জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগে পড়াশুনার সুযোগ (চান্স) পেয়েও অর্থ অভাবে ভর্তি হতে পারছে না মেধাবী শিক্ষার্থী হাসান আলী (২০)। এমন দারিদ্র শিক্ষার্থীর পড়াশুনা চালিয়ে নিতে কোন হৃদয় বিদারক ব্যক্তি ও সংঠনকে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন তার পরিবার।

হাসানের বাড়ি তানোর উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের বাতাসপুর গ্রামে। তার বাবা বেসারত আলী গ্রামে গ্রামে ভাংড়ি মাল ক্রয়-বিক্রয় করেন। আর মা লতিফা বেগম বাসায় সেলাই মেশিনে কাজ করে তার পড়াশুনা এতো দূর চালিয়ে গেছেন। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার পরও বাবা-মা খুশির পরিবর্তে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও শিক্ষায় খরচের কোন টাকা নেই তাদের।

বেসারত আলী ও লতিফা বেগম জানান, তাদের এমন কষ্টের কর্মজীবনে দুই সন্তানের বড় ছেলে হাসান। আর ৬ বছরের ছোট ছেলে মোহাম্মাদ হুসাইন। দুই ছেলের সংসারে অতিকষ্টে জীবন-যাপন করেন তারা। এতো কষ্টের মাঝেও সন্তানের পড়াশোনার ব্যাপারে সবসময় উৎসাহ দিয়ে গেছি। সন্তানদের কখনোই অভাব বুঝতে দেয়নি। হাসান ছোট বেলা থেকেই পড়াশুনার পাশাপাশি প্রাইভেট পড়াতো। সময় সুযোগে সে অন্যের দিন মজুরির কাজও করে। কিন্তু মেধাবী হাসানকে ভর্তি করানো নিয়ে মহাবিপদে পড়েছেন তার বাবা-মা।

মেধাবী শিক্ষার্থী হাসান আলী জানায়, আমি ছোটবেলা থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশুনা করে ভাল শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখি। বাবা-মা অনেক কষ্ট করে তার পড়াশুনার খরচ চালিয়েছেন। পড়াশোনার জন্য টাকার অভাবে আমিও বাবার সংসারে সহযোগিতার পাশাপাশি কখনও মানুষের জমিতে দিন মজুরির কাজও করেছি।

হাসান আলী আরও জানায়, আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৫৪ তম হয়েছি। ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগে পড়াশুনার সুযোগ পেয়েছি। আমার রেজাল্টে পরিবারের সবাই খুশি হয়েছেন। এখন টাকার অভাবে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবো কিনা জানিনা এ নিয়ে অনেক দুচিন্তায় পড়েছি। আগামী ৫ জুলাই ভর্তির সর্বশেষ তারিখ।

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) লিয়াকত সালমান বলেন, ওই মেধাবী শিক্ষার্থীর ব্যাপারে তিনি অবগত নন। তারপরও বিস্তারিত ঘটনা নিয়ে তাঁর দপ্তরে আবেদন করা হলে খোঁজখবর নিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে সহযোগিতা করা হবে বলে আশ্বাস দেন ইউএনও।