বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ দেশে বর্তমানে সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলোর সবাই দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কারের বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার বিষয়েও কারো দ্বিমত নেই। তবে সংবিধান সংস্কারসহ বেশকিছু ক্ষেত্রে এখনও দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ।
সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম দফার সংলাপ শেষে সোমবার সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
"এর মধ্যে বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণের কাঠামো, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠন, একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কতবার নির্বাচিত হতে পারবেন, একজন সংসদ সদস্য কতগুলো পদে থাকতে পারবেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া কী হবে, সংবিধান সংশোধন প্রক্রিয়া কী হবে- এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো অমীমাংসিত থেকে গেছে," সাংবাদিকদের বলেন ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ।
সংবিধান সংস্কারে ঠিক কোন কোন বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে, সেটি নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এই সহ-সভাপতি বলেন, "সংবিধানে রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে 'সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ এবং গণতন্ত্র' অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবে 'বহুত্ববাদ' না রাখার ব্যাপারে অধিকাংশ দল মতামত দিয়েছে। অন্য চারটি মূলনীতির ব্যাপারে এক ধরনের ঐকমত্য আছে। তবে অনেক দল এই চারটির বাইরেও অন্যান্য বিষয় যুক্ত করার কথা বলেছে।"
এছাড়া দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা গঠনের ব্যাপারে অধিকাংশ দল নীতিগতভাবে একমত হয়েছে বলে জানান তিনি। কিছু দল অবশ্য এককক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা বহাল রাখার পক্ষে মত দিয়েছে।
"নিম্নকক্ষে নারীদের জন্য ১০০ আসন সংরক্ষণের প্রশ্নে এক ধরনের ঐকমত্য রয়েছে দলগুলোর মধ্যে। তবে এর পদ্ধতি কী হবে তা নিয়ে মতভিন্নতা রয়েছে"
“আর সংবিধানের ৪৮-(ক) অনুচ্ছেদ যা কার্যত রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা নির্ধারণ করে, তা সংশোধনের ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য কীভাবে হবে, সেই প্রশ্নে ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে,” বলেন আলী রীয়াজ।