নওগাঁর মান্দা উপজেলার দেলুয়াবাড়ি হাটের কাপড়পট্টির সরকারি জমিতে একের পর এক আধাপাকা দোকানঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ডিসিআরের নামে অনুমতি দিয়ে এ পর্যন্ত অন্তত অর্ধকোটি টাকার অর্থ লেনদেন হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি হাটের কাপড়পট্টিতে একসঙ্গে অন্তত ৩৫টি দোকানঘর নির্মাণের জন্য ডিসিআর দেওয়া হয়েছে। এসব স্থাপনা নির্মাণে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করেছেন ৮ নং কুসুম্বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নওফেল আলী মন্ডল এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দাস।
অভিযোগকারীরা জানান, চলতি বছরের জুন মাসে এসব ডিসিআরে তৎকালীন ইউএনও শাহ আলম মিয়ার স্বাক্ষর রয়েছে। অভিযোগে আরও বলা হয়, এসি ল্যান্ডের পদটি দীর্ঘ ছয় মাস ধরে শূন্য থাকায় উপজেলা ভূমি অফিসের বিভিন্ন কার্যক্রম সরাসরি পরিচালনা করেন সাবেক ইউএনও। এ সুযোগে হাটের জায়গা লিজ দেওয়ার নামে বড় অঙ্কের অর্থ আদায় করা হয়।
উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, হাটবাজার লিজ দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত হার প্রতি বর্গমিটারে উপজেলা সদরে ৫০ টাকা এবং বাইরে ১৩ টাকা। কিন্তু অভিযোগ অনুযায়ী, দেলুয়াবাড়ি হাটের দোকানপ্রতি ৬০ থেকে ৭০ হাজার এবং বড় দোকান গুলোর ক্ষেত্রে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী আবুল কাসেম বলেন, ‘নিয়ম না মেনে সরকারি জায়গা দখল করে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এতে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিষয়টি তদন্ত করে অবৈধ ডিসিআর বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।’
সরেজমিনে দেখা যায়, হাটের কাপড়পট্টি এলাকা জুড়ে ইট-বালুর স্তুপ ফেলা হয়েছে। নির্মাণশ্রমিকেরা দিন-রাত কাজ করছেন। অনেক জায়গায় স্থাপনার গাঁথুনি ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্য, জায়গা দখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন অনেকেই।
বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী আহসান হাবীব বলেন, ‘বৈধপন্থায় লিজ নিয়ে দোকানঘর নির্মাণ করছি। এখানে সরকারি সম্পত্তি দখল করা হয়নি।’ তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ৮নং কুসুম্বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নওফেল আলী মন্ডল, তিনি বলেন, ‘হাটের ডিসিআর বা জায়গা লিজ প্রদানে আমার কোনো ভূমিকা নেই। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’
ইউএনও দপ্তরের উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দাসের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবদুস সালাম মুঠোফোনে জানান, আমি গত ৩ তারিখ থেকে রাজশাহীতে ট্রেনিংয়ে আছি, দেলুয়াবাড়িহাটের বিষয়টি আমার জানা নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আখতার জাহান সাথী বলেন, ‘আমি এ উপজেলায় নতুন যোগদান করেছি। দেলুয়াবাড়ি হাটের ডিসিআর সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।