রাজশাহীর বিভিন্ন পশুহাটে কেনা-বেচা শুরু হয়েছে। সামনে রয়েছে আর মাত্র চার থেকে পাঁচটি হাট।। বিশেষ করে রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ সিটি হাটে ভালভাবেই শুরু হয়েছে পশু কেনা-বেচা। বুধাবর সকাল থেকে সিটি হাটে গরু ও মহিষ আসতে দেখা যায়। বিভাগের বিভিন্ন এখাকা থেকে এই হাটে পশু নিয়ে আসে ব্যবসায়ী ও গেরস্থরা। বেলা যতই গড়ায় পশুর আমদানি ততই বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে বাড়ে ক্রেতাদের ভিড়ও। গত রোববার থেকে শুরু হয়েছে সিটিহাটে ঈদের কেনাবেচা। এছাড়াও বছরের সকল সময়ে সপ্তাহে এই হাটে দুইদিন করে পশু কেনা-বেচা হয়েছে বলে জানালেন অত্র হাটের ইজারাদারের পার্টনার রাসিক সাবেক কাউন্সিলর রুহুল আমিন টুনু।
তিনি বলেন, এখন করোনার প্রভাব নেই। নেই দেশে স্বৈরাচার ও চাঁদাবাজী। এজন্য এবার কোরবানীর জন্য পশু কেনা-বেচা ভাল বলে আশা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, গত রোববার ছিলো প্রথমে ঈদের হাট। গত হাটে ভাল বেচা-কেনা হয়েছে। যারা কোরবানী পশু ক্রয় করেছেন তারা সন্তষ্ট প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও যারা ব্যবসয়ী তারাও নির্বিঘ্নে পর্তামত দামেই গরুহ মহিষ ক্রয় করেছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
টুনু বলেন, হাটের চারিদিকে নিরাপত্তা বেষ্টনী জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া প্রতি বছরের ন্যায় এবারও জালনোট সনাক্তকরণ মেশিন বসানো হয়েছে। সেইসাথে প্রচার পরিমানে স্বেচ্ছাসেবক রাখা হয়েছে। যে কেউ কারো দ্বারা হয়রানীর স্বীকার না হয়। টুনু বলেন, এবার সিটিহাট বিগত দিনের থেকে প্রায় তিনগুন বেশী দিয়ে ইজারা নেয়া হয়েছে। এজন্য এবার গরু প্রতি ৮০০টাকা এবং মহিষ প্রতি ৯০০শত টাকা করে টোল আদায় করা হচ্ছে। আর এই হাটের মুল ইজাদার হচ্ছে শওকত আলী। সাথে রয়েছে খাইরুল ইসলামসহ আরো কয়েকজন।
ভারতীয় গরু আসা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, ভারতীয় বর্ডার দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ রয়েছে। তবে দেশেই ভারতীয়সহ বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন জাতের গরু-মহিষ পালিত হচ্ছে। সেইসকল গরু মহিষ ব্যবসায়ী ও গেরস্থরা হাটে নিয়ে আসছেন বিক্রি করার জন্য। ঐ সকল গরু-মহিষগুলোকে ভারতীয় মনে বিজিবি সদস্যরা বিভিন্ন স্থান থেকে আটক করছে। এই অবস্থা থেকে বিরত থাকার জন্য তিনি বিজিবি সদস্যদের অনুরোধ করেন। সেইসাথে নির্বিঘ্নে সিটি হাটে গরু-মহিষ কেনা-বেচা করার জন্য ব্যবসায়ী ও অন্যান্য ক্রেতাদের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যারা পশু কোরবানী করবেন তাদের সুবিধার্থে কোরবানী ঈদের চাঁদ দেখা থেকে শুরু করে টানা দশদিন ২৪ঘন্টা পশুহাট চলবে।
এদিকে রাজশাহী প্রানী সম্পদ কার্যালয়ের বরাত দিয়ে জানা গেছে রাজশাহীতে চলতি বছরের কোরবানীর জন্য চার লক্ষ ছিয়ানব্বই হাজার আটশত তিরানব্বটি পশু তৈরী করা হয়েছে। আর এবারে লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে তিন লক্ষ চুরাশি হাজার চারশত সাঁইত্রিশটি পশুর। উদ্বৃত্ত রয়েছে এক লক্ষ আট হাজার চারশত পঞ্চান্নটি। এবারে জেলায় বাইশ হাজার একশ আটানব্বইটি খামারে কোরবানীর পশু লালনপালন করা হয়েছে। এছাড়াও গেরস্থ পর্যায়েও অনেক গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া কোরবানীর জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এজন্য কোরাবানী নিয়ে বাড়তি চিন্তা না করতে পরামর্শ দিয়েছে রাজশাহী প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ে কর্মকর্তাগণ।
এদিকে জেলার মহিশালবাড়ী, কাকনহাট, কাটাকালী, বানেশ্বর, খরখড়ী, রামচন্দ্রপুর ও নওহাটাসহ প্রায় হাটেই ঈদের জন্য পশু বেচা-কেনা শুরু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।