
পাবনার সাঁথিয়ায় নকল ইঞ্জেকশন পুশ করায় নিভে গেল কলেজ ছাত্রীর রিপা (২৩) র প্রাণ। নিহত রিপা উপজেলার দুলাই গ্রামের আ: রহমানের মেয়ে ও এডওয়ার্ড কলেজের মাস্টার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। এদিকে অভিযোগ পেয়ে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল ওষুধ কোম্পানীর নকল ইঞ্জেকশন বিক্রয়ের অপরাধে সাঁথিয়ার কাশিনাথপুর কাওসার ফার্মেসীর মালিককে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত।
জানাগেছে, কলেজ ছাত্রী রিপা অসুস্থ হলে তার শরীর ট্রাইফয়েড জ্বর ধরা পড়ে। বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ডাক্তার ইলিয়াস হোসেন রিপাকে স্কয়ার কোম্পানীর সেফট্রোন ইঞ্জেকশন ২গ্রাম আইভি শরীরে পুশ করার পরামর্শ দেন। চিকিৎসকের পরামর্শ মতে কলেজ ছাত্রীকে দুলাই বাজারের মেডিসিন পয়েন্ট থেকে ইঞ্জেকশন ক্রয় করে(যার ব্যাচ নং ছিল ৭ ডিজিটের) পুশ করা হয়। ২১মে পূনরায় একই ইঞ্জেকশন রিপার শরীরে পুশ করলে সে কিছুক্ষনের মধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে। পরে ইঞ্জেকশনটি পূর্বের ইঞ্জেকশনের সাথে মিল করলে তার ব্যাচ নং ( ৮ ডিজিটের) এর গরমিল পাওয়া যায়। যেখানে স্কয়ারের ওষুধ হয় ৭ ডিজিট সেখান পুশ করা ইঞ্জেকশনের রয়েছে ৮ ডিজিটের ব্যাচ নং। ওই ইঞ্জেকশনটি মেডিসিন পয়েন্ট স্কয়ার কোম্পানীর এসআর হাবিবুর রহমানের নিকট থেকে গ্রহণ করেন। যা হাবিবুর রহমান কাশিনাথপুরের কাওসার ফার্মের্সীর নিকট থেকে এনে দেন বলে মেডিসিন পয়েন্টের বিক্রয় প্রতিনিধি জানান।

কলেজ ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনা স্কয়ার কোম্পানীকে অবগত করলে ২২ মে (বহস্পতিবার) কোম্পানীর পক্ষ থেকে পাবনা ড্রাগ সুপারকে বিষয়টি জানানো হয়। ড্রাগ সুপার রোকনুজ্জামান ওই দিনেই বিষয়টি সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী র্কমর্কতা রিজু তামান্না ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে কাওসার ফার্মেসীর মালিক মোস্তফাকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
কলেজ ছাত্রীর কাকা ইমরান খান জানান, ভ্রাম্যমান আদালতের জরিমানায় আমরা আশাহত হয়েছি। কাওসার ফার্মেসী নকল ওষুধ বিক্রয় করে মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা করছে। আমরা তার ব্যবসা বন্ধের দাবী জানাই।
বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ডাক্তার ইলিয়াস হোসেন জানান, ইঞ্জেকশনটি সরাসরি স্কয়ার কোম্পানীর এসআর এর নিকট থেকে সংগ্রহ করা হয়। পরে আমরা কোম্পানীর সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানান, ইঞ্জেকশনটি স্কয়ারের নয়। এটি নকল করা হয়েছে।
এ ব্যাপার স্কয়ারর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রেজাউল করিমের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পুশ করা ইঞ্জেকশনটি স্কয়ারের নয়। আমাদের কোম্পানীর নাম ব্যবহার করে ওষুধটি নকল করা হয়েছে। তিনি বলেন, নকল বন্ধে স্কয়ার প্রতিনিয়ত মোরক ও ডিজাইন পরিবর্তন করে।
পাবনা ড্রাগ সুপার রোকনুজ্জামান জানান, ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ফার্মেসীর মালিককে জরিমানা করা হয়েছে। আমরা স্কয়ার কোম্পানীর এসআর হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা গ্রহণরে দাবী জানিয়েছি কোম্পানীর নিকট। তা ছাড়াও কলেজ ছাত্রীর পরিবার চাইলে তারা আইনের আশ্রয় নিতে পারেন।
সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিজু তামানা জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর কাওসার ফার্মেসীতে অভিযান চালাই। ঘটনাস্থলে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে ৭০ হাজার টাকা ফার্মেসীর মালিককে জরিমানা করা হয়। যা ভ্রাম্যমান আদালতের আইনে সর্বোচ্চ জরিমানা।
পাবনা প্রতিবেদক 


















