ঢাকা ০৪:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo শ্রীমঙ্গলে সাংবাদিকদের সাথে সংসদ সদস্য প্রার্থী হারুনুর রশিদের মতবিনিময় সভা Logo মোবাইল-ই কাল হলো নবম শ্রেণীর ছাত্রী জ্যামির, শিক্ষকের শাসন -অতঃপর বিষপানের মৃত্যু Logo রাজধানীর বাড্ডা ও শাহজাদপুরে ২ বাসে আগুন Logo রাজধানীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে একজন নিহত Logo চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ সার ব্যবসায়ীকে ১ মাসের কারাদণ্ড ও জরিমানা Logo মহাদেবপুরে আদালতের আদেশ অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা Logo দুর্গাপুরে ‎রাজশাহী-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন  Logo শীতের গন্ধ, তাপমাত্রা কমছে প্রতিদিন দুই ডিগ্রি ঈশ্বরদীতে দোকানে উঠছে শীতের সোয়েটার-জ্যাকেট, কম্বল Logo পদ্মার চরজুড়ে চলছে ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’ Logo নীলফামারীতে চার দফা দাবী বাস্তবায়নে বিসিএস প্রভাষক পরিষদের মানবন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন
১০ বছরের অধিক সময় একই স্থানে পদায়িত

প্রধান প্রকৌশলীর কারণেই সরানো যাচ্ছে না হাসান ইবনে কামালকে

গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আক্তারের আশীর্বাদেই চট্টগ্রাম গণপূর্ত ই/এম বিভাগ ১ এ গেড়ে বসেছেন নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান ইবনে কামাল। দেশের প্রথম শ্রেণীর বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে চট্টগ্রাম গণপূর্ত ই/এম বিভাগ ১ প্রকৌশলী হাসান ইবনে কামালের দুর্নীতি আর হাসিনা সরকারের প্রীতির বিষয়ে প্রমাণ সাপেক্ষে বিস্তর সংবাদ প্রকাশ হলেও, প্রধান প্রকৌশলী শামীম আক্তার তাকে ঐ স্থান থেকে সরাতে অনিচ্ছুক। গণপূর্ত অধিদপ্তরের সৎ ও দুর্নীতিহীন কর্মকর্তারা দৈনিক বার্তাকে এমনটাই জানিয়েছেন। গুঞ্জন রয়েছে চট্টগ্রাম থেকে গণপূর্তের বড় বড় প্রকল্পের বাজেট থেকে বিশাল অংকের কমিশন নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান ইবনে কামালের মাধ্যমে নিয়মিত পেয়ে আসছেন প্রধান প্রকৌশলী শামীম আক্তার। তার মত বিশ্বস্ত লোক না পাওয়া পর্যন্ত প্রধান প্রকৌশলী তাকে কিছুতেই ঐ স্থান থেকে অন্যত্র বদলি করবেন না বলেই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

২৪ এর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার পালিয়ে গেলেও দেশের গণপূর্ত অধিদপ্তর গুলোকে আওয়ামী দোসর থেকে নিয়ন্ত্রন মুক্ত করা যায়নি। এখনো গত ১৫ বছরের আওয়ামী মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী ঠিকাদারদের মধ্যেই ভাগ বাটোয়ারা হচ্ছে সরকারের বড় বড় সকল প্রকল্পের কাজ। আর এসবের সকল কুকর্মের হোতা নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান ইবনে কামাল। সহকর্মী ও সাধারণ ঠিকাদারদের মাঝে দাপটের সাথে বলে বেড়ান, উপদেষ্টা, আমলা আর প্রধান প্রকৌশলী সব আমার পকেটে। পত্রিকায় তো শত শত নিউজ হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে। কই আমাকে সরাতে পারলো? প্রধান প্রকৌশলী যতক্ষণ না চাইবেন ততক্ষণ আমি এখানেই থাকবো। আর তিনি কখনো চাইবেন না আমাকে এখান থেকে সরাতে।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম গণপূর্ত ই/ এম বিভাগ ১ এ টানা ১০ বছরের অধিক সময় কাজ করে আসছেন বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান ইবনে কামাল। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত ও আজ্ঞাবহ প্রকৌশলী হাসান ইবনে কামালকে অন্তর্বর্তী সরকারের ১ বছরেও তার জায়গা থেকে সরানো যায়নি। এখনো তিনি চট্টগ্রামে আওয়ামী মদদপুষ্ট ঠিকাদারদের দিয়ে দেদারসে চালিয়ে যাচ্ছেন তার দুর্নীতি।

জনমনে প্রশ্ন, হাসান ইবনে কামালের খুঁটির জোর কি শেখ হাসিনার চাইতেও বেশি? নইলে এখনো তিনি কিভাবে স্বপদে বহাল থেকে দেদারসে তার দুর্নীতির কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন? নাকি ভোল পাল্টে বর্তমান সরকারের উপদেষ্টা ও আমলাদের ম্যানেজ করে নিরবে ঘাঁপটি মেরে বসে আছেন? নাকি প্রধান প্রকৌশলী শামীম আক্তার তার নিজের লাভের জন্যই তাকে এখান থেকে সরাচ্ছেন না?

বঞ্চিত যোগ্য ঠিকাদারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের প্রশ্ন, আওয়ামী লীগ আমলে দুর্নীতির যে মহোৎসব চলেছে, সে সময়টায় না হয় তার পক্ষে এটা করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়েও কিভাবে তিনি বহাল থেকে পূর্বের মতোই তার পছন্দমত আওয়ামী লীগ সমর্থিত ঠিকাদারদের মধ্যে প্রকল্পের কাজ বন্টন করছেন তা নিরূপণ করা অতীব জরুরী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী একাধিক ঠিকাদার এই প্রতিবেদককে তাদের কষ্টের কথা জানান। ব্যাপক হতাশা প্রকাশ করে তারা বলেন, চট্টগ্রাম গণপূর্ত ই/এম বিভাগে এখনো পতিত হাসিনা সরকারের মদদপুষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলী ও আরো কিছু সিনিয়র কর্মকর্তারা আওয়ামী লীগের স্থানীয় সন্ত্রাসী ঠিকাদারদের সাথে মিলেমিশ কাজ ভাগাভাগি করে নিচ্ছে। আর এতে স্পষ্ট মদদ রয়েছে প্রধান প্রকৌশলী শামীম আক্তারের। প্রকল্পের টাকা চুরি করে নিজেরা আরাম আয়েশে জীবন যাপন করছে। আর আমরা গত ১৬-১৭ বছর কাজ না পেয়ে ব্যাপক নির্যাতনের মুখে কোনরকম বেঁচে আছি। আমাদের মতো রানিং ঠিকাদারদের অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে।

তারা আরো বলেন, আওয়ামী দোসর বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান ইবনে কামালকে এখান থেকে না সরালে একদিকে যেমন প্রকল্পের টাকা চুরি হয়ে দেশের ক্ষতি হবে, অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আরো বেশি করে শক্তিশালী হয়ে উঠবে। বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, সচিব ও গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আমরা বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের কাছে আমাদের অনুরোধ চট্টগ্রাম গণপূর্ত ই/এম বিভাগের (১) নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান ইবনে কামালকে অনতিবিলম্বে বরখাস্ত করে তার দুর্নীতির তদন্তের ব্যবস্থা করা হোক।

এ বিষয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আক্তারের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে একাধিক বার কল করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। ফলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

শ্রীমঙ্গলে সাংবাদিকদের সাথে সংসদ সদস্য প্রার্থী হারুনুর রশিদের মতবিনিময় সভা

১০ বছরের অধিক সময় একই স্থানে পদায়িত

প্রধান প্রকৌশলীর কারণেই সরানো যাচ্ছে না হাসান ইবনে কামালকে

Update Time : ০৪:২৬:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আক্তারের আশীর্বাদেই চট্টগ্রাম গণপূর্ত ই/এম বিভাগ ১ এ গেড়ে বসেছেন নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান ইবনে কামাল। দেশের প্রথম শ্রেণীর বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে চট্টগ্রাম গণপূর্ত ই/এম বিভাগ ১ প্রকৌশলী হাসান ইবনে কামালের দুর্নীতি আর হাসিনা সরকারের প্রীতির বিষয়ে প্রমাণ সাপেক্ষে বিস্তর সংবাদ প্রকাশ হলেও, প্রধান প্রকৌশলী শামীম আক্তার তাকে ঐ স্থান থেকে সরাতে অনিচ্ছুক। গণপূর্ত অধিদপ্তরের সৎ ও দুর্নীতিহীন কর্মকর্তারা দৈনিক বার্তাকে এমনটাই জানিয়েছেন। গুঞ্জন রয়েছে চট্টগ্রাম থেকে গণপূর্তের বড় বড় প্রকল্পের বাজেট থেকে বিশাল অংকের কমিশন নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান ইবনে কামালের মাধ্যমে নিয়মিত পেয়ে আসছেন প্রধান প্রকৌশলী শামীম আক্তার। তার মত বিশ্বস্ত লোক না পাওয়া পর্যন্ত প্রধান প্রকৌশলী তাকে কিছুতেই ঐ স্থান থেকে অন্যত্র বদলি করবেন না বলেই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

২৪ এর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার পালিয়ে গেলেও দেশের গণপূর্ত অধিদপ্তর গুলোকে আওয়ামী দোসর থেকে নিয়ন্ত্রন মুক্ত করা যায়নি। এখনো গত ১৫ বছরের আওয়ামী মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী ঠিকাদারদের মধ্যেই ভাগ বাটোয়ারা হচ্ছে সরকারের বড় বড় সকল প্রকল্পের কাজ। আর এসবের সকল কুকর্মের হোতা নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান ইবনে কামাল। সহকর্মী ও সাধারণ ঠিকাদারদের মাঝে দাপটের সাথে বলে বেড়ান, উপদেষ্টা, আমলা আর প্রধান প্রকৌশলী সব আমার পকেটে। পত্রিকায় তো শত শত নিউজ হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে। কই আমাকে সরাতে পারলো? প্রধান প্রকৌশলী যতক্ষণ না চাইবেন ততক্ষণ আমি এখানেই থাকবো। আর তিনি কখনো চাইবেন না আমাকে এখান থেকে সরাতে।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম গণপূর্ত ই/ এম বিভাগ ১ এ টানা ১০ বছরের অধিক সময় কাজ করে আসছেন বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান ইবনে কামাল। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত ও আজ্ঞাবহ প্রকৌশলী হাসান ইবনে কামালকে অন্তর্বর্তী সরকারের ১ বছরেও তার জায়গা থেকে সরানো যায়নি। এখনো তিনি চট্টগ্রামে আওয়ামী মদদপুষ্ট ঠিকাদারদের দিয়ে দেদারসে চালিয়ে যাচ্ছেন তার দুর্নীতি।

জনমনে প্রশ্ন, হাসান ইবনে কামালের খুঁটির জোর কি শেখ হাসিনার চাইতেও বেশি? নইলে এখনো তিনি কিভাবে স্বপদে বহাল থেকে দেদারসে তার দুর্নীতির কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন? নাকি ভোল পাল্টে বর্তমান সরকারের উপদেষ্টা ও আমলাদের ম্যানেজ করে নিরবে ঘাঁপটি মেরে বসে আছেন? নাকি প্রধান প্রকৌশলী শামীম আক্তার তার নিজের লাভের জন্যই তাকে এখান থেকে সরাচ্ছেন না?

বঞ্চিত যোগ্য ঠিকাদারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের প্রশ্ন, আওয়ামী লীগ আমলে দুর্নীতির যে মহোৎসব চলেছে, সে সময়টায় না হয় তার পক্ষে এটা করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়েও কিভাবে তিনি বহাল থেকে পূর্বের মতোই তার পছন্দমত আওয়ামী লীগ সমর্থিত ঠিকাদারদের মধ্যে প্রকল্পের কাজ বন্টন করছেন তা নিরূপণ করা অতীব জরুরী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী একাধিক ঠিকাদার এই প্রতিবেদককে তাদের কষ্টের কথা জানান। ব্যাপক হতাশা প্রকাশ করে তারা বলেন, চট্টগ্রাম গণপূর্ত ই/এম বিভাগে এখনো পতিত হাসিনা সরকারের মদদপুষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলী ও আরো কিছু সিনিয়র কর্মকর্তারা আওয়ামী লীগের স্থানীয় সন্ত্রাসী ঠিকাদারদের সাথে মিলেমিশ কাজ ভাগাভাগি করে নিচ্ছে। আর এতে স্পষ্ট মদদ রয়েছে প্রধান প্রকৌশলী শামীম আক্তারের। প্রকল্পের টাকা চুরি করে নিজেরা আরাম আয়েশে জীবন যাপন করছে। আর আমরা গত ১৬-১৭ বছর কাজ না পেয়ে ব্যাপক নির্যাতনের মুখে কোনরকম বেঁচে আছি। আমাদের মতো রানিং ঠিকাদারদের অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে।

তারা আরো বলেন, আওয়ামী দোসর বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান ইবনে কামালকে এখান থেকে না সরালে একদিকে যেমন প্রকল্পের টাকা চুরি হয়ে দেশের ক্ষতি হবে, অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আরো বেশি করে শক্তিশালী হয়ে উঠবে। বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, সচিব ও গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আমরা বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের কাছে আমাদের অনুরোধ চট্টগ্রাম গণপূর্ত ই/এম বিভাগের (১) নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান ইবনে কামালকে অনতিবিলম্বে বরখাস্ত করে তার দুর্নীতির তদন্তের ব্যবস্থা করা হোক।

এ বিষয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আক্তারের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে একাধিক বার কল করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। ফলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।