ঢাকা ০২:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo স্কয়ার ফার্মারর বিরুদ্ধে ডোজ প্রতারণা ও রিপ্যাকিংয়ের অভিযোগে প্রেস কনফারেন্স শনিবার Logo ৫৭ বছরেও শেবাচিমে চালু হয়নি নিউরো ওয়ার্ড, স্ট্রোকের রোগীদের চরম ভোগান্তি Logo সৈয়দপুরে আর্মি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান দিবস পালিত Logo তানোরে নতুন ধানের জাত ব্রি ধান ১০৩ এর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত Logo প্রিপেইড মিটার স্থাপন বন্ধ ও মামলা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে মৌন মিছিল ও স্মারকলিপি হস্তান্তর Logo সৈয়দপুরে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার Logo শ্রীমঙ্গলে সাংবাদিকদের সাথে সংসদ সদস্য প্রার্থী হারুনুর রশিদের মতবিনিময় সভা Logo মোবাইল-ই কাল হলো নবম শ্রেণীর ছাত্রী জ্যামির, শিক্ষকের শাসন -অতঃপর বিষপানের মৃত্যু Logo রাজধানীর বাড্ডা ও শাহজাদপুরে ২ বাসে আগুন Logo রাজধানীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে একজন নিহত

চাঁপাইনবাবগঞ্জের কথিত সাংবাদিক সোহেল আমান গ্রেফতার

কথিত ও ভূঁইফোঁড় সাংবাদিক সোহেল আমান আর্জেন্ট পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিষ্ফোরক, চাঁদাবাজীসহ বেশ কিছু মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তার অন্যায় আবদার ও সাজানো মামলার তদবির না শোনায় সম্প্রতি পুলিশকে নিয়ে নানান বাজে কথাবার্তা সামাজিক ফেসবুকে পোষ্ট করেন কথিত ও ভূঁইফোঁড় সাংবাদিক সোহেল আমান আর্জেন্ট।

অন্যদিকে, সাংবাদিকতার ক্ষমতা ও চাপ দিয়ে তার (সোহেল আমান আর্জেন্ট) বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলো প্রত্যাহার বা রেকর্ড না করার জন্য পুলিশকে নানাভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। কিন্তু তার তার অন্যায় আবদার ও সাজানো মামলার তদবির না শোনায় জেলার পুলিশ সুপার, গোমাস্তাপুর ও নাচোল থানার অফিসার ইনচার্জদের নিয়ে নানান আজে-বাজে কথা সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে লিখে বিতর্কের সৃষ্টি করে। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকলেও পুলিশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এসব করতে থাকে ‘ক্রাইম তালাশ প্রতিদিন’ নামের ঢাকা থেকে প্রকাশিত (রেজিষ্ট্রেশন বিহীন) একটি অনলাইন এর সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে।

অবশেষে রবিবার ২৫ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ ও রাজশাহী পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে কথিত ও ভূঁইফোঁড় সাংবাদিক সোহেল আমান আর্জেন্ট কে রাজশাহী মহানগরের রাজপাড়া থানার কাজিহাটা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। সোমবার সোহেল আমান আর্জেন্ট কে আদালতে তোলা হয় এবং তাকে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়। শুনানী শেষে বিজ্ঞ আদালত রিমান্ড না মুঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার নয়াদিয়াড়ী গ্রামের মৃত আমানুল্লাহ আমান এর ছেলে সোহেল আমান আর্জেন্ট (৪৫) দীর্ঘদিন থেকেই বিভিন্ন ব্যবসার সাথে জড়িত। কিন্তু সোহেল আমান আর্জেন্ট প্রায় ১ যুগ আগে থেকেই বিভিন্ন নেশার সাথে জড়িয়ে যায়। তাঁর নেশা করার বেশ কিছু ছবি এবং ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুকে) ছড়িয়ে পড়ে। অন্যদিকে, সোহেল আমান আর্জেন্ট এর সাথে তাদের পারিবারিক জমি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয় তার চাচা, চাচাতো ভাইসহ এলাকার বেশকিছু মানুষের সাথে। প্রতিপক্ষ চাচা, চাচাতো ভাইসহ অন্যান্যদের ঘায়েল করতে এবং ফাঁসাতে নানা কৌশল শুরু করে আর্জেন্ট। সাজানো ঘটনায় মামলা দায়েরও করে। পরে সেই মামলায় পুলিশ তদন্ত সাপেক্ষে ফাইনাল রিপোর্ট দেয়।

পুলিশের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখা।

এদিকে, ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানের পরই নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে নানাভাবে বিভিন্ন জনকে ভয়ভীতি ও ক্ষমতা দেখাতে শুরু করে সোহেল আমান আর্জেন্ট। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়ে। বিএনপি পরিবারের হওয়ায় স্বৈরাচার সরকার পতনের পর নিজেকে বিশাল মাপের নেতা ও সাংবাদিক উপস্থাপন করতে থাকে। বিশাল ক্ষমতার মানুষ হিসেবে পরিচয় দিয়ে এলাকার মানুষকে নানাভাবে অতিষ্ট করে তোলে। এছাড়া পরবর্তীতে আবারও ষড়যন্ত্র করে প্রতিপক্ষ কে ফাঁসাতে সাজানো ঘটনা নিয়ে মামলা দায়ের করে।

পুলিশ তদন্ত করে মামলা নেয়ার জন্য বললে পুলিশের উপর ক্ষিপ্ত হয় সোহেল আমান আর্জেন্ট। মামলা না নিলে পুলিশের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন করে বেকায়দায় ফেলারও হুমকি দেয় সোহেল আমান আর্জেন্ট। সে নিজেকে একজন সিনিয়র এবং বড় মাপের সাংবাদিক বলেও প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। সাংবাদিক হিসেবে ক্ষমতার দম্ভে সোহেল আমান আর্জেন্ট পুলিশের বিভিন্ন পদের কর্মকর্তাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরন করতে থাকে। মোবাইলে ফোন করে নানাভাবে নিজেকে বিশাল কিছু ভাবাতে চায় সোহেল আমান।

কিন্তু পুলিশ তাঁর এসব কথার কোন মূল্যায়ন না করায় এবং তার কথামতো মামলা নেয়া বা না নেয়ার বিষয়টি না শুনলে শুরু হয় তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুলিশ কে নিয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট এবং মনগড়া লেখালেখি। একপর্যায়ে অশালিন ভাষায় লিখতে থাকে পুলিশ সুপার, ওসিসহ বিভিন্ন স্তরের পুলিশের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি লেখালেখির মাত্রা আরও বেড়ে যায়। তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলা থাকলেও সে বিষয়টিও সে তোয়াক্কা করেনি। অবশেষে পুলিশ তার বিরুদ্ধে থাকা মামলায় তাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে।
জেলা পুলিশ সুত্র সোমবার বিকেলে এক প্রেসনোটে জানায়, মোঃ সোহেল আমান আর্জেন্ট (৪৫), পিতা-মৃত আমানুল্লাহ আমান, সাং-নয়াদিয়ারী, থানা-গোমস্তাপুর, জেলা-চাপাইনবাবগঞ্জ এর জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে চাচাতো ভাইসহ গ্রামবাসীর সাথে বিরোধের জেরে তার বিরুদ্ধের নাচোল ও গোমস্তাপুর থানায় ০৮(আট) টি নিয়মিত মামলা এবং ততোধিক জিডি হয় এবং তদন্তাধীন আছে।

গত ইং-২৫/০৫/২০২৫ তারিখে নাচোল থানার মামলা নং-১৮ তাং-২৫/০৫/২০২৫ইং, ধারা-১৪৩/৩২৩/৩০৭/৫০৬/১১৪ তৎসহ ৩/৫/৬ ঞযব ঊীঢ়ষড়ংরাব ঝঁনংঃধহপবং অপঃ, ১৯০৮ মামলা রুজু হয়। মোঃ সোহেল আমান আর্জেন্ট উক্ত মামলার এজাহার নামীয় বিবাদী। মামলা রুজু হওয়ার পরে ২৫/০৫/২০২৫ খ্রি. দিবাগত রাতে নাচোল থানা পুলিশ ও ডিবি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে রাজশাহী মহানগরের রাজপাড়া থানার কাজিহাটা এলাকা হতে গ্রেফতার করে। তাকে সোমবার ২৬/০৫/২০২৫ খ্রি. বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ এন এম ওয়াসিম ফিরোজ বলেন, সোহেল আমান (আর্জেন্ট) এর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকায় রাজশাহী মেট্রো পলিটন পুলিশের সহযোগিতায় নাচোল থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী এ্যাড. মোঃ নুরুল ইসলাম সেন্টুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মামলার তদন্ত কারী কর্মকর্তা আসামি সোহেল আমান আর্জেন্টকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে। শুনানী শেষে বিজ্ঞ আদালত রিমান্ড না মুঞ্জুর করেন এবং জেল-হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। জামিন বিষয়ে আগামীতে আবেদন করা হবে বলে জানান তিনি।

“এমন সব কথিত ও ভূঁইফোঁড় সাংবাদিক পরিচয়দানকারীদের জন্য জেলায় প্রকৃত ও পেশাদার সাংবাদিকদের প্রাইশই বিব্রত ও বিতর্কের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। জেলায় কথিত ও ভূঁইফোঁড় সাংবাদিক সোহেল আমান আর্জেন্ট এর মতো আরও কিছু ব্যক্তি রয়েছেন, যাঁরা প্রকৃত সাংবাদিকতা না করে কোন একটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র নিয়ে জেলায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।

সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করে সুবিধা ভোগ করছেন। এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের সাংবাদিক সাজিয়ে সাংবাদিকতা পেশাকে ভুলুন্ঠিত করছেন এবং কলুশিত করছেন। “এমন টায় মনে হচ্ছে, সাংবাদিকতার একটি কার্ড বা পেশা যেন, একটি নিরাপত্তা কার্ড”। এসব অপেশাদার সাংবাদিক বা ভূঁইফোঁড় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় এবং কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন প্রকৃত ও পেশাদার সাংবাদিকবৃন্দ”।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

স্কয়ার ফার্মারর বিরুদ্ধে ডোজ প্রতারণা ও রিপ্যাকিংয়ের অভিযোগে প্রেস কনফারেন্স শনিবার

চাঁপাইনবাবগঞ্জের কথিত সাংবাদিক সোহেল আমান গ্রেফতার

Update Time : ১১:৩৮:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫

কথিত ও ভূঁইফোঁড় সাংবাদিক সোহেল আমান আর্জেন্ট পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিষ্ফোরক, চাঁদাবাজীসহ বেশ কিছু মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তার অন্যায় আবদার ও সাজানো মামলার তদবির না শোনায় সম্প্রতি পুলিশকে নিয়ে নানান বাজে কথাবার্তা সামাজিক ফেসবুকে পোষ্ট করেন কথিত ও ভূঁইফোঁড় সাংবাদিক সোহেল আমান আর্জেন্ট।

অন্যদিকে, সাংবাদিকতার ক্ষমতা ও চাপ দিয়ে তার (সোহেল আমান আর্জেন্ট) বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলো প্রত্যাহার বা রেকর্ড না করার জন্য পুলিশকে নানাভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। কিন্তু তার তার অন্যায় আবদার ও সাজানো মামলার তদবির না শোনায় জেলার পুলিশ সুপার, গোমাস্তাপুর ও নাচোল থানার অফিসার ইনচার্জদের নিয়ে নানান আজে-বাজে কথা সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে লিখে বিতর্কের সৃষ্টি করে। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকলেও পুলিশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এসব করতে থাকে ‘ক্রাইম তালাশ প্রতিদিন’ নামের ঢাকা থেকে প্রকাশিত (রেজিষ্ট্রেশন বিহীন) একটি অনলাইন এর সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে।

অবশেষে রবিবার ২৫ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ ও রাজশাহী পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে কথিত ও ভূঁইফোঁড় সাংবাদিক সোহেল আমান আর্জেন্ট কে রাজশাহী মহানগরের রাজপাড়া থানার কাজিহাটা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। সোমবার সোহেল আমান আর্জেন্ট কে আদালতে তোলা হয় এবং তাকে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়। শুনানী শেষে বিজ্ঞ আদালত রিমান্ড না মুঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার নয়াদিয়াড়ী গ্রামের মৃত আমানুল্লাহ আমান এর ছেলে সোহেল আমান আর্জেন্ট (৪৫) দীর্ঘদিন থেকেই বিভিন্ন ব্যবসার সাথে জড়িত। কিন্তু সোহেল আমান আর্জেন্ট প্রায় ১ যুগ আগে থেকেই বিভিন্ন নেশার সাথে জড়িয়ে যায়। তাঁর নেশা করার বেশ কিছু ছবি এবং ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুকে) ছড়িয়ে পড়ে। অন্যদিকে, সোহেল আমান আর্জেন্ট এর সাথে তাদের পারিবারিক জমি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয় তার চাচা, চাচাতো ভাইসহ এলাকার বেশকিছু মানুষের সাথে। প্রতিপক্ষ চাচা, চাচাতো ভাইসহ অন্যান্যদের ঘায়েল করতে এবং ফাঁসাতে নানা কৌশল শুরু করে আর্জেন্ট। সাজানো ঘটনায় মামলা দায়েরও করে। পরে সেই মামলায় পুলিশ তদন্ত সাপেক্ষে ফাইনাল রিপোর্ট দেয়।

পুলিশের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখা।

এদিকে, ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানের পরই নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে নানাভাবে বিভিন্ন জনকে ভয়ভীতি ও ক্ষমতা দেখাতে শুরু করে সোহেল আমান আর্জেন্ট। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়ে। বিএনপি পরিবারের হওয়ায় স্বৈরাচার সরকার পতনের পর নিজেকে বিশাল মাপের নেতা ও সাংবাদিক উপস্থাপন করতে থাকে। বিশাল ক্ষমতার মানুষ হিসেবে পরিচয় দিয়ে এলাকার মানুষকে নানাভাবে অতিষ্ট করে তোলে। এছাড়া পরবর্তীতে আবারও ষড়যন্ত্র করে প্রতিপক্ষ কে ফাঁসাতে সাজানো ঘটনা নিয়ে মামলা দায়ের করে।

পুলিশ তদন্ত করে মামলা নেয়ার জন্য বললে পুলিশের উপর ক্ষিপ্ত হয় সোহেল আমান আর্জেন্ট। মামলা না নিলে পুলিশের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন করে বেকায়দায় ফেলারও হুমকি দেয় সোহেল আমান আর্জেন্ট। সে নিজেকে একজন সিনিয়র এবং বড় মাপের সাংবাদিক বলেও প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। সাংবাদিক হিসেবে ক্ষমতার দম্ভে সোহেল আমান আর্জেন্ট পুলিশের বিভিন্ন পদের কর্মকর্তাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরন করতে থাকে। মোবাইলে ফোন করে নানাভাবে নিজেকে বিশাল কিছু ভাবাতে চায় সোহেল আমান।

কিন্তু পুলিশ তাঁর এসব কথার কোন মূল্যায়ন না করায় এবং তার কথামতো মামলা নেয়া বা না নেয়ার বিষয়টি না শুনলে শুরু হয় তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুলিশ কে নিয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট এবং মনগড়া লেখালেখি। একপর্যায়ে অশালিন ভাষায় লিখতে থাকে পুলিশ সুপার, ওসিসহ বিভিন্ন স্তরের পুলিশের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি লেখালেখির মাত্রা আরও বেড়ে যায়। তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলা থাকলেও সে বিষয়টিও সে তোয়াক্কা করেনি। অবশেষে পুলিশ তার বিরুদ্ধে থাকা মামলায় তাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে।
জেলা পুলিশ সুত্র সোমবার বিকেলে এক প্রেসনোটে জানায়, মোঃ সোহেল আমান আর্জেন্ট (৪৫), পিতা-মৃত আমানুল্লাহ আমান, সাং-নয়াদিয়ারী, থানা-গোমস্তাপুর, জেলা-চাপাইনবাবগঞ্জ এর জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে চাচাতো ভাইসহ গ্রামবাসীর সাথে বিরোধের জেরে তার বিরুদ্ধের নাচোল ও গোমস্তাপুর থানায় ০৮(আট) টি নিয়মিত মামলা এবং ততোধিক জিডি হয় এবং তদন্তাধীন আছে।

গত ইং-২৫/০৫/২০২৫ তারিখে নাচোল থানার মামলা নং-১৮ তাং-২৫/০৫/২০২৫ইং, ধারা-১৪৩/৩২৩/৩০৭/৫০৬/১১৪ তৎসহ ৩/৫/৬ ঞযব ঊীঢ়ষড়ংরাব ঝঁনংঃধহপবং অপঃ, ১৯০৮ মামলা রুজু হয়। মোঃ সোহেল আমান আর্জেন্ট উক্ত মামলার এজাহার নামীয় বিবাদী। মামলা রুজু হওয়ার পরে ২৫/০৫/২০২৫ খ্রি. দিবাগত রাতে নাচোল থানা পুলিশ ও ডিবি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে রাজশাহী মহানগরের রাজপাড়া থানার কাজিহাটা এলাকা হতে গ্রেফতার করে। তাকে সোমবার ২৬/০৫/২০২৫ খ্রি. বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ এন এম ওয়াসিম ফিরোজ বলেন, সোহেল আমান (আর্জেন্ট) এর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকায় রাজশাহী মেট্রো পলিটন পুলিশের সহযোগিতায় নাচোল থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী এ্যাড. মোঃ নুরুল ইসলাম সেন্টুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মামলার তদন্ত কারী কর্মকর্তা আসামি সোহেল আমান আর্জেন্টকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে। শুনানী শেষে বিজ্ঞ আদালত রিমান্ড না মুঞ্জুর করেন এবং জেল-হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। জামিন বিষয়ে আগামীতে আবেদন করা হবে বলে জানান তিনি।

“এমন সব কথিত ও ভূঁইফোঁড় সাংবাদিক পরিচয়দানকারীদের জন্য জেলায় প্রকৃত ও পেশাদার সাংবাদিকদের প্রাইশই বিব্রত ও বিতর্কের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। জেলায় কথিত ও ভূঁইফোঁড় সাংবাদিক সোহেল আমান আর্জেন্ট এর মতো আরও কিছু ব্যক্তি রয়েছেন, যাঁরা প্রকৃত সাংবাদিকতা না করে কোন একটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র নিয়ে জেলায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।

সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করে সুবিধা ভোগ করছেন। এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের সাংবাদিক সাজিয়ে সাংবাদিকতা পেশাকে ভুলুন্ঠিত করছেন এবং কলুশিত করছেন। “এমন টায় মনে হচ্ছে, সাংবাদিকতার একটি কার্ড বা পেশা যেন, একটি নিরাপত্তা কার্ড”। এসব অপেশাদার সাংবাদিক বা ভূঁইফোঁড় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় এবং কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন প্রকৃত ও পেশাদার সাংবাদিকবৃন্দ”।