
ইসরায়েল তার ঘনিষ্ঠ মিত্র রাষ্ট্র আমেরিকার মাটিতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ইরানকে ফাঁসানোর ‘চক্রান্ত’ করেছিল বলে দাবি করেছে তেহরান টাইমস।
ইরানভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি বুধবার প্রতিবেদনে জানায়, তেহরান টাইমসের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী, আমেরিকার মাটিতে বিস্ফোরণ ঘটানোর পর ইরানের ওপর দায় চাপানোর চক্রান্তে ছিল ইসরায়েল। এর দৃশ্যত লক্ষ্য ছিল অ্যামেরিকা ও ইরানের মধ্যে পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধের উসকানি দেওয়া।
তেহরান টাইমস জানায়, ইসরায়েলের পরিকল্পনার মধ্যে ছিল অ্যামেরিকার ভেতরে ধ্বংসাত্মক কোনো ঘটনার মঞ্চায়ন এবং তথ্যপ্রমাণ নকল করে ইরানের দিকে ইঙ্গিত করা। এর উদ্দেশ্য ছিল আমেরিকান জনগণের মনোভাব পরিবর্তন করে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থায় প্ররোচনা দেওয়া।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বন্ধুপ্রতিম একটি দেশের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে ইরান চক্রান্তটি উদঘাটন করে। সম্ভাব্য হামলার কথা জেনে আমেরিকার কর্মকর্তাদের কাছে বার্তা পাঠায় ইরান। এর মাধ্যমে বিস্ফোরণের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ঠেকিয়ে দেয় মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত আশঙ্কাকে সত্যি করে ইরানে গত ১৩ জুন হামলা করে ইসরায়েল। ওই হামলার ১২ দিন পর যুদ্ধ বন্ধে তেহরান ও তেল আবিব সম্মত হয় বলে জানান প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় মঙ্গলবার। এর পরের দিন আমেরিকায় ইসরায়েলি হামলার পরিকল্পনা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে তেহরান টাইমস।
যুদ্ধবিরতির আগে রবিবার শুরুর সময়ে বি-২ বোমারু বিমান ব্যবহার করে ইরানের পরমাণু ক্ষেত্রগুলোতে হামলা চালায় আমেরিকা। ওই হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে বড় যুদ্ধের আশঙ্কা বেড়ে যায়, তবে আমেরিকার দ্রুত পিছু হটা এবং ইরান বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া না দেখানোয় সে আশঙ্কা সত্যি হয়নি।
মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশের যুদ্ধ বন্ধের জন্য অ্যামেরিকা প্রস্তাব দিয়েছিল বলে জানায় রয়টার্স।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থাটির খবরে বলা হয়, আমেরিকার প্রস্তাবের বিষয়ে ইরানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান আল থানি। তিনি ইরানের কর্মকর্তাদের আমেরিকার প্রস্তাবের বিষয়ে রাজি করান।
সূত্রটি রয়টার্সকে আরও জানায়, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানিকে ফোন করেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। ফোনে অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট কাতারের আমিরকে জানান, যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল। এ বিষয়ে তেহরানকে রাজি করাতে দোহার সাহায্য চায় তেল আবিব।
ট্রাম্পের সঙ্গে কাতারের আমিরের ওই ফোনালাপের পর মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির প্রধানমন্ত্রী কথা বলেন ইরানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে।
কাতারে থাকা আমেরিকার আল উদেইদ বিমান ঘাঁটিতে সোমবার রাতে ইরানের হামলার পর যুদ্ধরত দুটি পক্ষের চুক্তির খবর প্রকাশ হয়।
ইরান থেকে মোট ১৯টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয় বলে দাবি করে কাতার সরকার। এগুলোর মধ্যে একটি আল উদেইদ বিমান ঘাঁটিতে আঘাত করলেও কেউ হতাহত হয়নি। বাকি ১৮টি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করেছে দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
বন্ধুপ্রতিম দেশে অবস্থিত ঘাঁটিতে ইরানের এ হামলাকে ‘প্রতীকী’ আখ্যা দেন দোহা ইনস্টিটিউটের ক্রিটিক্যাল সিকিউরিটি স্টাডিজের সহকারী অধ্যাপক মুহানাদ সেলুম।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক 





















