
পাবনার সাঁথিয়ায় বৃদ্ধা মাকে মারধর করে ফের স্বামীর বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন তার একমাত্র সন্তান শাহ আলম। সারা শরীওে ফোলা জখম নিয়ে বৃদ্ধা মা হাসপাতালে দীর্ঘ ১৩ দিন চিকিৎসা নেয়ার পর এখন তিনি স্বামীর ঘর ফেরত পেতে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। এ নিয়ে তিনি ছেলে নাতির দ্বারা মারধোরের স্বীকার হয়ে দ্বিতীয় দফায় বাড়ি থেকে বের করে দিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাঁথিয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান তিনি। অভিযুক্ত শাহ আলম উপজেলার ধোপাদহ ইউনিয়নের চকমধুপুর গ্রামের মৃত মোকছেদ আলমের ছেলে। এসময় বৃদ্ধার ছোট মেয়ে মাহফুজা আক্তার মিলি উপস্থিত ছিলেন। এসময় তিনি বলেন, আমার ভাই আমার মাকে
সংবাদ সম্মেলনে উপজেলার ধোপাদহ ইউনিয়নের চকমধুপুর গ্রামের মৃত মোকছেদ আলমের স্ত্রী সাহিদা বেগম বলেন, আমার স্বামীর ভিটায় একটি ঘর আছে। অথচ ছেলে ও নাতিরা ওই আমাকে বাড়িতে থাকতে দিতে চায় না। গত ২৫ জুন বুধবার রাতে ছেলে, ছেলের বউ, নাতি মিলে তাকে মারধর করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দেয়। কৌশলে বেঁচে গেলেও তারা ওই বৃদ্ধাকে লাথি, কিল ঘুষি মেরে সারা শরীর জখম করেছে।
পরে আমি স্থানীয়দের সহযোগীতায় থানায় এলে ওসি সাহেব আমাকে পুলিশ দিয়ে সাঁথিয়া হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে আমি ১৩ দিন চিকিৎসা নিয়ে আবারও থানা-পুলিশ উপজেলার ইউএনও, সেনা ক্যাম্প সবার কাছে অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু আজও আমি আমার স্বামীর ঘরে উঠতে পারছি না। কেউ আমার কোন বিচার করে দিচ্ছে না। তিনি বলেন, আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের নিকট আবেদন করছি আমার স্বামীর ঘর ছাড়া কোথায় থাকবো না। আমি আমার শেষ দিন পর্যন্ত স্বামীর ওই ঘরে থাকতে চাই। তাই আমার স্বামীর ঘর আমাকে ফিরিয়ে দিন।তিনি বলেন, আমার স্বামীর পেনশনের টাকা দিয়ে ওই ঘর করা। সেই ঘরে আমার জায়গা নেই। এ বয়সে কি কেউ স্বামীর ভিটা ছাড়তে চায় ?
মায়ের অভিযোগের বিষয়ে ছেলে আলম জানান, আমার মা যে কথাগুলো বলছে সেগুলো সব মিথ্যা কথা। তাকে কোন মারধোর করা হয় নাই। প্রশাসন ও গ্রামের মুরুব্বিদের নিয়ে আমার মাকে একটি ঘরে তুলে দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমার মা সেই ঘরে থাকবে না। আমি তো সবার বিচার মেনে নিয়েছি। মা যে কোনার ঘরে যেতে চায় সেই ঘরে আমার ছেলে ও ছেলের বউ থাকবে, আমি ঐ ঘর দিতে পারবো না।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিজু তামান্নাকে বার বার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এমনকি ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কোন জবাব পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে সাঁথিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আনিসুর রহমান জানান, ওই বৃদ্ধা গোল ঘরে এসে বসেছিল। ডেকে এনে জিজ্ঞাসা করলাম পরে তিনি ছেলের মারধোরের কথা বললে আমি মহিলা পুলিশ সাথে দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে দিয়ে আসি।
প্রসঙ্গত: এর আগে গত বছরের ১৫ অক্টোবর (২০২৪ইং) একইভাবে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় তার ছেলে, নাতি ও ছেলের বউ। পরে বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে প্রচার হলে প্রশাসনের নজরে আসে। পরে পুলিশ, সাংবাদিক, স্থানীয় ব্যাক্তিবর্গের সহায়তায় বৃদ্ধা মা শাহিদা বেগমকে তার ঘরে তুলে দেন।
পাবনা প্রতিবেদক 


















