
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠকের পর "আলোচনা চালিয়ে যেতে" আগ্রহের কথা জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। আর কূটনৈতিক আলোচনায় রাজি থাকলেও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, "আগ্রাসন বন্ধ হলেই ইরান এ বিষয়ে বিবেচনা করবে।"
ইরান ও ইসরায়েল সংঘাত বন্ধের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় কূটনৈতিক বৈঠকে বসেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি এবং ইউরোপীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।
বৈঠক শেষে গণমাধ্যমে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট কাজা ক্যালাস বলেন, "আঞ্চলিক উত্তেজনা কারো জন্যই লাভজনক নয়, তাই আমাদের আলোচনার সুযোগ খোলা রাখা উচিত।"
তিনি জানান, উভয় পক্ষই পারমাণবিকসহ বৃহত্তর বিষয় নিয়ে আলোচনায় সম্মত হয়েছে।
ইরানের সাথে "চলমান আলোচনা" অব্যাহত রাখতে "আগ্রহী" বলে জানান যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামিও।
তিনি বলেন, "এটি একটি বিপজ্জনক মুহূর্ত এবং এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি যে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র রাখতে পারবে না"।
"আমরা ইরানকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথেও আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করছি," বলেন ল্যামি ।
[caption id="attachment_4622" align="alignnone" width="300"]
বৈঠকের পর গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী[/caption]
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার 'ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন', বলে জানান ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিন-নোয়েল ব্যারোট।
তিনি মন্তব্য করেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি কেবল আলোচনার মাধ্যমেই নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।
জেনেভা বৈঠকের পর গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচিও। তিনি বলেন, "আগ্রাসন বন্ধ হলেই ইরান এ বিষয়ে বিবেচনা করবে। আগ্রাসনকে "এই জঘন্য অপরাধের জন্য দায়ী করা হবে" বলেও মন্তব্য করেন আরাঘচি।
তিনি বলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ, এবং এর ওপর আক্রমণ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। ইরান "আত্মরক্ষার বৈধ অধিকার প্রয়োগ" অব্যাহত রাখবে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির সাথে ইউরোপীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের কূটনৈতিক বৈঠককে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের শেষ প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
[caption id="attachment_4623" align="alignnone" width="300"]
নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন যুক্তরাজ্য, ইইউ, ফ্রান্স এবং জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা[/caption]
শুক্রবার ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নিরসনে আলোচনার মাধ্যমে একটি কূটনৈতিক সমাধান খুঁজতে সেই বৈঠকেরআগে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় পৌছান জার্মানি, ফ্রান্স এবং ইইউর শীর্ষ কূটনীতিকরাও।
ওয়াশিংটন থেকে রাতের ফ্লাইটে জেনেভায় পৌঁছেছেন ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠকের আগে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন ইইউ, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।
এক সপ্তাহ আগে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত শুরুর পর এই প্রথম ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি পশ্চিমা পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মুখোমুখি হলেন। এই আলোচনায় যোগ দেওয়ার আগে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে ভাষণ দেন আরাঘচি।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানায়, জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে বক্তৃতা দেওয়ার পরই জেনেভায় অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের এই আলোচনা ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের গতিপথ নির্ধারণ করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছিল।