ঢাকা ০৮:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo শ্রীমঙ্গলে সাংবাদিকদের সাথে সংসদ সদস্য প্রার্থী হারুনুর রশিদের মতবিনিময় সভা Logo মোবাইল-ই কাল হলো নবম শ্রেণীর ছাত্রী জ্যামির, শিক্ষকের শাসন -অতঃপর বিষপানের মৃত্যু Logo রাজধানীর বাড্ডা ও শাহজাদপুরে ২ বাসে আগুন Logo রাজধানীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে একজন নিহত Logo চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ সার ব্যবসায়ীকে ১ মাসের কারাদণ্ড ও জরিমানা Logo মহাদেবপুরে আদালতের আদেশ অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা Logo দুর্গাপুরে ‎রাজশাহী-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন  Logo শীতের গন্ধ, তাপমাত্রা কমছে প্রতিদিন দুই ডিগ্রি ঈশ্বরদীতে দোকানে উঠছে শীতের সোয়েটার-জ্যাকেট, কম্বল Logo পদ্মার চরজুড়ে চলছে ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’ Logo নীলফামারীতে চার দফা দাবী বাস্তবায়নে বিসিএস প্রভাষক পরিষদের মানবন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন

পাবনা মহিলা আ.লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় শিক্ষা কর্মকর্তা এখনও বহাল তবিয়তে

সরকারী বিধি লংঘন করে ক্ষমতার দাপটে পাবনায় মহিলা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত সদর উপজেলার সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাঈদা শবনম এখনও বহাল তবিয়্যতে। ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরও অফিসের কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

জানা গেছে সাঈদা শবনম পাবনা-সিরাজগঞ্জ সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি ও জেলা মহিলা লীগের সভাপতি নাদিরা ইয়াসমিন জলির ভাই জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা তৌহিদুল ইসলাম রুপনের স্ত্রী। শবনম ঈশ্বরদী পৌর এলাকার শহীদ আমিনপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার রহমানের মেয়ে এবং উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জুবায়ের বিশ্বাসের বোন।

স্বামী, ননদ ও ভাইয়ের রাজনৈতিক ক্ষমতার দাপটে সরকারি চাকরিবিধির কোনো তোয়াক্কা করতেন না সাঈদা শবনম। সরাসরি মহিলা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। রাজনৈতিক মিছিল, মিটিংসহ মহিলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে সকল কর্মসূচিতেই নেতৃত্ব দিতেন।

অথচ সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা ১৯৭৯-এর ২৫(১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে পারবেন না, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারবেন না এবং কোনো রাজনৈতিক সংগঠনকে সহায়তা করতে পারবেন না।’

অভিযোগ রয়েছে তিনি ক্ষমতার প্রভাবে বিভিন্ন নির্বাচনে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের বাছাইয়ে অঘোষিত সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করতেন। সম্প্রতি জেলায় প্রাথমিক শিক্ষকদের জাতীয় পদক প্রতিযোগিতায় অনুকূল পরিবেশ না থাকায় যোগদানও করতে পারেননি। আওয়ামী লীগ ফিরে আসবে হুমকি দিয়ে কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষকদের নানা ভয়ভীতিও দেখাচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে চাকরির শুরুতে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় যোগদান করলেও সেখান থেকে বদলি হয়ে নাটোরের নলডাঙ্গায় আসেন। তার মাত্র কয়েকদিন পর রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে একজনকে অন্যত্র বদলি করে নিজ জেলা পাবনা সদরে আসেন।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপজেলা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা ও শিক্ষকরা জানান, সাঈদা শবনম ক্ষমতার দাপটে উপজেলা শিক্ষা অফিসে লাগামহীন আধিপত্য গড়ে তুলে ছিলেন। খোদ শিক্ষা কর্মকর্তারাও টুঁ-শব্দ করার সাহস পেতেন না। শিক্ষা অফিসে স্বামীর ঠিকাদারি কাজে প্রভাব বিস্তার করতেন।

তবে নিজের ভুল স্বীকার করে অভিযুক্ত সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাঈদা শবনম বলেন, ‘আমার ননদ যেহেতু রাজনীতি করে, সেহেতু গিয়েছিলাম। কিন্তু এটা (রাজনীতিতে অংশগ্রহণ) সরকারি চাকরিবিধির মধ্যে পড়ে না, এটা আমার ভুল ছিল। কিন্তু আপনারা এই বিষয়টি একটু দেখবেন, ইয়ে কইরেন না ভাই। আমি ব্যক্তিগতভাবে ভবিষ্যতের খুব বেশি সতর্ক থাকব।’

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল কবীর বলেন, ‘আমি তো নতুন। তার রাজনীতির বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগও দেয়নি। এখন দেখি চিন্তা-ভাবনা করে কী করা যায়। আগে বিষয়টা জানি, তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে কীভাবে কী করা যায়।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

শ্রীমঙ্গলে সাংবাদিকদের সাথে সংসদ সদস্য প্রার্থী হারুনুর রশিদের মতবিনিময় সভা

পাবনা মহিলা আ.লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় শিক্ষা কর্মকর্তা এখনও বহাল তবিয়তে

Update Time : ০২:২৪:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

সরকারী বিধি লংঘন করে ক্ষমতার দাপটে পাবনায় মহিলা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত সদর উপজেলার সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাঈদা শবনম এখনও বহাল তবিয়্যতে। ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরও অফিসের কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

জানা গেছে সাঈদা শবনম পাবনা-সিরাজগঞ্জ সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি ও জেলা মহিলা লীগের সভাপতি নাদিরা ইয়াসমিন জলির ভাই জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা তৌহিদুল ইসলাম রুপনের স্ত্রী। শবনম ঈশ্বরদী পৌর এলাকার শহীদ আমিনপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার রহমানের মেয়ে এবং উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জুবায়ের বিশ্বাসের বোন।

স্বামী, ননদ ও ভাইয়ের রাজনৈতিক ক্ষমতার দাপটে সরকারি চাকরিবিধির কোনো তোয়াক্কা করতেন না সাঈদা শবনম। সরাসরি মহিলা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। রাজনৈতিক মিছিল, মিটিংসহ মহিলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে সকল কর্মসূচিতেই নেতৃত্ব দিতেন।

অথচ সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা ১৯৭৯-এর ২৫(১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে পারবেন না, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারবেন না এবং কোনো রাজনৈতিক সংগঠনকে সহায়তা করতে পারবেন না।’

অভিযোগ রয়েছে তিনি ক্ষমতার প্রভাবে বিভিন্ন নির্বাচনে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের বাছাইয়ে অঘোষিত সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করতেন। সম্প্রতি জেলায় প্রাথমিক শিক্ষকদের জাতীয় পদক প্রতিযোগিতায় অনুকূল পরিবেশ না থাকায় যোগদানও করতে পারেননি। আওয়ামী লীগ ফিরে আসবে হুমকি দিয়ে কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষকদের নানা ভয়ভীতিও দেখাচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে চাকরির শুরুতে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় যোগদান করলেও সেখান থেকে বদলি হয়ে নাটোরের নলডাঙ্গায় আসেন। তার মাত্র কয়েকদিন পর রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে একজনকে অন্যত্র বদলি করে নিজ জেলা পাবনা সদরে আসেন।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন উপজেলা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা ও শিক্ষকরা জানান, সাঈদা শবনম ক্ষমতার দাপটে উপজেলা শিক্ষা অফিসে লাগামহীন আধিপত্য গড়ে তুলে ছিলেন। খোদ শিক্ষা কর্মকর্তারাও টুঁ-শব্দ করার সাহস পেতেন না। শিক্ষা অফিসে স্বামীর ঠিকাদারি কাজে প্রভাব বিস্তার করতেন।

তবে নিজের ভুল স্বীকার করে অভিযুক্ত সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাঈদা শবনম বলেন, ‘আমার ননদ যেহেতু রাজনীতি করে, সেহেতু গিয়েছিলাম। কিন্তু এটা (রাজনীতিতে অংশগ্রহণ) সরকারি চাকরিবিধির মধ্যে পড়ে না, এটা আমার ভুল ছিল। কিন্তু আপনারা এই বিষয়টি একটু দেখবেন, ইয়ে কইরেন না ভাই। আমি ব্যক্তিগতভাবে ভবিষ্যতের খুব বেশি সতর্ক থাকব।’

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল কবীর বলেন, ‘আমি তো নতুন। তার রাজনীতির বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগও দেয়নি। এখন দেখি চিন্তা-ভাবনা করে কী করা যায়। আগে বিষয়টা জানি, তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে কীভাবে কী করা যায়।’