
দেশের উচ্চ আদালতের নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখালেন সোনারগাঁও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মঞ্জুরুল মোর্শেদ। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ ৩০ দিনের মধ্যে একটি দরখাস্ত নিষ্পত্তির নির্দেশ দিলে সরকারি পদ, পদবি ও ক্ষমতার সর্বোচ্চ অপব্যবহার করে হাইকোর্টের নির্দেশকে সরাসরি অমান্য ও লঙ্ঘন করেন তিনি।
এমনকি আইন অমান্য করে নকল প্রদানে অস্বীকৃতি জানান এই কর্মকর্তা।
একদিকে, হাইকোর্টের নির্দেশ উপেক্ষা, অন্যদিকে, নিজস্ব আইনকে উপেক্ষা করে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তিনি দরখাস্ত নিষ্পত্তি না করে এবং নকল প্রদান না করে নিজের ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করার চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে।
হাইকোর্ট ৪ জুন ২০২৫ তারিখে আদেশ দেন, এসিল্যান্ড যেন আবেদনটি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে উক্ত দরখাস্তটি নিষ্পত্তি করেন।
তবে রিট আবেদনকারী মোক্তার হোসেন অভিযোগ করেন, “হাইকোর্টের আদেশ পাওয়ার পরও দরখাস্তটি নিষ্পত্তি করেননি ভূমি অফিস। এমনকি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানোর পরও মামলার নকল পর্যন্ত আমাকে দেয়নি।
এ বিষয়ে সোনারগাঁও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের প্রধান সহকারী মোক্তার হোসেন বলেন, মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের রিটের আদেশের কপি ও জাস্টিস ডিমান্ডিং নোটিশের কপি পেয়েছি। দরখাস্তটি এখনো নিষ্পত্তি হয়নি, তবে হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী এসিল্যান্ড স্যার দরখাস্তটি নিষ্পত্তি করবেন। হাইকোর্টের বেঁধে দেয়া সময় বিগত ৮ আগষ্ট শেষ হয়েছে অথচ আজকে ১০ তারিখেও দরখাস্তটি কেন নিষ্পত্তি হয়নি?এ বিষয়ে এসিল্যান্ড এর সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।
নকল রেডি করে এসিল্যন্ড স্যারের টেবিলে দেয়া হয়েছে। স্যার স্বাক্ষর করলেই দিয়ে দিবো। নকল দিতে ৪ মাস সময় লাগে কিনা? এ প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান তিনি।
এ বিষয়ে সোনারগাঁও সার্কেল সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের সার্ভেয়ার মহসিন মিয়া বলেন, অনেক বিবিধ মোকদ্দমা। এখন এই বিবিধ মোকদ্দমার কথা বলতে পারছি না। তবে ধ্যর্য তারিখ ছাড়া কোন দরখাস্ত নিষ্পত্তি হয় নি। হাইকোর্ট আদেশ ৩০ দিনের বেশি হলে সমস্যা নাই। আগামী ধার্য্য তারিখে দরখাস্ত নিষ্পত্তি করে একেবারে নকলসহ আদেশের কপি দিয়ে দিবো।
এ বিষয়ে সোনারগাঁও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মঞ্জুরুল মোর্শেদ এর সঙ্গে মোবাইলে কথা হলে তিনি জানান, মোকদ্দমাটি মিস আপীল, তাই ৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়নি। বিধি মোতাবেক মোকদ্দমাটি নিষ্পত্তি করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ জজ কোর্টের আইনজীবী খন্দকার মাজেদুল ইসলাম সম্রাট বলেন, মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের আদেশের পরও দরখাস্তটি নিষ্পত্তি না করা এবং জাস্টিস ডিমান্ডিং নোটিশ পাবার পরও নকল না দেওয়ায় সহজেই বুঝা যায় এই অফিসে সাধারণ মানুষ কি সেবা পান। সোনারগাঁওয়ের এসিল্যান্ড মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের আদেশ পালন করতে আইনত বাধ্য হওয়া সত্বেও পালন না করায় ওনি পদের শপথ ভঙ্গ করেছেন। দরখাস্তকারীর উচিত মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে কনটেম্পট পিটিশন ফাইল করা।
সোনারগাঁও (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিরেদক 


















