ঢাকা ০৯:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo সৈয়দপুরে আর্মি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান দিবস পালিত Logo তানোরে নতুন ধানের জাত ব্রি ধান ১০৩ এর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত Logo প্রিপেইড মিটার স্থাপন বন্ধ ও মামলা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে মৌন মিছিল ও স্মারকলিপি হস্তান্তর Logo সৈয়দপুরে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার Logo শ্রীমঙ্গলে সাংবাদিকদের সাথে সংসদ সদস্য প্রার্থী হারুনুর রশিদের মতবিনিময় সভা Logo মোবাইল-ই কাল হলো নবম শ্রেণীর ছাত্রী জ্যামির, শিক্ষকের শাসন -অতঃপর বিষপানের মৃত্যু Logo রাজধানীর বাড্ডা ও শাহজাদপুরে ২ বাসে আগুন Logo রাজধানীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে একজন নিহত Logo চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ সার ব্যবসায়ীকে ১ মাসের কারাদণ্ড ও জরিমানা Logo মহাদেবপুরে আদালতের আদেশ অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা

জাল স্বাক্ষরে কমিটি বাতিলের চেষ্টার অভিযোগ মাদরাসা সুপারের বিরুদ্ধে

নওগাঁর মান্দায় কুড়িয়াপাড়া দাখিল মাদরাসার সুপারিনটেনডেণ্ট জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। তিনি বৈধভাবে গঠিত অ্যাডহক কমিটি বাতিলের উদ্দেশ্যে চাঁদাবাজি ও কমিটির দুই সদস্যের স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া পদত্যাগপত্র দাখিল করেছেন বলে মাদরাসার সভাপতি ডিসি ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কাছে গত সোমবার একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, গত মার্চ মাসের ৬ তারিখে ওই মাদরাসার অ্যাডহক কমিটি পাশ করে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড। এর ৫ দিন পর ওই মাসের ১১ তারিখে সভাপতির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে একটি অভিযোগ দেন মাদরাসার সুপার এবং সেইসাথে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের রেজিস্ট্রার বরাবর শিক্ষক প্রতিনিধি হাফিজুর রহমান ও অভিভাবক সদস্য বাবুল হোসেনের পদত্যাগ পত্র দিয়ে কমিটি বাতিলের আবেদন করেন। এ ঘটনায় শিক্ষক প্রতিনিধি হাফিজুর রহমান ও অভিভাবক সদস্য  বাবুল হোসেনের স্বাক্ষর জাল করে সুপার জিয়াউর রহমান একটি ভুয়া পদত্যাগপত্র প্রস্তুত করেছেন বলে মাদরাসার সভাপতি অভিযোগ দেন।
সরেজমিনে মাদরাসায় গিয়ে জানা যায়,  মাদরাসার সুপার  জিয়াউর রহমান মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি রেজাউল নবীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে রেজিস্ট্রারের কাছে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ অভিযোগের প্রায় দুই মাস পর গত মে মাসের ২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত এক সভায় সকল শিক্ষক, কর্মচারী এবং পরিচালনা কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ও মাদরাসার মিলেমিশে কাজ করার বিষয়ে একটি রেজুলেশন করেন। এতে সর্ব-সম্মতভাবে বর্তমান কমিটি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর মাদরাসার সুপারের করা চাঁদাবাজির অভিযোগের তদন্ত এলে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। এর আগে গত ২১ মে তারিখে মাদরাসার সুপারকে মিথ্যে চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলায় সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এ বিষয়ে মাদরাসার সকল শিক্ষক-কর্মচারীরা বলেন, সভাপতি সুপারের কাছে চাঁদা চেয়েছেন এমন কোন কথা আমরা কখনো শুনিনি। তবে মাদরাসার সভাপতির তালিকা পাঠানো নিয়ে সভাপতির সাথে মনোমালিন্য ছিল। একারণেই হয়তোবা এ অভিযোগ করতে পারেন।
পদত্যাগ পত্রে শিক্ষক প্রতিনিধি হাফিজুর রহমানের স্বাক্ষরের মিল না পাওয়ায় তার কাছে জানতে চাইলে তিনি স্বাক্ষর করেছেন বলে দাবি করেন। তখন তাকে স্বাক্ষর করতে বললে তিনি যে স্বাক্ষর করে দেন সেই স্বাক্ষরের সাথে পদত্যাগপত্রের স্বাক্ষরের কোন মিল নেই বলে দেখা যায়। এরপর সকল শিক্ষক-কর্মচারীরাও সেটা নিশ্চিত করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিভাবক প্রতিনিধি বাবুল হোসেন বলেন, আমি কমিটি থেকে পদত্যাগ করিনি।
মাদরাসার সুপার জিয়াউর রহমান বলেন, তিনি আমাকে বলেছেন, কমিটি বের করে আনতে আমার অনেক টাকা খরচ হয়েছে সেটা দিতে হবে। তবে সভাপতি টাকা চেয়েছেন তার কোন প্রমাণ তিনি দিতে পারেননি এবং এই বিষয়ে কাওকে কিছু জানাননি বলেও জানান।
জানতে চাইলে মাদরাসার সভাপতি রেজাউল নবী এ ঘটনাকে চরম অনৈতিক ও প্রতারণামূলক উল্লেখ করে বলেন, এ ধরনের জালিয়াতি শুধু আইন পরিপন্থীই নয়, বরং প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি অবজ্ঞাস্বরূপ। আমি দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে অভিযোগ করেছি।
জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ আলম শেখ বলেন, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি তদন্তের চিঠি এসেছে। সেটি তদন্ত করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রেরণ করা হবে।
অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেন বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

সৈয়দপুরে আর্মি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান দিবস পালিত

জাল স্বাক্ষরে কমিটি বাতিলের চেষ্টার অভিযোগ মাদরাসা সুপারের বিরুদ্ধে

Update Time : ০৩:৩০:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
নওগাঁর মান্দায় কুড়িয়াপাড়া দাখিল মাদরাসার সুপারিনটেনডেণ্ট জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। তিনি বৈধভাবে গঠিত অ্যাডহক কমিটি বাতিলের উদ্দেশ্যে চাঁদাবাজি ও কমিটির দুই সদস্যের স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া পদত্যাগপত্র দাখিল করেছেন বলে মাদরাসার সভাপতি ডিসি ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কাছে গত সোমবার একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, গত মার্চ মাসের ৬ তারিখে ওই মাদরাসার অ্যাডহক কমিটি পাশ করে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড। এর ৫ দিন পর ওই মাসের ১১ তারিখে সভাপতির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে একটি অভিযোগ দেন মাদরাসার সুপার এবং সেইসাথে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের রেজিস্ট্রার বরাবর শিক্ষক প্রতিনিধি হাফিজুর রহমান ও অভিভাবক সদস্য বাবুল হোসেনের পদত্যাগ পত্র দিয়ে কমিটি বাতিলের আবেদন করেন। এ ঘটনায় শিক্ষক প্রতিনিধি হাফিজুর রহমান ও অভিভাবক সদস্য  বাবুল হোসেনের স্বাক্ষর জাল করে সুপার জিয়াউর রহমান একটি ভুয়া পদত্যাগপত্র প্রস্তুত করেছেন বলে মাদরাসার সভাপতি অভিযোগ দেন।
সরেজমিনে মাদরাসায় গিয়ে জানা যায়,  মাদরাসার সুপার  জিয়াউর রহমান মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি রেজাউল নবীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে রেজিস্ট্রারের কাছে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ অভিযোগের প্রায় দুই মাস পর গত মে মাসের ২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত এক সভায় সকল শিক্ষক, কর্মচারী এবং পরিচালনা কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ও মাদরাসার মিলেমিশে কাজ করার বিষয়ে একটি রেজুলেশন করেন। এতে সর্ব-সম্মতভাবে বর্তমান কমিটি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর মাদরাসার সুপারের করা চাঁদাবাজির অভিযোগের তদন্ত এলে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। এর আগে গত ২১ মে তারিখে মাদরাসার সুপারকে মিথ্যে চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলায় সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এ বিষয়ে মাদরাসার সকল শিক্ষক-কর্মচারীরা বলেন, সভাপতি সুপারের কাছে চাঁদা চেয়েছেন এমন কোন কথা আমরা কখনো শুনিনি। তবে মাদরাসার সভাপতির তালিকা পাঠানো নিয়ে সভাপতির সাথে মনোমালিন্য ছিল। একারণেই হয়তোবা এ অভিযোগ করতে পারেন।
পদত্যাগ পত্রে শিক্ষক প্রতিনিধি হাফিজুর রহমানের স্বাক্ষরের মিল না পাওয়ায় তার কাছে জানতে চাইলে তিনি স্বাক্ষর করেছেন বলে দাবি করেন। তখন তাকে স্বাক্ষর করতে বললে তিনি যে স্বাক্ষর করে দেন সেই স্বাক্ষরের সাথে পদত্যাগপত্রের স্বাক্ষরের কোন মিল নেই বলে দেখা যায়। এরপর সকল শিক্ষক-কর্মচারীরাও সেটা নিশ্চিত করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিভাবক প্রতিনিধি বাবুল হোসেন বলেন, আমি কমিটি থেকে পদত্যাগ করিনি।
মাদরাসার সুপার জিয়াউর রহমান বলেন, তিনি আমাকে বলেছেন, কমিটি বের করে আনতে আমার অনেক টাকা খরচ হয়েছে সেটা দিতে হবে। তবে সভাপতি টাকা চেয়েছেন তার কোন প্রমাণ তিনি দিতে পারেননি এবং এই বিষয়ে কাওকে কিছু জানাননি বলেও জানান।
জানতে চাইলে মাদরাসার সভাপতি রেজাউল নবী এ ঘটনাকে চরম অনৈতিক ও প্রতারণামূলক উল্লেখ করে বলেন, এ ধরনের জালিয়াতি শুধু আইন পরিপন্থীই নয়, বরং প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি অবজ্ঞাস্বরূপ। আমি দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে অভিযোগ করেছি।
জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ আলম শেখ বলেন, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি তদন্তের চিঠি এসেছে। সেটি তদন্ত করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রেরণ করা হবে।
অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেন বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।