প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ১১, ২০২৫, ৬:৩৭ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ অগাস্ট ২০, ২০২৫, ৫:৪৫ পি.এম
পাবনার ফরিদপুরের মাজাট গ্রামে দুই আঃলীগ নেতার বিনা পুঁজির অবৈধ বালু বানিজ্য

পাবনার ফরিদপুরের মাজাট গ্রামে দুই আঃলীগ নেতার অবৈধ বালুর রমরমা বানিজ্য চলছে । কিছুতেই থামছে না বিনা পুঁজির এই অবৈধ বানিজ্য।
জানা যায়, প্রতিদিন নদী থেকে অবৈধভাবে লাখ লাখ ঘনফুট বালু তুলে বিক্রি করা হচ্ছে। এনিয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর করা হয়। বালুর গাড়ির চাপে ভেঙে পড়েছে কালভার্ট। এতে বিলের পানি আটকে গিয়ে আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকাব্যাপী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা দেখে দিয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার সময়ে অবৈধ বালুমহাল গড়ে তোলেন পাবনার ফরিদপুর উপজেলার ডেমরা ইউনিয়নের মাজাট গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল বাতেন প্রামাণিক ও আনোয়ার হোসেন। দল ক্ষমতাচ্যুত হওযার পর এখনো তারা অবৈধ বালুর ব্যবসা ধরে রেখেছেন। প্রশাসনের অভিযানের পরও তাদের কর্মকাণ্ড থেমে নেই।
সম্প্রতি ফরিদপুর উপজেলা প্রশাসন তাদের অবৈধ বালুমহালে অভিযান পরিচালনা করে ভেঙে দেয় বালু উত্তোলনের পাইপসহ যন্ত্রপাতি।
প্রশাসনের অভিযানের জন্য সন্দেহ করা হয় প্রতিবেশী সাবেক সেনা সদস্য ইমরান হোসেনকে। তাকে মারধর গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ বিষয়ে থানায় মামলা করার পর তাদের অব্যাহত হুমকিতে এলাকায় থাকতে পারছেন না ইমরান হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে বালুর ভারী গাড়ি যাতায়াতের কারণে ইতিমধ্যেই চলাচলের রাস্তা ভেঙে গেছে। বিলের পানি যাতায়াতের কালভার্ট ভেঙে পড়েছে। এতে বিলের পানি যাতায়াত বন্ধ হয়ে একপাশে জলাবদ্ধতা আরেক পাশে পানিশূন্য হয়ে পড়েছে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, বড় বংশ হওয়ায় এলাকায় তারা অত্যন্ত প্রভাবশালী। ওই গ্রামের অধিকাংশ লোকজনই তাদের বংশের। ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চায় না। শুধু বালু নয়, অবৈধ কবিরাজী ব্যবসাসহ নানা অপকর্ম তারা করলেও কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায় না।
সাবেক সেনা সদস্য ইমরান হোসেন বলেন, ‘কয়েকদিন আগে সেখানে উপজেলা প্রশাসন থেকে অভিযান চালানো হয়। সেই অভিযানের পর আমাকে সন্দেহ করা হয় আমি প্রশাসনকে তথ্য দিয়ে অভিযান চালিয়েছি। এজন্য তারা আমাকে রাস্তায় উপর হামলা করে হত্যাচেষ্টা করে। আমি দৌড়ে প্রাণ রক্ষা করি। আমার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে আমি থানায় অভিযোগ দিলে তার ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য চেষ্টা করেও অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল বাতেন প্রামাণিক ও আনোয়ার হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে আনোয়ারের ছেলে মো. পাভেল, বাতেনের দুই ভাতিজা নুর নবী ও মাহফুজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকেই তারা বালু ব্যবসা করছেন। এখন এটা নিয়ে অনেকেই ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের এলাকার কেউ এটা নিয়ে কথা বলেন না, কিন্তু আশপাশের দু’-একজন এটা নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে।
এ বিষয়ে ফরিদপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ছানাউল মোর্শেদ জানান, আমরা একাধিকবার অভিযান চালিয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তারা পলাতক। আর ভাঙা রাস্তা ইতিমধ্যেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেরামত করা হয়েছে।
Copyright © 2025 দৈনিক বার্তা. All rights reserved.