গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে অধিকার আয়োজিত সভায় বক্তারা বলেন, গুম খুনের পর মানুষের লাশ ফেলে দেয়া হতো মেঘনা নদীতে কারো হাতে থাকতো হ্যান্ডকাপ পড়ানো।
গুম খুনের পর মানুষদের এমন ভাবে হত্যা করা হতো যে তাদের হাত থেকে হ্যান্ডকাপ পর্যন্ত খুলে রাখার সময়টুকু পায়নি। শুধু তাই নয় মেঘনা নদী হচ্ছে গুম খুনের পর লাশের ডাম্পিংয়ের নিরাপদ স্থান। এজন্য বেশি লাশ ভোলা আর লক্ষিপুর দাফন হতো। আর এমন কথা উঠে আসে, গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে অধিকার আয়োজিত ভোলা প্রেসক্লাবে আলোচনা সভায়। শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় ভোলা প্রেসক্লাবে গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার। সংগঠনটির জেলা সমন্বয়কারী ও সাংবাদিক মো: আফজাল হোসেন এর সভাপত্তিত্বের আলোচনা সভা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন দৈনিক আজকের ভোলার সম্পাদক শওকাত হোসেন। তিনি বলেন,আঞ্জুমান এর সাথে সম্পৃক্ত থাকায় বহু বেওয়ারীশ লাশ দাফনের ও দেখার সুযোগ হয়েছে। তখন দেখেছি ৩টি লাশ এমন ছিলো যে তাদের হাতে হাতকড়া পড়ানো ছিলো। নির্মম ভাবে হত্যা করা লাশ গুলোকে ফেলে দেয়া হত মেঘনা নদীতে। এই লাশ সাগড় গ্রহন না করায় পুনরায় ফিরে আসতো। যে কারনে ভোলা আর লক্ষিপুর বেশি লাশ দাফন করতে হয়েছ।
তিনি আরো বলেন,মেঘনা নদী হচ্ছে হত্যার পর লাশ ডাম্পিংয়ের জন্য একটি নিরাপদ স্থান। সেটাই মনে হতো লাশগুলো দেখে।
সিনিয়র সাংবাদিক নজরুল হত অনু বলেন,মা ও তার কোলের সন্তানকে গুমের পর আয়না ঘরে নিয়ে যখন নির্যাতন চালায়,তখন কস্টে ঐ নারী মল ত্যাগ করে। কোলের শিশু যখন মাকে একটু পানি দেয়ার কথা বলে তখনই তাকে ফুটবলের মত লাথি মারে। আর এনসিপি নেতা মীর মোশারেফ হোসেন অমি বলেন, চরফ্যাশনের এক ছেলেকে লঞ্চের কেবিনের দরজা ভেঙ্গে তুলে নেয় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে। পরের দিন মোহাম্মদপুর বেড়ি বাঁধের পাশে ১২/১৩টি গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়। এভাবে নির্মম ভাবে হত্যা করা হতো অসহায় সাধারন মানুষদেরকে। আর এভাবে একে একে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষেরা তুলে ধরেন তাদের অভিজ্ঞতার কথা।
সর্বশেষে সকল বক্তাদের একটাই দাবী উঠে যারাই ক্ষমতায় আসবে তারা যেন অন্তত আয়না ঘর তৈরি না করে। কারন গুম আর খুনের স্বীকার বেশি হচ্ছে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, সাংবাদিকরা ও প্রতিবাদী মানুষগুলো। তাই এখান থেকে সবাইকে বের হয়ে আসতে হবে।
অনুষ্ঠানে বন্ধজন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: সহিদুর রহমান,ক্যাব এর ভোলা জেলার সভাপতি মো: সোলায়মান,ছাত্র আন্দোলনের নেতা,ছাত্র,ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের উপস্থিত ছিলো। পরে প্রেসক্লাবের সামনে থেকে একটি র্যালী বের হয়ে একই স্থানে এসে শেষ হয়।