
জনবল সংকটের পরওনরোদ, বৃদ্ধি আর শব্দ দুষনের শিকার হয়েও নিয়মিত দায়িত্ব পালন করে চলেছেন সৈয়দপুর ট্রাফিক বিভাগের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর, ট্রাফিক সার্জেন্ট ও ট্রাফিক সদস্যরা। সকাল ৮ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত ভাদ্রের চড়া রোদ ও শব্দ দুষনে তাদের অনেকেরই মুখ আর হাতের চামরা পুড়ে গেছে। শরীর দিয়ে অনবরত ঝরছে ঘাম। তবুও দায়িত্ব পালনে পিছপা হয়নি তারা।
দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কি কি সমস্যা হচ্ছে জানতে চাইলে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মাহফুজ ও সার্জেন্ট নাহিদ ও জাহাঙ্গীর জানান, দেশের অষ্টম বানিজ্যিক শহর হলো নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর। একারণে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার মানুষ আসেন এই শহরে। বানিজ্যিক শহরে খ্যাতি অর্জন করলেও আয়তনে অনেক ছোট্ট এ শহর। গিন্জি এ শহরে মানুষের যাতায়াত, আর যানবাহনের হর্ণ বাজানোটাই বেশি সমস্যার সৃষ্টি করে। এ শহরের মানুষ ট্রাফিক আইন সমন্ধে তেমন একটা জানেন না,আর যানবাহন গুলো অযথাই হর্ণ দেয়। ফলে মাঝে মধ্যে বিরক্তি বোধ করি। তারা বলেন, মানুষের ভীর আর হর্ণ বাজানোর ফলে আমাদের অনেকেরই কানের সমস্যা হয়েছে। ডিউটি চলাকালীন তেমন একটা অনুভব না হলেও ডিউটি শেষে বাসায় গেলে বুঝা যায় আমাদের কানের কতটা সমস্যা হয়েছে। বাসায় আমরা যে ভলিয়ামে টেলিভিশন দেখি ও শুনি, তাতে পরিবারের সদস্যদের কান ঝালাপালা হয়ে যায়। ওই সময় আমরা বুঝতে পারি শব্দ দুষনের কারনে আমাদের প্রায় সকলেরই কান নষ্টের পথে। আর প্রখর রোদে মুখ ও হাতের চামরা পুড়ে কালো হয়ে গেছে। তারা বলেন, আমাদের ট্রাফিক বিভাগে জনবল সংকট রয়েছে। জনবল সংকটের কারনে হিমসিম খেতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
সারাদিন ডিউটি করতে গিয়ে মেজাজ খিটখিটে হয়ে গেছে। শুধু মাত্র প্রচন্ড রোদ আর শব্দ দুষনের কারনে ইচ্ছে না থাকা সত্বেও রিক্সা ও ভ্যান চালকদের দুর্ব্যবহার করতে হচ্ছে। তারা বলেন, বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন পৌর প্রশাসক। পৌরসভার দায়িত্ব পালনে অনিহার কারনে ব্যবসায়িরা তাদের দোকানকে বানিয়েছেন গোডাউন আর রাস্তা ও ফুটপাতকে বানিয়েছেন মালামাল রাখার স্হান। আয়তনে ছোট এ শহরে এমনিতেই রাস্তা সরু।এরপরেও ফুটপাত ও রাস্তার কিছু অংশ দখল করে ব্যবসায়িরা তাদের ব্যবসা জমজমাট ভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন।ফলে যানযট নিরসন হচ্ছে না। রোদ বৃষ্টিতে দায়িত্ব পালন করতে এবং বিরতি হীন ভাবে হর্ণের শব্দে শরীর ও কানের অবস্থা ভালো না। তারা বলেন, প্রায় ১৫/১৬ ঘন্টা ডিউটি শেষে বাড়ি গেলেও মনে হয় ডিউটির মধ্যেই আছি। সারাক্ষণ কানে কিসের যেন আওয়াজ করে। বাড়িতে ও মেজাজ থাকে খিটখিটে।
স্হানীয়রা বলেন,ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মাহফুজ, সার্জেন্ট নাহিদ ও জাহাঙ্গীর এর জন্যই সৈয়দপুরের মানুষ কিছুটা হলেও যানযট মুক্ত হয়েছেন।তাদের হাড় ভাংগা পরিশ্রমের ফলে সৈয়দপুর শহরের কোথাও বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে না বলে জানান অনেকেই।
শহরের নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মাহাবুব আলম বলেন, মানুষের শ্রবন শক্তির ক্ষমতা থাকে ২৫ ডেসিবল পর্যন্ত। এর বেশি হলেই কানের সমস্যা হবেই।তিনি বলেন প্রায় প্রতিটি যানবাহনের হর্ণের শব্দ হলো ৪০ থেকে ২০০ ভেসিবল। প্রতিদিনই যদি ওই মাত্রার শব্দ শ্রবন করতে হয়,তাহলে ধীরে ধীরে শ্রবন শক্তি হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ বলে জানান তিনি।
জহুল ইসলাম সৈয়দপুর, থেকে 



















