ঢাকা ১২:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo দৈনিক বার্তার অনলাইন ও মাল্টিমিডিয়ার প্রকাশনার সফলতা কামনা করলেন রোকেয়া রাজ্জাক জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন’-এর প্রতিষ্ঠাতা সিদ্দিকুর রহমান হাওলাদার Logo পাবনা-৩ আসনে বিএনপির জনসমুদ্রে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবী Logo স্কয়ার ফার্মারর বিরুদ্ধে ডোজ প্রতারণা ও রিপ্যাকিংয়ের অভিযোগে প্রেস কনফারেন্স শনিবার Logo ৫৭ বছরেও শেবাচিমে চালু হয়নি নিউরো ওয়ার্ড, স্ট্রোকের রোগীদের চরম ভোগান্তি Logo সৈয়দপুরে আর্মি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান দিবস পালিত Logo তানোরে নতুন ধানের জাত ব্রি ধান ১০৩ এর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত Logo প্রিপেইড মিটার স্থাপন বন্ধ ও মামলা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে মৌন মিছিল ও স্মারকলিপি হস্তান্তর Logo সৈয়দপুরে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার Logo শ্রীমঙ্গলে সাংবাদিকদের সাথে সংসদ সদস্য প্রার্থী হারুনুর রশিদের মতবিনিময় সভা Logo মোবাইল-ই কাল হলো নবম শ্রেণীর ছাত্রী জ্যামির, শিক্ষকের শাসন -অতঃপর বিষপানের মৃত্যু
সরেজমিন প্রতিবেদন

ইপিজেডে শ্রমিকদের ডায়রিয়া থামছেই না,ব্যাপক আকার ধারণ, ৪ দিনে ছয় শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ

পাবনার ঈশ্বরদীতে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় (ইপিজেড) বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকের ডায়রিয়া ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। আজ রবিবার (১ জুন ) রাত্রি বারোটা থেকে আজ বিকাল ৪ টা পর্যন্ত নতুন করে ১১৮ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ইপিজেড এর শ্রমিক রোগী ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও পার্শ্ববর্তী লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নতুন করে ৮৬ জন এবং লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৩২ জন ভর্তি হয়েছেন। ডায়রিয়ায় আক্রান্তরা সবাই ঈশ্বরদী ইপিজেডের রেনেসাঁ,ডেনিম, ভিনটেজ (এবা) নাকানো ইন্টারন্যাশনাল বিডি, স্টেলা হেয়ার সহ অন্যান্য কয়েকটি কোম্পানির শ্রমিক। ইতিমধ্যেই ছয় শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈশ্বরদী ইপিজেডে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত অসুস্থরা ঈশ্বরদী ইপিজেডের মেডিকেল সেন্টার ও ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পার্শ্ববর্তী লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে আকর্ষিক ভাবে রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসক ও নার্স সংকটের কারণে একসঙ্গে এত রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তব্যরত ডাক্তার ও নার্সদের। গুরুতর অসুস্থতাদের কয়েক জনকে পাবনা সদর হাসপাতাল ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শ্রমিকরা বলছেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে খাওয়ার পরে ইপিজেডে সরবরাহ করা পানি পান করে তাদের ভয়াবহ এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে ইপিজেড কর্তৃপক্ষ বলছেন, শ্রমিকরা তাদের জন্য রাখা বিশুদ্ধ পানি পান করেন না।
শ্রমিকরা জানান, বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ইপিজেডে দুপুরে খাওয়ার পর থেকে পেটব্যথা, পাতলা পায়খানা, জ্বর, বমি ও মাথাব্যথায় একে একে অসুস্থ হতে শুরু করেন তারা। তাৎক্ষণিকভাবে কিছু শ্রমিক ছুটি নিয়ে বাড়ি চলে গেলেও পরে মধ্যরাত থেকে শুক্রবার (৩০ মে) এবং শনিবার (৩১ মে) বিকাল পর্যন্ত শত শত শ্রমিক ডায়রিয়াজনিত সমস্যা নিয়ে চিকিৎসা নিতে ঈশ্বরদী হাসপাতাল ও ইপিজেডের মেডিকেল সেন্টার এবং পার্শ্ববর্তী লালপুর হাসপাতালে যান। অনেকে আবার প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে যান।
সরেজমিনে রবিবার ( ১ জুন) বিকালে ঈশ্বরদী হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে তিল ধারণের জায়গা নেই। বেড সংকুলান না হওয়ায় স্যালাইন লাগিয়ে রোগীরা বারান্দা, করিডোরে ও সিঁড়িতে শুয়ে আছেন।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ( ২৯ মে) বিকেল থেকে রবিবার ( ১ জুন) বিকাল ৪ টা পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মোট ৩২৯ জন ইপিজেডের ডায়রিয়া আক্রান্ত শ্রমিক রোগী ভর্তি হয়েছেন। পার্শ্ববর্তী লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে রোববার বিকাল ৪ টা পর্যন্ত ৯৫ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ইপিজেডের শ্রমিক ভর্তি হয়।এর বাইরেও অনেকে আবার হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে আউটডোরে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে যান।
ঈশ্বরদী ইপিজেড এর চিকিৎসক ফয়সাল হাসান বলেন এটা ডায়রিয়ার মৌসুম। বছরে দুইবার ডায়রিয়া হওয়া স্বাভাবিক। এতে ভয়ের কোন কারণ নেই। হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বেশি খারাপ অবস্থা হলে তাদেরকে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র, পাবনা সদর হাসপাতাল ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।
এদিকে ইপিজেডের মেডিকেল সেন্টারে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ২৩১ জন এবং ৩১ মে বিকাল পর্যন্ত ৩৫৫ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। ২৯ মে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে রোববার পহেলা জুন বিকেল চারটা পর্যন্ত ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ইপিজেডের নতুন শ্রমিক ভর্তি হয়েছেন ২৩৪ জন। অন্যদিকে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ইপিজেডের শ্রমিক ভর্তি হয়েছেন ৯৫ জন।

রেনেসাঁ কোম্পানির শ্রমিক বিটন আলী জানান, শুধু তাদের কোম্পানিরই প্রায় দুই শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছেন।
. রোববার বিকেলে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বারান্দায় শুয়ে সেলাইন লাগিয়ে আছেন স্টেলা হিয়ার কোম্পানির শ্রমিক ও সাড়া ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা শারমিন। তিনি জানান, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তিনি গত দুইদিন ধরে এখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ঈশ্বরদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আর এম ও ) ডাক্তার মোঃ শাহেদুল ইসলাম শিশির বলেন, পানিতে পয়জনিক জনিত কারণে ডায়রিয়া হয়েছে।
অন্যদিকে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আরএমও ডাক্তার শামীম বলেন, পানি সংক্রমণের কারণেই শ্রমিকদের এভাবে ডায়রিয়া হয়েছে। ইপিজেডের ডায়রিয়ায় আক্রান্তরা এখনো আসছেন চিকিৎসা নিতে। চিকিৎসক ও নার্সরা রোগীদের সেবা দিতে হিমসিম খাচ্ছেন। সেলাইনের সংকট দেখা দিলে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মকর্তা সেনাবাহিনী,ফায়ার ব্রিগেডসহ বিভিন্ন উৎস থেকে স্যালাইন সংগ্রহ করায় বর্তমানে সেলাইয়ের সংকট নাই।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আলী এহসান বলেন, ইপিজেডে খাবারের যে সাপ্লাই পানি রয়েছে সেখান থেকে পয়জনিং হয়েছে বলে ধারণা করছেন।
তিনি বলেন, হাসপাতালে আসা এত সংখ্যক রোগী বেড না থাকায় বারান্দা, করিডোর এমনকি সিঁড়িতেও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক এবিএম শহীদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনা অত্যান্ত বিব্রতকর। তিনি বলেন ঈশ্বরদী ইপিজেডে প্রায় বিশ হাজার শ্রমিক কাজ করে। তাদের সঙ্গে আমরাও সাপ্লাইয়ের পানি পান করি। তারপরও পানি সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো পাঠানো হয়েছে। আক্রান্ত শ্রমিকদের সব টেস্ট ও ট্রিটমেন্ট ইপিজেড মেডিকেল সেন্টার থেকে করা হবে। আক্রান্তরা যথানিয়মে মেডিকেল লিভ পাবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

দৈনিক বার্তার অনলাইন ও মাল্টিমিডিয়ার প্রকাশনার সফলতা কামনা করলেন রোকেয়া রাজ্জাক জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন’-এর প্রতিষ্ঠাতা সিদ্দিকুর রহমান হাওলাদার

সরেজমিন প্রতিবেদন

ইপিজেডে শ্রমিকদের ডায়রিয়া থামছেই না,ব্যাপক আকার ধারণ, ৪ দিনে ছয় শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ

Update Time : ১২:১১:৩৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫

পাবনার ঈশ্বরদীতে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় (ইপিজেড) বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকের ডায়রিয়া ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। আজ রবিবার (১ জুন ) রাত্রি বারোটা থেকে আজ বিকাল ৪ টা পর্যন্ত নতুন করে ১১৮ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ইপিজেড এর শ্রমিক রোগী ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও পার্শ্ববর্তী লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নতুন করে ৮৬ জন এবং লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৩২ জন ভর্তি হয়েছেন। ডায়রিয়ায় আক্রান্তরা সবাই ঈশ্বরদী ইপিজেডের রেনেসাঁ,ডেনিম, ভিনটেজ (এবা) নাকানো ইন্টারন্যাশনাল বিডি, স্টেলা হেয়ার সহ অন্যান্য কয়েকটি কোম্পানির শ্রমিক। ইতিমধ্যেই ছয় শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈশ্বরদী ইপিজেডে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত অসুস্থরা ঈশ্বরদী ইপিজেডের মেডিকেল সেন্টার ও ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পার্শ্ববর্তী লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে আকর্ষিক ভাবে রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসক ও নার্স সংকটের কারণে একসঙ্গে এত রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তব্যরত ডাক্তার ও নার্সদের। গুরুতর অসুস্থতাদের কয়েক জনকে পাবনা সদর হাসপাতাল ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শ্রমিকরা বলছেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে খাওয়ার পরে ইপিজেডে সরবরাহ করা পানি পান করে তাদের ভয়াবহ এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে ইপিজেড কর্তৃপক্ষ বলছেন, শ্রমিকরা তাদের জন্য রাখা বিশুদ্ধ পানি পান করেন না।
শ্রমিকরা জানান, বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ইপিজেডে দুপুরে খাওয়ার পর থেকে পেটব্যথা, পাতলা পায়খানা, জ্বর, বমি ও মাথাব্যথায় একে একে অসুস্থ হতে শুরু করেন তারা। তাৎক্ষণিকভাবে কিছু শ্রমিক ছুটি নিয়ে বাড়ি চলে গেলেও পরে মধ্যরাত থেকে শুক্রবার (৩০ মে) এবং শনিবার (৩১ মে) বিকাল পর্যন্ত শত শত শ্রমিক ডায়রিয়াজনিত সমস্যা নিয়ে চিকিৎসা নিতে ঈশ্বরদী হাসপাতাল ও ইপিজেডের মেডিকেল সেন্টার এবং পার্শ্ববর্তী লালপুর হাসপাতালে যান। অনেকে আবার প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে যান।
সরেজমিনে রবিবার ( ১ জুন) বিকালে ঈশ্বরদী হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে তিল ধারণের জায়গা নেই। বেড সংকুলান না হওয়ায় স্যালাইন লাগিয়ে রোগীরা বারান্দা, করিডোরে ও সিঁড়িতে শুয়ে আছেন।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ( ২৯ মে) বিকেল থেকে রবিবার ( ১ জুন) বিকাল ৪ টা পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মোট ৩২৯ জন ইপিজেডের ডায়রিয়া আক্রান্ত শ্রমিক রোগী ভর্তি হয়েছেন। পার্শ্ববর্তী লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে রোববার বিকাল ৪ টা পর্যন্ত ৯৫ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ইপিজেডের শ্রমিক ভর্তি হয়।এর বাইরেও অনেকে আবার হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে আউটডোরে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে যান।
ঈশ্বরদী ইপিজেড এর চিকিৎসক ফয়সাল হাসান বলেন এটা ডায়রিয়ার মৌসুম। বছরে দুইবার ডায়রিয়া হওয়া স্বাভাবিক। এতে ভয়ের কোন কারণ নেই। হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বেশি খারাপ অবস্থা হলে তাদেরকে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র, পাবনা সদর হাসপাতাল ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।
এদিকে ইপিজেডের মেডিকেল সেন্টারে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ২৩১ জন এবং ৩১ মে বিকাল পর্যন্ত ৩৫৫ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। ২৯ মে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে রোববার পহেলা জুন বিকেল চারটা পর্যন্ত ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ইপিজেডের নতুন শ্রমিক ভর্তি হয়েছেন ২৩৪ জন। অন্যদিকে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ইপিজেডের শ্রমিক ভর্তি হয়েছেন ৯৫ জন।

রেনেসাঁ কোম্পানির শ্রমিক বিটন আলী জানান, শুধু তাদের কোম্পানিরই প্রায় দুই শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছেন।
. রোববার বিকেলে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বারান্দায় শুয়ে সেলাইন লাগিয়ে আছেন স্টেলা হিয়ার কোম্পানির শ্রমিক ও সাড়া ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা শারমিন। তিনি জানান, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তিনি গত দুইদিন ধরে এখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ঈশ্বরদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আর এম ও ) ডাক্তার মোঃ শাহেদুল ইসলাম শিশির বলেন, পানিতে পয়জনিক জনিত কারণে ডায়রিয়া হয়েছে।
অন্যদিকে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আরএমও ডাক্তার শামীম বলেন, পানি সংক্রমণের কারণেই শ্রমিকদের এভাবে ডায়রিয়া হয়েছে। ইপিজেডের ডায়রিয়ায় আক্রান্তরা এখনো আসছেন চিকিৎসা নিতে। চিকিৎসক ও নার্সরা রোগীদের সেবা দিতে হিমসিম খাচ্ছেন। সেলাইনের সংকট দেখা দিলে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মকর্তা সেনাবাহিনী,ফায়ার ব্রিগেডসহ বিভিন্ন উৎস থেকে স্যালাইন সংগ্রহ করায় বর্তমানে সেলাইয়ের সংকট নাই।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আলী এহসান বলেন, ইপিজেডে খাবারের যে সাপ্লাই পানি রয়েছে সেখান থেকে পয়জনিং হয়েছে বলে ধারণা করছেন।
তিনি বলেন, হাসপাতালে আসা এত সংখ্যক রোগী বেড না থাকায় বারান্দা, করিডোর এমনকি সিঁড়িতেও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক এবিএম শহীদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনা অত্যান্ত বিব্রতকর। তিনি বলেন ঈশ্বরদী ইপিজেডে প্রায় বিশ হাজার শ্রমিক কাজ করে। তাদের সঙ্গে আমরাও সাপ্লাইয়ের পানি পান করি। তারপরও পানি সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো পাঠানো হয়েছে। আক্রান্ত শ্রমিকদের সব টেস্ট ও ট্রিটমেন্ট ইপিজেড মেডিকেল সেন্টার থেকে করা হবে। আক্রান্তরা যথানিয়মে মেডিকেল লিভ পাবে।