ঢাকা ০৯:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo সৈয়দপুরে আর্মি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান দিবস পালিত Logo তানোরে নতুন ধানের জাত ব্রি ধান ১০৩ এর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত Logo প্রিপেইড মিটার স্থাপন বন্ধ ও মামলা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে মৌন মিছিল ও স্মারকলিপি হস্তান্তর Logo সৈয়দপুরে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার Logo শ্রীমঙ্গলে সাংবাদিকদের সাথে সংসদ সদস্য প্রার্থী হারুনুর রশিদের মতবিনিময় সভা Logo মোবাইল-ই কাল হলো নবম শ্রেণীর ছাত্রী জ্যামির, শিক্ষকের শাসন -অতঃপর বিষপানের মৃত্যু Logo রাজধানীর বাড্ডা ও শাহজাদপুরে ২ বাসে আগুন Logo রাজধানীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে একজন নিহত Logo চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ সার ব্যবসায়ীকে ১ মাসের কারাদণ্ড ও জরিমানা Logo মহাদেবপুরে আদালতের আদেশ অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা

ক্ষেপণাস্ত্রযুদ্ধে ইরানের সাফল্যের রহস্য ফাঁস করল ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এক বিশেষ প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইরান সম্প্রতি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ১২ দিনের যুদ্ধে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কৌশল প্রয়োগ করে ইসরায়েলের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ফাঁকফোকর খুঁজে পেয়েছে এবং সফলভাবে তা ভেদ করতে পেরেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘটিত এই যুদ্ধে প্রমাণ হয়েছে যে, বিশ্বসেরা বলে বিবেচিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও জটিল ও পরিকল্পিত আক্রমণের মুখে দুর্বল হতে পারে।

ইরানের সফল পরীক্ষামূলক কৌশল ও ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, ইরান তার কৌশলে পরিবর্তন আনার মাধ্যমে আক্রমণ চালিয়েছে। এই পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে —

  • উপযুক্ত সময় বেছে নিয়ে দফায় দফায় আক্রমণ,
  • বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ,
  • দূরপাল্লার উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র ফাতেহ-১ ব্যবহারে গুরুত্বারোপ
  • আক্রমণের ধরন ও সময়ে অভাবনীয় বৈচিত্র্য।

ফলে যুদ্ধের প্রথম দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকানোর ক্ষেত্রে ইসরায়েলের ব্যর্থতা ৮% থেকে বাড়তে থাকে। দ্বিতীয় পর্যায়ে গিয়ে ব্যর্থতার হার বেড়ে ১৬% হয়ে যায়। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২২ জুন—যুদ্ধ শেষের দুদিন আগে—ইরান সর্বোচ্চ সাফল্য পায়, যখন ২৭টি ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ১০টি সরাসরি ইসরায়েলে আঘাত হানে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছিল, তারা ৯০–৯৫% আক্রমণ ঠেকিয়ে দিচ্ছে, যদিও যুদ্ধবিরতির পর তারা স্বীকার করেছে যে, তাদের সফলতা হার কমে ৮৬%-এ এসে ঠেকেছে। তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েলের এই তথ্য সঠিক নয়, ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতের সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি।

বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য নতুন বার্তা

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সংঘর্ষ ভবিষ্যতের যুদ্ধের ধরন নিয়ে বড় বার্তা বহন করে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে একটি “বহু-স্তরীয় শেল্ড” হিসেবে বিবেচনা করা হলেও তা অভেদ্য নয়। র‌্যান্ড করপোরেশনের বিশ্লেষক রাফায়েল কোহেন বলেন, “কোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিখুঁত নয়—প্রতিটি ব্যবস্থাতেই কোনো না কোনো ফাঁক থাকে।”

মার্কিন প্রতিক্রিয়া: ১৭৫ বিলিয়ন ডলারের গোল্ডেন ডোম প্রকল্প

এই যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রও নিজের জন্য উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করতে বড় বাজেট ঘোষণা করেছে। ‘গোল্ডেন ডোম’ নামের একটি নতুন প্রকল্পে ১৭৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যদিও বিশাল ভৌগোলিক পরিসরের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা আরও জটিল।

ভবিষ্যতের প্রস্তুতি

প্রতিবেদনের শেষাংশে বলা হয়েছে, ইসরায়েল ও ইরান উভয়ই নিজেদের আকাশ প্রতিরক্ষা ও হামলার সক্ষমতা পুনর্মূল্যায়ন করছে। ভবিষ্যতের সম্ভাব্য যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে এসব করা হচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

সৈয়দপুরে আর্মি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান দিবস পালিত

ক্ষেপণাস্ত্রযুদ্ধে ইরানের সাফল্যের রহস্য ফাঁস করল ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল

Update Time : ০৭:৪৫:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এক বিশেষ প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইরান সম্প্রতি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ১২ দিনের যুদ্ধে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কৌশল প্রয়োগ করে ইসরায়েলের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ফাঁকফোকর খুঁজে পেয়েছে এবং সফলভাবে তা ভেদ করতে পেরেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘটিত এই যুদ্ধে প্রমাণ হয়েছে যে, বিশ্বসেরা বলে বিবেচিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও জটিল ও পরিকল্পিত আক্রমণের মুখে দুর্বল হতে পারে।

ইরানের সফল পরীক্ষামূলক কৌশল ও ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, ইরান তার কৌশলে পরিবর্তন আনার মাধ্যমে আক্রমণ চালিয়েছে। এই পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে —

  • উপযুক্ত সময় বেছে নিয়ে দফায় দফায় আক্রমণ,
  • বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ,
  • দূরপাল্লার উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র ফাতেহ-১ ব্যবহারে গুরুত্বারোপ
  • আক্রমণের ধরন ও সময়ে অভাবনীয় বৈচিত্র্য।

ফলে যুদ্ধের প্রথম দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকানোর ক্ষেত্রে ইসরায়েলের ব্যর্থতা ৮% থেকে বাড়তে থাকে। দ্বিতীয় পর্যায়ে গিয়ে ব্যর্থতার হার বেড়ে ১৬% হয়ে যায়। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২২ জুন—যুদ্ধ শেষের দুদিন আগে—ইরান সর্বোচ্চ সাফল্য পায়, যখন ২৭টি ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ১০টি সরাসরি ইসরায়েলে আঘাত হানে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছিল, তারা ৯০–৯৫% আক্রমণ ঠেকিয়ে দিচ্ছে, যদিও যুদ্ধবিরতির পর তারা স্বীকার করেছে যে, তাদের সফলতা হার কমে ৮৬%-এ এসে ঠেকেছে। তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েলের এই তথ্য সঠিক নয়, ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতের সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি।

বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য নতুন বার্তা

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সংঘর্ষ ভবিষ্যতের যুদ্ধের ধরন নিয়ে বড় বার্তা বহন করে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে একটি “বহু-স্তরীয় শেল্ড” হিসেবে বিবেচনা করা হলেও তা অভেদ্য নয়। র‌্যান্ড করপোরেশনের বিশ্লেষক রাফায়েল কোহেন বলেন, “কোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিখুঁত নয়—প্রতিটি ব্যবস্থাতেই কোনো না কোনো ফাঁক থাকে।”

মার্কিন প্রতিক্রিয়া: ১৭৫ বিলিয়ন ডলারের গোল্ডেন ডোম প্রকল্প

এই যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রও নিজের জন্য উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করতে বড় বাজেট ঘোষণা করেছে। ‘গোল্ডেন ডোম’ নামের একটি নতুন প্রকল্পে ১৭৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যদিও বিশাল ভৌগোলিক পরিসরের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা আরও জটিল।

ভবিষ্যতের প্রস্তুতি

প্রতিবেদনের শেষাংশে বলা হয়েছে, ইসরায়েল ও ইরান উভয়ই নিজেদের আকাশ প্রতিরক্ষা ও হামলার সক্ষমতা পুনর্মূল্যায়ন করছে। ভবিষ্যতের সম্ভাব্য যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে এসব করা হচ্ছে।