ঢাকা ০৫:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo স্কয়ার ফার্মারর বিরুদ্ধে ডোজ প্রতারণা ও রিপ্যাকিংয়ের অভিযোগে প্রেস কনফারেন্স শনিবার Logo ৫৭ বছরেও শেবাচিমে চালু হয়নি নিউরো ওয়ার্ড, স্ট্রোকের রোগীদের চরম ভোগান্তি Logo সৈয়দপুরে আর্মি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান দিবস পালিত Logo তানোরে নতুন ধানের জাত ব্রি ধান ১০৩ এর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত Logo প্রিপেইড মিটার স্থাপন বন্ধ ও মামলা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে মৌন মিছিল ও স্মারকলিপি হস্তান্তর Logo সৈয়দপুরে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার Logo শ্রীমঙ্গলে সাংবাদিকদের সাথে সংসদ সদস্য প্রার্থী হারুনুর রশিদের মতবিনিময় সভা Logo মোবাইল-ই কাল হলো নবম শ্রেণীর ছাত্রী জ্যামির, শিক্ষকের শাসন -অতঃপর বিষপানের মৃত্যু Logo রাজধানীর বাড্ডা ও শাহজাদপুরে ২ বাসে আগুন Logo রাজধানীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে একজন নিহত

সৈয়দপুরে কুটিরশিল্প মেলার নামে চলছে জুয়া, স্বর্বশান্ত মানুষ

নীলফামারীর সৈয়দপুরে ক্ষুদ্র কুটির শিল্প মেলার নামে চলছে লটারির মাধ্যমে জুয়া। প্রতিদিন সকাল ১০ থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত শহরের মোড়ে মোড়ে ও অর্ধশত ইজিবাইক নিয়ে শহরের পার্শ্ববর্তী তারাগন্জ, নীলফামারী,ডোমার,জলঢাকা, চিরিরবন্দর,খানসামা,পাকেরহাট ও পার্বতীপুরে লটারির ওই টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে। আর এসব কিনে প্রতারিত ও স্বর্বসান্ত হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। সেই সংগে জুয়াকে ঘিরে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত বেড়েছে কয়েকগুন। যার ফলে আতংকিত ও অশান্তি দেখা দিয়েছে নিম্নমধ্যবিত্ত ও খেটে খাওয়া মানুষের ঘরে ঘরে। মেলাটি বিমানবন্দর এলাকায় হওয়ায় পুলিশ প্রসাশন কিছুই করতে পারছেন না।
জানা যায়, চলতি বছরের জুলাই মাসের গোড়ার দিকে শুরু হয় এই মেলাটি। শুরুর দিকে ২০ টাকা মুল্যের টিকেটে ২/৪ টি মোটরসাইকেল সহ মোট ৬১ টি পুরস্কার দেয়া হলেও পরবর্তীতে প্রতিদিন ২০ টাকার টিকেটে ৭ থেকে ১০ ভরি স্বর্ন, ৮/১০ টি মোটরসাইকেল সহ মোট ৭১ টি পুরস্কার দেয়ায় অত্র এলাকার মানুষ টিকেট কিনতে হুমরি খেয়ে পড়েন। অনেকে এনজিও থেকে লোন নিয়ে, কেউবা গরুছাগল বিক্রি করে, আবার কেউবা ভাতের চাল বিক্রি করে ও লটারির টিকেট কিনে পথে বসেছেন।
স্হানীয়রা বলছেন,নীলফামারীর সৈয়দপুর হলো দেশের অষ্টম বানিজ্যিক শহর। এর ফলে উত্তরাঞ্চলের ব্যবসায়ি মহল মার্কেটিং করতে আসেন এশহরে।য়ার ফলে প্রায় প্রতিদিনই ভীর থাকে সমানতালে। আর এটাকে পুজি করে মেলার মালিকরা জুয়ার মুখ্য স্পট হিসেবে নেয় সৈয়দপুরকে। একারনে তারা প্রায় দেড় মাস থেকে রং বেরংয়ের টিকেট বিক্রি করছেন ধুমছে। প্রায় প্রতিদিন কোটি টাকারও বেশি টিকেট বিক্রি হলেও শুধু মাত্র ৭১ জনকে দেয়া হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার মালামাল। আর এ লোভে একেকজন সোনা বা মোটরসাইকেল পাওয়ার আসায় হাজার হাজার টাকার টিকেট কিনে নিঃস্ব হয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরছেন।
শহরের অনেক কাপড় ও হোটেল ব্যবসায়ি ভয়ে  নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জুয়াটি চলছে বিমানবন্দর সড়ক এলাকায়। সেখানে দাপটের সাথে লটারির নামে জুয়া খেলা হওয়ায় গ্রাহকরা ২০ টাকার টিকেটে সোনা বা মোটরসাইকেল পাওয়ার আসায় কাপড় মার্কেট, হোটেল সহ অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও গ্রাহক শুন্য হয়ে গেছে। তারা আরো বলেন, মানুষরা যেভাবে লোভে পড়ে লটারির টিকেট কিনে প্রতারিত হচ্ছেন, সেদিন বেশি নয়, মেলাটি বন্ধ হয়ে গেলে এশহরে চুরি চামারি বেড়ে যাবে। সন্ধ্যার পর কেউ এক বস্তা চাল বা এক কেজি গোস্ত কিনে বাড়ি ফিরতে পারবেন না।
বিক্রিত লটারির টিকিট
সচেতন মহল বলছেন, দেশে আইন শৃঙ্খলার অবনতি হয় জানতাম,কিন্তু ২০২৪ সালের ৫ আগষ্টের পর এতটা অবনতি হবে তা ভাবতেও কষ্ট হচ্ছে। চোখের সামনে মেলার নামে লটারির মাধ্যমে আয়োজকরা সরল শান্ত মানুষকে বোকা বানিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা নিয়ে যাচ্ছে অথচ আইন প্রয়োগকারি সংস্থা একেবারেই নিঃশ্চুপ।
লটারি জুয়া নিয়ে কথা বলতে চাইলে ওই মেলার এক পার্টনার মালিক মুন্তা ইসলাম এসব বিষয়ে কোন কথাই বলবেন না বলে জানান।
এ বিষয়ে কথা হয় সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফইম উদ্দিন এর সাথে, তিনি বলেন,মেলাটি চলছে বিমানবন্দর সড়কের পাশে। মেলার জুয়ায় মাত্রাধীক ভীড় থাকায় প্রায় সময় যাত্রীরা সময় মতো বিমানবন্দর যেতে পারছেন না। কিন্তু এরপরেও আমরা কিছুই করতে পারছি না।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

স্কয়ার ফার্মারর বিরুদ্ধে ডোজ প্রতারণা ও রিপ্যাকিংয়ের অভিযোগে প্রেস কনফারেন্স শনিবার

সৈয়দপুরে কুটিরশিল্প মেলার নামে চলছে জুয়া, স্বর্বশান্ত মানুষ

Update Time : ০৪:০৬:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫
নীলফামারীর সৈয়দপুরে ক্ষুদ্র কুটির শিল্প মেলার নামে চলছে লটারির মাধ্যমে জুয়া। প্রতিদিন সকাল ১০ থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত শহরের মোড়ে মোড়ে ও অর্ধশত ইজিবাইক নিয়ে শহরের পার্শ্ববর্তী তারাগন্জ, নীলফামারী,ডোমার,জলঢাকা, চিরিরবন্দর,খানসামা,পাকেরহাট ও পার্বতীপুরে লটারির ওই টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে। আর এসব কিনে প্রতারিত ও স্বর্বসান্ত হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। সেই সংগে জুয়াকে ঘিরে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত বেড়েছে কয়েকগুন। যার ফলে আতংকিত ও অশান্তি দেখা দিয়েছে নিম্নমধ্যবিত্ত ও খেটে খাওয়া মানুষের ঘরে ঘরে। মেলাটি বিমানবন্দর এলাকায় হওয়ায় পুলিশ প্রসাশন কিছুই করতে পারছেন না।
জানা যায়, চলতি বছরের জুলাই মাসের গোড়ার দিকে শুরু হয় এই মেলাটি। শুরুর দিকে ২০ টাকা মুল্যের টিকেটে ২/৪ টি মোটরসাইকেল সহ মোট ৬১ টি পুরস্কার দেয়া হলেও পরবর্তীতে প্রতিদিন ২০ টাকার টিকেটে ৭ থেকে ১০ ভরি স্বর্ন, ৮/১০ টি মোটরসাইকেল সহ মোট ৭১ টি পুরস্কার দেয়ায় অত্র এলাকার মানুষ টিকেট কিনতে হুমরি খেয়ে পড়েন। অনেকে এনজিও থেকে লোন নিয়ে, কেউবা গরুছাগল বিক্রি করে, আবার কেউবা ভাতের চাল বিক্রি করে ও লটারির টিকেট কিনে পথে বসেছেন।
স্হানীয়রা বলছেন,নীলফামারীর সৈয়দপুর হলো দেশের অষ্টম বানিজ্যিক শহর। এর ফলে উত্তরাঞ্চলের ব্যবসায়ি মহল মার্কেটিং করতে আসেন এশহরে।য়ার ফলে প্রায় প্রতিদিনই ভীর থাকে সমানতালে। আর এটাকে পুজি করে মেলার মালিকরা জুয়ার মুখ্য স্পট হিসেবে নেয় সৈয়দপুরকে। একারনে তারা প্রায় দেড় মাস থেকে রং বেরংয়ের টিকেট বিক্রি করছেন ধুমছে। প্রায় প্রতিদিন কোটি টাকারও বেশি টিকেট বিক্রি হলেও শুধু মাত্র ৭১ জনকে দেয়া হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার মালামাল। আর এ লোভে একেকজন সোনা বা মোটরসাইকেল পাওয়ার আসায় হাজার হাজার টাকার টিকেট কিনে নিঃস্ব হয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরছেন।
শহরের অনেক কাপড় ও হোটেল ব্যবসায়ি ভয়ে  নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জুয়াটি চলছে বিমানবন্দর সড়ক এলাকায়। সেখানে দাপটের সাথে লটারির নামে জুয়া খেলা হওয়ায় গ্রাহকরা ২০ টাকার টিকেটে সোনা বা মোটরসাইকেল পাওয়ার আসায় কাপড় মার্কেট, হোটেল সহ অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও গ্রাহক শুন্য হয়ে গেছে। তারা আরো বলেন, মানুষরা যেভাবে লোভে পড়ে লটারির টিকেট কিনে প্রতারিত হচ্ছেন, সেদিন বেশি নয়, মেলাটি বন্ধ হয়ে গেলে এশহরে চুরি চামারি বেড়ে যাবে। সন্ধ্যার পর কেউ এক বস্তা চাল বা এক কেজি গোস্ত কিনে বাড়ি ফিরতে পারবেন না।
বিক্রিত লটারির টিকিট
সচেতন মহল বলছেন, দেশে আইন শৃঙ্খলার অবনতি হয় জানতাম,কিন্তু ২০২৪ সালের ৫ আগষ্টের পর এতটা অবনতি হবে তা ভাবতেও কষ্ট হচ্ছে। চোখের সামনে মেলার নামে লটারির মাধ্যমে আয়োজকরা সরল শান্ত মানুষকে বোকা বানিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা নিয়ে যাচ্ছে অথচ আইন প্রয়োগকারি সংস্থা একেবারেই নিঃশ্চুপ।
লটারি জুয়া নিয়ে কথা বলতে চাইলে ওই মেলার এক পার্টনার মালিক মুন্তা ইসলাম এসব বিষয়ে কোন কথাই বলবেন না বলে জানান।
এ বিষয়ে কথা হয় সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফইম উদ্দিন এর সাথে, তিনি বলেন,মেলাটি চলছে বিমানবন্দর সড়কের পাশে। মেলার জুয়ায় মাত্রাধীক ভীড় থাকায় প্রায় সময় যাত্রীরা সময় মতো বিমানবন্দর যেতে পারছেন না। কিন্তু এরপরেও আমরা কিছুই করতে পারছি না।