প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ১২, ২০২৫, ১২:৩২ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ অগাস্ট ২৫, ২০২৫, ১:৪৩ পি.এম
পাবনা ইছামতি নদী পুনরুজ্জিবীতকরণ প্রকল্পের কাজ চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে : ২৬ আগষ্ট মানববন্ধনের ডাক

নিম্ন আদালতে আইনী জটিলতা থাকায় পাবনা শহরে ইছামতি নদী পুনরুজ্জিবীতকরণ প্রকল্পের কাজ চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। শহরের আটুয়া এলাকায় নদীর পাড়ে সারিবদ্ধভাবে রাখা আছে নদী খননের এস্কেভেটর, মাটি টানা ট্রাকসহ অন্যান্য উপকরণ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইছামতি নদীর বিশেষ করে পাবনা শহরের মধ্যে ৫ কিলোমিটার খনন ও উচ্ছেদ নিয়ে বেশি সমস্যা দেখা দিয়েছে। একের পর এক নিম্ন আদালতে মামলা হচ্ছে, সাথে যুক্ত হয়েছে আদালতের নিষেধাজ্ঞা। দেড় মাস আগে যেখানে মামলার সংখ্যা ছিল ৯৮টি, বর্তমানে মামলার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩২টিতে। ফলে নিষেধাজ্ঞা এলাকা বাদ রেখে গত ০১ জুলাই থেকে ইছামতি নদীর শহরাংশে ময়লা-আবর্জনা, কচুরিপানা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন এবং অপসারণ কাজ শুরু হয়েছে। বর্তমানে সে কাজও চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের পূর্বপাশে প্রাচীর ঘেঁষে একটি এস্কেভেটর কাজ করছে। সেখানে নদী খনন করে মাটি স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। এছাড়া শহরের ভাঙা কালীবাড়ির পাশে ইছামতি নদী কালভার্টের উত্তর পাশে একটি এস্কেভেটর ময়লা-আবর্জনা পরিস্কার করছে। সিংগা বিশ্বরোড ব্রিজের পাশে এবং কদমতলা ব্রিজের পাশে মাত্র ১টি করে এস্কেভেটর কাজ করছে। শুরুতে চারটি পয়েন্টে এই কাজে ২০টি এস্কেভেটর এবং প্রায় অর্ধশতাধিক ময়লাবাহী ট্রাক কাজ করলেও এখন মাত্র ৫টি এস্কেভেটর কাজ করছে।,
এই ময়লা আবর্জনা দিনে পরিবহণে পাবনা পুলিশ থেকে আপত্তি আসার পর তারা এগুলো রাত্রে আপসারণ করছে। কারণ এগুলো দিনে পরিবহণে উৎকট গন্ধ এবং শহরের রস্তাঘাট নোংরা করে ফেলে। অথচ একমাস আগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শুধাংসু কুমার সরকার প্রতিবেদককে জানিয়েছিলেন, শহরের ৫ কিলোমিটার নদীর মধ্যে যে যে জায়গায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা আছে সেখানে বাদ রেখে বাকি জায়গায় খনন কাজ স্বাভাবিক গতিতে চলমান থাকবে। কিন্তু সে কাজেও তেমন গতি নেই। পাবনা ইছামতি নদী খনন এই মেগা প্রকল্পের মধ্যে ২৩টি ব্রিজ নির্মাণ/পুনঃনির্মাণ কাজের ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। অথচ এখন পর্যন্ত ব্রিজগুলোর কাজ দৃশ্যমান হয়নি।
এ বিষয়ে পাবনা ইছামতি নদী উদ্ধর আন্দোলনের সভাপতি এস এম মাহাবুব আলম এ প্রতিবেদককে বলেন, আমরা পাবনাবাসীকে সাথে নিয়ে অচিরেই আন্দোলনে যাচ্ছি, আমরা ইছামতি নদী পুনরুজ্জিবীতকরণ এই মেগা প্রকল্পের কাজ নিয়ে কোনো নয় ছয় বা কালক্ষেপন মেনে নেবো না। এই কাজকে বেগবান করতে ইতোমধ্যে আমরা আগামী মঙ্গলবার ২৬ আগস্ট পাবনা প্রেসক্লাবের সামনে সকাল ১০ টা এক বিশাল মানববন্ধনের ডাক দিয়েছি।
তিনি বলেন, ইছামতি নদী পুনরুজ্জিবীতকরণ এই মেগা প্রকল্পের মধ্যে নদী খনন কাজ ১১০কিলোমিটার, শহরে নদীর উভয় তীরে ১০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ, রিটেনিং ওয়াল নির্মাণ, ব্লক ফেলা, জ্রেনেজ নির্মাণ, ৫৬টি ঘাটলা নির্মাণ এবং ৪২ হাজার ৩১০টি বৃক্ষরোপণ করে শোভাবর্ধনের কাজ রয়েছে। যা বাস্তবায়িত হলে পাবনা একটি আধুনিক যানজটমুক্ত ও পরিবেশসম্মত রুচিশীল শহরে পরিণত হবে।
তিনি আরো বলেন, ইছামতি নদী পুনরুজ্জিবীতকরণ এই মেগা প্রকল্পের কাজকে মোট ছয়টি স্লটে ভাগ করে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এমএস আহাদ বিল্ডার্স খনন কাজ করছেন। এই কাজ তত্ত্বাবধান করছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। কাজের শেষ সীমা ধরা হয়েছে ৩১ মার্চ ২০২৭ খ্রি. পর্যন্ত। ইছামতি নদী পুনরুজ্জিবীতকরণ এই মেগা প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা।
Copyright © 2025 দৈনিক বার্তা. All rights reserved.