ঢাকা ০৪:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo স্কয়ার ফার্মারর বিরুদ্ধে ডোজ প্রতারণা ও রিপ্যাকিংয়ের অভিযোগে প্রেস কনফারেন্স শনিবার Logo ৫৭ বছরেও শেবাচিমে চালু হয়নি নিউরো ওয়ার্ড, স্ট্রোকের রোগীদের চরম ভোগান্তি Logo সৈয়দপুরে আর্মি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান দিবস পালিত Logo তানোরে নতুন ধানের জাত ব্রি ধান ১০৩ এর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত Logo প্রিপেইড মিটার স্থাপন বন্ধ ও মামলা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে মৌন মিছিল ও স্মারকলিপি হস্তান্তর Logo সৈয়দপুরে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার Logo শ্রীমঙ্গলে সাংবাদিকদের সাথে সংসদ সদস্য প্রার্থী হারুনুর রশিদের মতবিনিময় সভা Logo মোবাইল-ই কাল হলো নবম শ্রেণীর ছাত্রী জ্যামির, শিক্ষকের শাসন -অতঃপর বিষপানের মৃত্যু Logo রাজধানীর বাড্ডা ও শাহজাদপুরে ২ বাসে আগুন Logo রাজধানীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে একজন নিহত

ইসরায়েলের মিথ্যা ধরে ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্র

ইসরায়েল অতর্কিতভাবে ইরানে হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে। ইরানও পাল্টা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইরানের বিরুদ্ধে হামলা শুরুর কারণ হিসেবে ইসরায়েল দাবি করেছে, ‘ইরান দ্রুতই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে। এটা ঠেকাতে দেশটিতে হামলা চালানো প্রয়োজনীয় ছিল।’ কিন্তু ইসরায়েলের দেওয়া তথ্য মিথ্যা; বিষয়টি ধরে ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা।যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান এখনো পারমাণবিক বোমা বানানোর সক্ষমতা অর্জন থেকে অন্তত তিন বছর দূরে। চারটি স্বতন্ত্র সূত্রের বরাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ইরান এখনো সক্রিয়ভাবে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে নেই। বরং তারা মূলত পারমাণবিক গবেষণা ও জ্বালানিভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

ইসরায়েল সম্প্রতি ইরানের নাতাঞ্জ পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। হামলায় স্থাপনাটির কিছুটা ক্ষতি হলেও তেহরানের মূল ফোর্ডো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র অক্ষত রয়েছে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্দিষ্ট মার্কিন অস্ত্র এবং বিমান সহায়তা ছাড়া ফোর্ডোকে ক্ষতিগ্রস্ত করার ক্ষমতা ইসরায়েলের নেই।

মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য নীতির সাবেক কূটনীতিক ব্রেট ম্যাকগার্ক এ প্রসঙ্গে বলেন, ইসরায়েল এসব স্থাপনা অকার্যকর করতে পারে, তবে পুরোপুরি ধ্বংস করতে হলে যুক্তরাষ্ট্রকে জড়াতে হবে বা কূটনৈতিকভাবে কোনো সমঝোতা করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এ বিষয়ে তার স্পষ্ট অবস্থান জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা এতে জড়িত নই।’ তবে সংঘাতে জড়ানোর ইঙ্গিত দেন তিনি এবং বলেন, ‘দেরি হওয়ার আগেই ইরানের সংলাপে বসা উচিত।’তবে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ভিন্ন মূল্যায়নের বিষয়টি নতুন নয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ ও বেসামরিক গোয়েন্দা সংস্থা বহু বছর ধরে ইসরায়েলের সঙ্গে তথ্য ভাগাভাগি করলেও তথ্য বিশ্লেষণে তারা প্রায়ই ভিন্নমত পোষণ করে।

ট্রাম্প প্রশাসনের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড গত মার্চ মাসে কংগ্রেসে বলেছিলেন, ‘আমাদের মূল্যায়নে এখনো মনে হয় না যে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বানাচ্ছে বা সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সর্বোচ্চ নেতা খামেনেয়ি ২০০৩ সালে স্থগিত করা পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি অনুমোদন করেননি।’

কয়েক মাস আগে গ্যাবার্ডের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কতটা কাছাকাছি, সে সম্পর্কে ব্যক্তিগত অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে ট্রাম্প এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের বলেন, ‘খুব কাছাকাছি।’ নেতানিয়াহুও জানান, তাদের ও মার্কিন গোয়েন্দাদের তথ্য থেকে পরিষ্কার ধারণা পেয়েছেন যে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে ইরান।

আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থাও (আইএইএ) জানায়, ইরান এ ধরনের অস্ত্র তৈরির জন্য ইউরেনিয়াম মজুদ করেছে, যা দিয়ে নয়টি পারমাণবিক বোমা তৈরি করা যেতে পারে। তবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের পাশাপাশি বোমা তৈরির নকশা এবং ডেলিভারি সিস্টেম বা বহনের প্রযুক্তি তৈরি করাও দীর্ঘমেয়াদি ও জটিল প্রক্রিয়া।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

স্কয়ার ফার্মারর বিরুদ্ধে ডোজ প্রতারণা ও রিপ্যাকিংয়ের অভিযোগে প্রেস কনফারেন্স শনিবার

ইসরায়েলের মিথ্যা ধরে ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্র

Update Time : ০৯:১৪:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
ইসরায়েল অতর্কিতভাবে ইরানে হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে। ইরানও পাল্টা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইরানের বিরুদ্ধে হামলা শুরুর কারণ হিসেবে ইসরায়েল দাবি করেছে, ‘ইরান দ্রুতই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে। এটা ঠেকাতে দেশটিতে হামলা চালানো প্রয়োজনীয় ছিল।’ কিন্তু ইসরায়েলের দেওয়া তথ্য মিথ্যা; বিষয়টি ধরে ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা।যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান এখনো পারমাণবিক বোমা বানানোর সক্ষমতা অর্জন থেকে অন্তত তিন বছর দূরে। চারটি স্বতন্ত্র সূত্রের বরাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ইরান এখনো সক্রিয়ভাবে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে নেই। বরং তারা মূলত পারমাণবিক গবেষণা ও জ্বালানিভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

ইসরায়েল সম্প্রতি ইরানের নাতাঞ্জ পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। হামলায় স্থাপনাটির কিছুটা ক্ষতি হলেও তেহরানের মূল ফোর্ডো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র অক্ষত রয়েছে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্দিষ্ট মার্কিন অস্ত্র এবং বিমান সহায়তা ছাড়া ফোর্ডোকে ক্ষতিগ্রস্ত করার ক্ষমতা ইসরায়েলের নেই।

মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য নীতির সাবেক কূটনীতিক ব্রেট ম্যাকগার্ক এ প্রসঙ্গে বলেন, ইসরায়েল এসব স্থাপনা অকার্যকর করতে পারে, তবে পুরোপুরি ধ্বংস করতে হলে যুক্তরাষ্ট্রকে জড়াতে হবে বা কূটনৈতিকভাবে কোনো সমঝোতা করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এ বিষয়ে তার স্পষ্ট অবস্থান জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা এতে জড়িত নই।’ তবে সংঘাতে জড়ানোর ইঙ্গিত দেন তিনি এবং বলেন, ‘দেরি হওয়ার আগেই ইরানের সংলাপে বসা উচিত।’তবে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ভিন্ন মূল্যায়নের বিষয়টি নতুন নয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ ও বেসামরিক গোয়েন্দা সংস্থা বহু বছর ধরে ইসরায়েলের সঙ্গে তথ্য ভাগাভাগি করলেও তথ্য বিশ্লেষণে তারা প্রায়ই ভিন্নমত পোষণ করে।

ট্রাম্প প্রশাসনের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড গত মার্চ মাসে কংগ্রেসে বলেছিলেন, ‘আমাদের মূল্যায়নে এখনো মনে হয় না যে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বানাচ্ছে বা সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সর্বোচ্চ নেতা খামেনেয়ি ২০০৩ সালে স্থগিত করা পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি অনুমোদন করেননি।’

কয়েক মাস আগে গ্যাবার্ডের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কতটা কাছাকাছি, সে সম্পর্কে ব্যক্তিগত অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে ট্রাম্প এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের বলেন, ‘খুব কাছাকাছি।’ নেতানিয়াহুও জানান, তাদের ও মার্কিন গোয়েন্দাদের তথ্য থেকে পরিষ্কার ধারণা পেয়েছেন যে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে ইরান।

আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থাও (আইএইএ) জানায়, ইরান এ ধরনের অস্ত্র তৈরির জন্য ইউরেনিয়াম মজুদ করেছে, যা দিয়ে নয়টি পারমাণবিক বোমা তৈরি করা যেতে পারে। তবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের পাশাপাশি বোমা তৈরির নকশা এবং ডেলিভারি সিস্টেম বা বহনের প্রযুক্তি তৈরি করাও দীর্ঘমেয়াদি ও জটিল প্রক্রিয়া।