় জড়ানো হয়েছে, যা মুক্ত সাংবাদিকতার পথে অন্তরায়। আমি প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাই যাতে তারা সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে বাস্তব ঘটনা জনগণের সামনে তুলে ধরে।”

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

নাটোর-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে সড়ক অবরোধ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাংবাদিক ইয়াসিন মাহমুদের বিরুদ্ধে মামলা সাংবাদিক সমাজের নিন্দা ও মামলার প্রত্যাহারের দাবি

Update Time : ০১:৩১:৫৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলার তালিকায় যুক্ত হলো আরেকটি নাম। গত ৭ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলার পূর্ব মেড্ডা এলাকায় বাখরাবাদ গ্যাস কোম্পানির গ্যাস লিকেজ সনাক্তের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ নিয়ে সংবাদ সংগ্রহে গেলে সাপ্তাহিক অগ্রযাত্রা ও সংবাদ সারাবেলা প্রতিনিধি ইয়াসিন মাহমুদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা ও সাংবাদিক সমাজ।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, গ্যাস লিকেজ সনাক্তের নামে দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি চলছে। বিষয়টি অনুসন্ধান করতে সাংবাদিক ইয়াসিন মাহমুদ ঘটনাস্থলে গেলে উল্টো তার বিরুদ্ধেই মামলা করা হয়। স্থানীয়দের মতে, এই মামলার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে অনিয়ম ও দুর্নীতি ধামাচাপা দেওয়া।

ঘটনার সূত্রপাত যে বাড়ি থেকে, সেই পরিবারের কারও নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওই পরিবার রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের নাম এড়িয়ে সাংবাদিককে টার্গেট করা হয়েছে।

পাইকপাড়া এলাকার বাসিন্দা হেলাল বলেন, “ঘটনার দিন সাংবাদিক ইয়াসিন ভাইকে আমি সরাসরি বলতে শুনেছি—‘সরকারি লোকজনের সঙ্গে ঝামেলায় যাবেন না।’ অথচ আজ শুনছি তার বিরুদ্ধেই মামলা হয়েছে। এতে মনে হচ্ছে মানুষ অন্যায় দেখলেও আর সামনে আসতে চাইবে না।”

একইভাবে আরও অনেকে জানান, সত্য প্রকাশে বাধা দিতেই এই হয়রানিমূলক মামলা করা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পরিচিত মুখ কবি ও সাংবাদিক জয়দুল হক বলেন, “ইয়াসিন মাহমুদ একজন পেশাদার সাংবাদিক। সাংবাদিকরা কাজ করে মূলত অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে। কিন্তু যারা অন্যায় করে তারাই যদি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, তাহলে দেশ চলবে কিভাবে? দুর্নীতি রোধে সাংবাদিকদের ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না।”

স্থানীয় বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন এই মামলার নিন্দা জানিয়েছে। তারা বলেন, “সাংবাদিক ইয়াসিন মাহমুদের বিরুদ্ধে মামলা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও গণমাধ্যমকে ভয় দেখানোর একটি কৌশল। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাই।”

সচেতন মহল মনে করছে, সাংবাদিকদের হয়রানিমূলক মামলায় জড়িয়ে দেওয়া গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পরিপন্থী। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, “যেখানে প্রকৃত অপরাধীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে, সেখানে সাংবাদিকদের কেনো টার্গেট করা হচ্ছে?”

সাংবাদিক সমাজ বলছে, ইয়াসিন মাহমুদের বিরুদ্ধে করা মামলা শুধু একজন সাংবাদিক নয়, পুরো সংবাদপেশার উপর চাপ সৃষ্টি করছে। তারা জোর দাবি জানিয়েছেন, অবিলম্বে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার এবং প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

এ বিশেষ সাংবাদিক ইয়াসিনের সাথে কথা হলে তিনি আরও বলেন, “আমি একজন পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে দায়িত্বশীলভাবে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম কেবলমাত্র তথ্য সংগ্রহ করার জন্য। সেখানে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটিও আমি সংবাদ মাধ্যমের স্বার্থে ভিডিও করে রেখেছি এবং তা ইতোমধ্যেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ওই ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা না থাকা সত্ত্বেও আমাকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। প্রশাসন তদন্ত না করেই আমাকে মামলার আসামি করেছে, যা শুধু একজন সাংবাদিক নয়, স্বাধীন গণমাধ্যম ও বাকস্বাধীনতার ওপরও হুমকি সৃষ্টি করছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমি চাই এই মামলার যথাযথ তদন্ত হোক এবং প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হোক। আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হয়রানিমূলক মামলায় জড়ানো হয়েছে, যা মুক্ত সাংবাদিকতার পথে অন্তরায়। আমি প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাই যাতে তারা সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে বাস্তব ঘটনা জনগণের সামনে তুলে ধরে।”