
ইরানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই তথ্য জানিয়েছেন স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরমাণু কেন্দ্রগুলোতে হামলা চালাতে বি-টু স্পিরিট বোমারু বিমান ব্যবহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র ।
প্রশ্ন উঠছে, ইরানের হামলা চালাতে কেন এই বোমারু বিমান ব্যবহার করলো মার্কিন বিমানবাহিনী? এর কাজই বা কী?
মিজৌরির হোয়াইটম্যান বিমানঘাঁটি থেকে গুয়াম দ্বিপের দিকে উড়ে যায় ছয়টি বি-টু বম্বার্স। ফ্লাইট ট্র্যাকিং ডেটা থেকেই জানা গেলো এই তথ্য। লক্ষ্য সুদূর ইরান।
সম্প্রতি গণমাধ্যমের নজর কেড়েছে এই বিমান। বলা হচ্ছে, ভারী বোমা, বড় আকারের অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর বহনে সক্ষম বি-টু স্পিরিট বম্বার্স। এমনকি ইরানের ভূগর্ভে থাকা পারমাণবিক স্থাপনাও গুঁড়িয়ে দিতে পারে এটি। আর হলোও তাই।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরানের ফোর্দো পরমাণু কেন্দ্র ধ্বংসের জন্য বিশেষ যেই বোমাটি দরকার, তা বহন করতে পারতো একমাত্র বি-টু স্পিরিট।
এই বোমারু বিমানের পুরো নাম নরথ্রপ বি-টু স্পিরিট। একে স্টিলথ বম্বার নামেও ডাকা হয়। এর বিশেষত্ব হলো, এটি সহজে শনাক্ত করা যায় না। এছাড়া, বিমান বিধ্বংসী ব্যবস্থাও খুঁজে পায় না এর অস্তিত্ব। আর তাই সহজেই ধ্বংস করা যায় না একে। একে চালাতে দুজন পাইলটের দরকার হয়।
প্রচলিত ও থার্মোনিউক্লিয়ার বোমা বহন করতে পারে বি-টু স্পিরিট। পরিমানটাও নেহাত কম নয়। ২৩০ কেজি ওজনের ৮০টি জিপিএস গাইডেড বোমা এবং ১১০০ কেজি ওজনের ১৬টি বিএইট থ্রি পরমাণু বোমা বহনে সক্ষম এই বিমান।
৭০ এর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে স্টেলথ প্রযুক্তি নিয়ে কাজ শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৭৬ সাল নাগাদ দূরপাল্লার কৌশলগত হামলার অবস্থায় পৌঁছায় স্টেলথ প্রযুক্তি। ১৯৭৭ সালে বিষয়টি জানানো হয় তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারকে। তিনি আরও গবেষণার নির্দেশ দেন। বাতিল করেন বি-ওয়ান বম্বার্স।
১৯৭৯ সালের নির্বাচনী প্রচারণায় রোনাল্ড রিগ্যান অভিযোগ করেন, প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার প্রতিরক্ষা খাতে ব্যর্থ। পরে ১৯৮০ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়, একটি বোমারু বিমানসহ স্টেলথ বিমান তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ।
সবশেষ তথ্য অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের কাছে মোট ১৯টি বি-টু স্পিরিট আছে। একটি ২০০৮ সালে বিধ্বস্ত হয়, আরেকটি বিধ্বস্ত হয় ২০২২ সালে। ২০৩২ সাল পর্যন্ত এই বিমান ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনী।