ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থী ভিসা আবেদনকারীদের জন্য নতুন নির্দেশনা জারি করেছে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস। এরপর থেকেই এ নিয়ে চলছে নানা বিতর্ক।
২৬ জুন দূতাবাসের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার অ্যাফেয়ার্স বিভাগের বরাতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পোস্টে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থী বা স্টুডেন্ট ভিসার আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গোপনীয়তা ‘পাবলিক' রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাংস্কৃতিক বিনিময় ভিসার ক্ষেত্রেও এই নির্দেশনা কার্যকর হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই নির্দেশনার পর সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে আলোচনা হচ্ছে এই নির্দেশনা কি বাকস্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা বা একজন ব্যক্তির নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করে কিনা! কেউ কেউ এ নির্দেশনাকে সঠিক মনে করলেও অনেকেই সমালোচনা করেছেন। তারা মনে করছেন, এটা অবশ্যই একজন ব্যক্তির মত প্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী। মার্কিন দূতাবাসের ফেসবুক পোস্টের নিচেও অনেকে সমালোচনা করেছেন।
এই নির্দেশনার কারণে কি একজন শিক্ষার্থী ব্যক্তি স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতা বা তার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে না? এটা জানতে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের একজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, "এই নির্দেশনা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের কনস্যুলার অ্যাফেয়ার্স বিভাগ থেকে এসেছে। ফলে এ ব্যাপারে কিছু জানতে হলে তাদের মেইল করতে হবে।”
ডয়চে ভেলে এ বিষয়ে জানতে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টে মেইল পাঠালে ফিরতি মেইলে বেশ কয়েকটি পয়েন্ট তুলে ধরা হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যা বলেছে
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর বরাত দিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, "এটা বাকস্বাধীনতার ব্যাপার নয়, শিক্ষার্থী ভিসা কারো অধিকার নয়।"
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ডয়চে ভেলেকে আরো বলেছে,
* ট্রাম্প প্রশাসন আমাদের (মার্কিন) ভিসা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জাতীয় নিরাপত্তা এবং জননিরাপত্তার সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে আমাদের জাতি এবং আমাদের নাগরিকদের সুরক্ষার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে। মার্কিন ভিসা একটি বিশেষ সুবিধা, অধিকার নয়। প্রতিটি ভিসার সিদ্ধান্ত, একটি জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক সিদ্ধান্ত।
* নতুন নির্দেশিকা অনুসারে, আমরা এফ, এম, এবং জে অ-অভিবাসী শ্রেণীর সকল ছাত্র এবং এক্সচেঞ্জ (বিনিময়) দর্শনার্থী আবেদনকারীদের অনলাইন উপস্থিতিসহ একটি বিস্তৃত এবং পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া পরিচালনা করবো।
* এই যাচাই-বাছাই সহজতর করার জন্য, এফ, এম, এবং জে অ-অভিবাসী ভিসার জন্য সকল আবেদনকারীকে তাদের সকল সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলের গোপনীয়তা সেটিংস "পাবলিক" করার জন্য অনুরোধ করা হবে।
* ভিসা আবেদনকারীদের যথাযথভাবে যাচাই করা আমাদের জন্য প্রয়োজনীয়। আমাদের ভিসা নীতিগুলো সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত এবং মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা এবং জনসাধারণের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিশ্রুতিকেই তা প্রতিফলিত করে।
ডয়চে ভেলের প্রশ্নের উত্তরে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরো বলেছে, "অন্য সব দেশের মতোই ভিসার জন্য আবেদন করা (কোনো ব্যক্তির) নিজস্ব ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে, এবং কেউ যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করবেন কিনা সে সিদ্ধান্ত তারা স্বাধীনভাবেই নিতে পারেন।"