আগামী সপ্তাহে গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি চুক্তি হতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে অবিলম্বে অলোচনায় বসতে রাজি, হামাসের এমন বক্তব্যের পর এ মন্তব্য করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।এয়ারফোর্স ওয়ানে বসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, আগামী সপ্তাহেই গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হতে পারে। তবে বর্তমান আলোচনার কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে, সে বিষয়ে এখনো তাকে কিছু জানানো হয়নি বলে জানিয়েছে তিনি।
গাজায় নতুন একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকরে সমর্থন জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, ইসরায়েল ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য প্রস্তাবিত শর্তগুলো মেনে নিয়েছে। এই সময়ের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো স্থায়ীভাবে সংঘাতের অবসানের লক্ষ্যে আলোচনা চালিয়ে যাবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন তিনি।
ট্রাম্প হামাসকেও তার ভাষায় ‘চূড়ান্ত প্রস্তাব’ মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এবং সতর্ক করে বলেছেন, এর (নতুন যুদ্ধবিরতি চুক্তি) চেয়ে ভালো কিছু আর আসবে না; বরং পরিস্থিতি আরও খারাপই হবে (চুক্তি না মানলে হামাসের জন্য ফলাফল আরও খারাপ হবে)।
ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রস্তাবে গাজার উত্তর ও দক্ষিণ অংশ থেকে ধাপে ধাপে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এরপর বার্তা আদান-প্রদানের মাধ্যম টেলিগ্রামে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে হামাস বলেছে, মধ্যস্থতাকারীদের কাছে তারা একটি ইতিবাচক জবাব জমা দিয়েছে এবং যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনার নতুন পর্বে তাৎক্ষণিকভাবে অংশ নিতে পুরোপুরি প্রস্তুত আছে।হামাসের মিত্র ইসলামিক জিহাদও যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার পরিকল্পনায় তাদের সমর্থন জানিয়েছে। তবে সশস্ত্র সংগঠনটি একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তা চেয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবটিতে গাজার উত্তর ও দক্ষিণ অংশ থেকে ধাপে ধাপে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ফিলিস্তিনি এক কর্মকর্তা বলেছেন, হামাস জোর দিয়ে বলেছে, গত মার্চ মাসের শেষ দিকে একটি যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ার আগে (ইসরায়েলি) সেনাবাহিনী যেখানে অবস্থান করছিল, তাদের সেখানে ফিরে যেতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের প্রস্তাবে এবং কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় এ বছরের জানুয়ারিতে গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি হয়েছিল। ওই যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে পড়ার পর গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে নৃশংস ও নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের প্রস্তাবে এবং কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় এ বছরের জানুয়ারিতে গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি হয়েছিল। ওই যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে পড়ার পর গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে নৃশংস ও নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল।তাই এবার স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা ভেঙে পড়লেও ইসরায়েল যেন নতুন কোনো বিমান বা স্থল অভিযান শুরু না করে—যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এমন নিশ্চয়তা চাইছে হামাস ও মিত্র সংগঠনগুলো।
ধারণা করা হচ্ছে, এবারের প্রস্তাবে যুদ্ধ শেষ করার লক্ষ্যে আলোচনা প্রথম দিন থেকেই শুরু হবে বলে উল্লেখ আছে। যদিও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু স্পষ্ট করে একাধিকবার বলেছেন, সব জিম্মি মুক্ত না করা পর্যন্ত এবং হামাসের সামরিক ও শাসনক্ষমতা পুরোপুরি ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত গাজা যুদ্ধ শেষ করা হবে না। এদিকে নতুন যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরুর অপেক্ষার মধ্যেই ইসরায়েল গাজায় ব্যাপকভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতকাল বিকেলে জানিয়েছে, বিগত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গাজার চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে ফিলিস্তিনি তথ্যকেন্দ্র ও কুদস নিউজ নেটওয়ার্ক বলেছে, গতকাল মধ্যরাত থেকে পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছেন।