মানিকগঞ্জ-১ (ঘিওর-দৌলতপুর-শিবালয়) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) নাঈমুর রহমান দুর্জয় ৫ আগস্টের পর থেকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারিতে ছিলেন। অবশেষে বুধবার (২ জুলাই) দিবাগত রাতে রাজধানীর লালমাটিয়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে মানিকগঞ্জ ডিবি পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) রেজাউল করিম মল্লিক।
ডিআইজি রেজাউল করিম জানান, ৫ আগস্টের ঘটনার পাশাপাশি দুর্জয়ের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মানিকগঞ্জ ডিবির একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ বলেন, সাবেক এমপি দুর্জয়ের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) তাকে আদালতে হাজির করা হবে।
সূত্রমতে, দুর্জয় ৫ আগস্টের পর থেকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারিতে ছিলেন।
জানা গেছে, দুর্জয়ের বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জ পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি থেকে চার কোটি ২২ লাখ টাকা ঘুস নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে দুদকের তথ্য ভান্ডারে।
তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ১১ কোটি ২১ লাখ টাকার বেশি অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে পরিচালক আবুল হাসনাত বাদি হয়ে এই মামলাটি করেন।
এদিকে দুদকের দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, সাবেক এমপি দুর্জয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ১১ কোটি ২১ লাখ ৮১ হাজার ৭৯০ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
দুদকের অনুসন্ধানকালে তার বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জ পাওয়ার জেনারেশন থেকে চার কোটি ২২ লাখ টাকা ঘুস নেওয়ার তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে দুদকের সূত্র নিশ্চিত করেছেন। এ ছাড়া তার নিজ নামে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৩ হিসাব এবং ব্যাংকের ৯টি হিসাবে ৪৭ কোটি ১৯ লাখ ৩৭ হাজার ৬৯০ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য রয়েছে। মামলার এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও অভিযোগ রয়েছে, তার নামে পৈত্রিক বাড়ি বৈকন্ঠপুর, ঘিওর, মানিকগঞ্জে ১২ বিঘা জমি, মানিকগঞ্জ শহরে ১ তলা বাড়ি, বিভিন্ন ব্যাংকে ও ব্যবসায় বিনিয়োগসহ কোটি কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।
এর আগে, চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি ঢাকার লালমাটিয়ায় তার মালিকানাধীন ২ হাজার ৫২৩ বর্গফুট আয়তনের একটি ফ্ল্যাট, জমি ও তিনটি গাড়ি জব্দের নির্দেশ দেন ঢাকার মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ আদালত। একই আদেশে তার নামে থাকা ১২টি ব্যাংক হিসাবও জব্দ করতে বলা হয়।