ঢাকা ০৬:২৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo তানোর-গোদাগাড়ীতে প্রার্থী ঘোষণায় সরগরম বিএনপির তৃণমূল Logo বিএনপিতে ফেরায় সংবর্ধিত হলেন কমেট চৌধুরী Logo ঈশ্বরদীতে ক্ষুধায় বাবা মায়ের কবরের কাছে গিয়ে খাবার চাওয়া সাগরের দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান Logo জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ১৮ প্রকল্প অনুমোদন Logo দেড় হাজার কোটি টাকার প্রকল্প  গ্যাস পাওয়ার অপেক্ষা ফুরাচ্ছে না দুই বছরেও Logo আটঘরিয়া জ্যামীর আত্মহত্যাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ মিছিল, প্রশাসনে স্মারকলিপি প্রদান Logo দৈনিক বার্তার অনলাইন ও মাল্টিমিডিয়ার প্রকাশনার সফলতা কামনা করলেন রোকেয়া রাজ্জাক জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন’-এর প্রতিষ্ঠাতা সিদ্দিকুর রহমান হাওলাদার Logo পাবনা-৩ আসনে বিএনপির জনসমুদ্রে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবী Logo স্কয়ার ফার্মারর বিরুদ্ধে ডোজ প্রতারণা ও রিপ্যাকিংয়ের অভিযোগে প্রেস কনফারেন্স শনিবার Logo ৫৭ বছরেও শেবাচিমে চালু হয়নি নিউরো ওয়ার্ড, স্ট্রোকের রোগীদের চরম ভোগান্তি
শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডে ২৬ জন বরখাস্ত

দাবি আদায়ের নামে রূপপুর প্রকল্প বন্ধের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঈশ্বরদীতে মানববন্ধন ও সমাবেশ,

দাবি আদায়ের নামে পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার ( ১৫ মে) সকাল ১০ টা থেকে ঈশ্বরদী স্টেশন রোডের প্রাণকেন্দ্র ফকিরের বটতলায় বিশাল মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঈশ্বরদী সচেতন নাগরিক সমাজ আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে ঈশ্বরদীর সর্বস্তরের মানুষ অংশ গ্রহণ করেন। এতে ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের সভাপতি আজিজুর রহমান শাহিনের সভাপতিত্বে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, ঈশ্বরদী সচেতন নাগরিক সমাজের পক্ষে ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস এম ফজলুর রহমান। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে এনপিপিসিএল কতিপয় কর্মকর্তা কর্মচারী দাবি আদায়ের নামে প্রকল্প এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। এই অবস্থায় প্রকল্প চালু করে জাতীয় গ্রীডে বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়টি অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে ঈশ্বরদীবাসী দীর্ঘদিনের স্বপ্নের প্রকল্পকে বন্ধ করার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে আজ বৃহস্পতিবার রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছে । আমরা যতদূর জানি,এমনিতেই নানা কারণে রুপপুর প্রকল্প হতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে জাতীয় গ্রীডে সরবরাহের কাজ অনেক পিছিয়ে গেছে। এই মুহূর্তে ৯৪ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। চলতি মাসেই গ্রীডের সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ হবার কথা। এরপর ডিসেম্বরে স্টার্টআপ করার কথা। এই অবস্থায় প্রকল্প এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ঘটনা অশুভ সংকেত বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণকারী রাশিয়ার মূল ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট ( এএসই), সাব -ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিকিমথ, টেস্ট রোসেম, ইএসকেইম, এএমটি, রুইনওয়ার্ল্ডসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানির রাশিয়ান কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ইতিমধ্যেই অভিযোগ করে বলেন যে দাবি আদায়ের নামে এভাবে প্রকল্পের ভেতরে বাঙ্গালীদের উত্তেজনা ও বিশৃঙ্খলাময় কর্মসূচি পালন করতে দেখে তারা নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ঈশ্বরদী রূপপুর পারমানিক বিদ্যুৎ প্রকল্প ঘিরে রাশিয়ান সহ বিদেশীদের আগমনে ঈশ্বরদীর আর্থসামাজিক অবস্থার ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। স্থানীয়ভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসার এবং প্রকল্পের দেশীয় প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক কাজ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। রূপপুর প্রকল্প ঘিরে অন্তর্বর্তী সরকার ঈশ্বরদী বিমানবন্দর চালুর বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।
আমরা যতদূর জানতে পেরেছি , এনপিসিবিএল -এ যোগদানকারী একজন গ্রাজুয়েট কর্মকর্তা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ প্রায় এক লাখ বিশ হাজার টাকা বেতন পায়। এরপরও দাবি আদায়ের আন্দোলনের নামে কতিপয় কর্মকর্তা কর্মচারী এই প্রকল্পকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মুখে ঠেলে দিচ্ছেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে রূপপুর প্রকল্পের নিরাপত্তা বিঘ্নিতকারী এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

সমাবেশ ও পথসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মোস্তাক আহমেদ কিরণ, এস এম আলমগীর, আমিনুর রহমান স্বপন, শামসুজ্জামান পীপপু, আনোয়ার হোসেন জনি, আবু সায়ীদ লিটন, ইমরুল কায়েস সুমন, রফিকুল ইসলাম রকি, রফিকুল ইসলাম নয়ন, শামীম আরা সাথী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র প্রতিনিধি ইব্রাহিম হোসেন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত আরও আট কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে বরখাস্তকৃতদের প্রকল্প এলাকা ও আবাসিক এলাকা গ্রিন সিটিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ মে) কেন্দ্রের রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানির পরিচালক মো. জাহেদুল হাসান স্বাক্ষরিত দুটি পৃথক চিঠিতে এ তথ্য জানান।
তারা হলেন, এনপিসিবিএলের সহকারী ব্যবস্থাপক ইখতিয়ার উদ্দিন, শামীম আহম্মেদ, মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, মো. গোলাম, ঊর্ধ্বতন সহকারী ব্যবস্থাপক মো. মনির, ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী গোলাম আজম, টেকনিশিয়ান রিয়াজ উদ্দিন ও ইসমাইল হোসেন।
নোটিশে বলা হয়, বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকা ও এনপিসিবিএলে শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডে ছিলেন তারা। তাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না সেটি আগামী ১০ দিনের মধ্যে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৪ মে ) রাতে রূপপুর প্রকল্পের সাইট ইনচার্জ রুহুল কুদ্দুস বলেন, বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলনের জেরে এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর কয়েকদিন আগেও ১৮ জনকে চাকরি থেকে অব্যাহতি (টার্মিনেশন) দেওয়া হয়।
প্রকল্পের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, বিভিন্ন দাবিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি বড় অংশ ২৮ এপ্রিল থেকে আন্দোলন শুরু করে। গত ৬ মে তারা ঈশ্বরদীতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেন। পরদিন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে কোম্পানির অফিসে তারা অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ করেন। এতে এনপিসিবিএল কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে চাকরিবিধি ও কোম্পানির আইন মেনে চলার চিঠি দেন। এরমধ্যে ১৩ মে তারা পুনরায় প্রকল্প এলাকায় বিক্ষোভ করে। এসময় প্রকল্পের বিভিন্ন বিভাগে দায়িত্বরত ম্যানেজারদের হুমকি-ধমকি দেন তারা।
এর আগে শৃংখলা ভঙ্গের দায়ে পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের ১৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরি হতে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’ তাঁদের রূপপুর প্রকল্প ও গ্রিন সিটি বহুতল আবাসিক এলাকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করে পৃথক চিঠি দেওয়া হয়েছে। চাকরিচ্যুত ব্যক্তিরা নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (এনপিসিবিএল) রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন।

কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. জাহেদুল হাছান স্বাক্ষরিত এক পত্রে এই অব্যাহতির কথা জানানো হয়। এতে ১৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রত্যেককে শনিবার (১০ মে) রাতে ই-মেইলসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন মহলে জানানো হয়। চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সূত্রে জানা গেছে, নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (এনপিসিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ড. মো. জাহেদুল হাছান স্বাক্ষরিত অব্যাহতিপত্রে কোম্পানির ১৮ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা ঢাকায় আলোচনা অব্যাহত রেখেছেন। অব্যাহতি প্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের রয়েছেন ১৫ জন বিএসসি এবং ৩ জন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার।
নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ হলেন, ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট হাসমত আলী (প্রধান কার্যালয়), উর্দ্বতন সহকারী ব্যবস্থাপক শহিদুল ইসলাম, আবু রায়হান, রফিকুল হাসান, আয়নাল হোসেন, নাঈম আল সাকিব, আবু সাঈদ, এ কে এম আব্দুল আল আমিন, শাহ ইখতিয়ার আলম, ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ, সহকারী ব্যবস্থাপক আব্দুল আল নোমান, আসিফ খান, মুহাম্মদ ইমামুল আরেফিন, ইকরাম, রুহুল আমিন, উপ-সহকারী ব্যবস্থাপক ইসমাইল হোসেন, রুবেল হোসেন এবং টেকনিশিয়ান ফিরোজ আহমেদ।
ভুক্তভোগী কর্মকর্তাদের মধ্যে উপ-সহকারী ব্যবস্থাপক রুবেল হোসেন জানান, এমডি ড. জাহেদুল হাছান রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ধ্বংসের নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তার নানা অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও দূর্নীতির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করায় আমাদেরকে চাকুরীচ্যুত করা হয়েছে।

অব্যাহতিপত্রে বলা হয়, নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের ইমপ্লইজ সার্ভিস রেজুলেশন’ ২০২৫ এর প্রবিধান ৫২.১ অনুযায়ী অব্যাহতি প্রদান করা হলো। একই সঙ্গে পৃথক আরেকটি পত্রে নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের রূপপুর প্রকল্প এলাকায় ও গ্রিণসিটিতে প্রবেশ বন্ধে অনুরোধ করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে।

ভুক্তভোগী কর্মকর্তাদের মধ্যে উপ-সহকারী ব্যবস্থাপক রুবেল হোসেন জানান, এমডি ড. জাহেদুল হাসানের অপসারণসহ বিভিন্ন দাবী-দাওয়া নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করায় আমাদেরকে চাকুরীচ্যুত করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জনৈক কর্মকর্তা জানান, আন্তর্জাতিক স্পর্শকাতক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হিসেবে রূপপুর প্রকল্প সার্বক্ষণিক আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থার নজরদারিতে থাকে। পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে আন্দোলন, সমাবেশ বিশ্বে নজিরবিহীন। নিরপত্তার শর্ত ভেঙে প্রকল্প এলাকায় মিছিল-সমাবেশ করে আন্দোলনকারীরা শুধু চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজই করেননি, প্রকল্পের অগ্রগতি ও পরবর্তী ধাপের লাইসেন্স প্রাপ্তিও হুমকিতে ফেলেছেন। ফলে, নীতিগত ভাবেই তাদের চাকুরিতে বহাল থাকার কোন সুযোগ নেই। তাদের অন্য কোন চক্রান্তে যোগসাজশ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, প্রকল্পের কর্মীদের চাকুরী সংক্রান্ত অভাব অভিযোগ থাকতেই পারে। কিন্তু আন্দোলনকারীদের হঠকারী আচরণে মনে হয়েছে তারা পরিকল্পিত ভাবে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে মাঠে নেমেছে। নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তাদের দাবির যৌক্তিকতা বিচার করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা তা শুনতে নারাজ।

সূত্রটি আরো জানায়, এনপিসিবিএল এর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকার মালিকানাধীন দেশের সকল প্রতিষ্ঠানের চেয়ে বেশী বেতন পেয়ে থাকেন। উদাহরণস্বরূপ তিনি জানান, এনপিসিবিএলে ৭ম গ্রেডের কর্মকর্তা সিনিয়র এসিটেন্ট ম্যানেজারের মূল বেতন ৭৫,৬০০ টাকা। বাড়ী ভাড়া ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ হারে ৩০,২৪০ টাকা থেকে ৪৫,৩৬০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ২৫০০ টাকা, স্পেশাল এলাউন্স ৫ শতাংশ হারে ৩৭৮০ টাকা এবং ৪০ শতাংশ প্রজেক্ট ভাতা ৩০২৪০ টাকাসহ সাকুল্যে ১,৪২,৩৬০ টাকা পান। এরসাথে ৪ শতাংশ ইনক্রিমেন্টও পান। একই ভাবে অন্যান্য গ্রেডের কর্মকর্তারাও সরকারী অন্যান্য কোম্পানির চেয়ে অনেক বেশী বেতন পেয়ে থাকেন। তাস্বত্তেও তারা নানা দাবিতে আন্দোলন-হট্টগোল করেছেন। এমনকি নির্মাণ ও অর্থায়নকারী রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান ও কর্মকৌশল নিয়ে বিরূপ মন্তব্য ও বিষোদগার করেছেন। যা এই প্রকল্পের জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
এ বিষয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. জাহেদুল হাছান বলেন, নীতিমালা ও চাকুরী বিধি অনুযায়ী অব্যাহতি প্রাপ্তদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর বেশী কিছু আমার বলার নেই।

বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে ঈশ্বরদীর রূপপুরে কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি বড় অংশ গত ২৮ এপ্রিল থেকে আন্দোলন শুরু করেন। ৬ মে তাঁরা ঈশ্বরদী শহরে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেন। পরদিন ৭ মে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে কোম্পানির অফিসে তারা অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ করেন। এতে এনপিসিবিএল কর্তৃপক্ষ তাঁদের চাকরিবিধি ও কোম্পানির আইন মেনে চলার জন্য চিঠি দেয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

তানোর-গোদাগাড়ীতে প্রার্থী ঘোষণায় সরগরম বিএনপির তৃণমূল

শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডে ২৬ জন বরখাস্ত

দাবি আদায়ের নামে রূপপুর প্রকল্প বন্ধের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঈশ্বরদীতে মানববন্ধন ও সমাবেশ,

Update Time : ০৫:৩৪:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫

দাবি আদায়ের নামে পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার ( ১৫ মে) সকাল ১০ টা থেকে ঈশ্বরদী স্টেশন রোডের প্রাণকেন্দ্র ফকিরের বটতলায় বিশাল মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঈশ্বরদী সচেতন নাগরিক সমাজ আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে ঈশ্বরদীর সর্বস্তরের মানুষ অংশ গ্রহণ করেন। এতে ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের সভাপতি আজিজুর রহমান শাহিনের সভাপতিত্বে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, ঈশ্বরদী সচেতন নাগরিক সমাজের পক্ষে ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস এম ফজলুর রহমান। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে এনপিপিসিএল কতিপয় কর্মকর্তা কর্মচারী দাবি আদায়ের নামে প্রকল্প এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। এই অবস্থায় প্রকল্প চালু করে জাতীয় গ্রীডে বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়টি অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে ঈশ্বরদীবাসী দীর্ঘদিনের স্বপ্নের প্রকল্পকে বন্ধ করার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে আজ বৃহস্পতিবার রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছে । আমরা যতদূর জানি,এমনিতেই নানা কারণে রুপপুর প্রকল্প হতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে জাতীয় গ্রীডে সরবরাহের কাজ অনেক পিছিয়ে গেছে। এই মুহূর্তে ৯৪ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। চলতি মাসেই গ্রীডের সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ হবার কথা। এরপর ডিসেম্বরে স্টার্টআপ করার কথা। এই অবস্থায় প্রকল্প এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ঘটনা অশুভ সংকেত বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণকারী রাশিয়ার মূল ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট ( এএসই), সাব -ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিকিমথ, টেস্ট রোসেম, ইএসকেইম, এএমটি, রুইনওয়ার্ল্ডসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানির রাশিয়ান কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ইতিমধ্যেই অভিযোগ করে বলেন যে দাবি আদায়ের নামে এভাবে প্রকল্পের ভেতরে বাঙ্গালীদের উত্তেজনা ও বিশৃঙ্খলাময় কর্মসূচি পালন করতে দেখে তারা নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ঈশ্বরদী রূপপুর পারমানিক বিদ্যুৎ প্রকল্প ঘিরে রাশিয়ান সহ বিদেশীদের আগমনে ঈশ্বরদীর আর্থসামাজিক অবস্থার ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। স্থানীয়ভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসার এবং প্রকল্পের দেশীয় প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক কাজ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। রূপপুর প্রকল্প ঘিরে অন্তর্বর্তী সরকার ঈশ্বরদী বিমানবন্দর চালুর বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।
আমরা যতদূর জানতে পেরেছি , এনপিসিবিএল -এ যোগদানকারী একজন গ্রাজুয়েট কর্মকর্তা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ প্রায় এক লাখ বিশ হাজার টাকা বেতন পায়। এরপরও দাবি আদায়ের আন্দোলনের নামে কতিপয় কর্মকর্তা কর্মচারী এই প্রকল্পকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মুখে ঠেলে দিচ্ছেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে রূপপুর প্রকল্পের নিরাপত্তা বিঘ্নিতকারী এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

সমাবেশ ও পথসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মোস্তাক আহমেদ কিরণ, এস এম আলমগীর, আমিনুর রহমান স্বপন, শামসুজ্জামান পীপপু, আনোয়ার হোসেন জনি, আবু সায়ীদ লিটন, ইমরুল কায়েস সুমন, রফিকুল ইসলাম রকি, রফিকুল ইসলাম নয়ন, শামীম আরা সাথী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র প্রতিনিধি ইব্রাহিম হোসেন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত আরও আট কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে বরখাস্তকৃতদের প্রকল্প এলাকা ও আবাসিক এলাকা গ্রিন সিটিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ মে) কেন্দ্রের রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানির পরিচালক মো. জাহেদুল হাসান স্বাক্ষরিত দুটি পৃথক চিঠিতে এ তথ্য জানান।
তারা হলেন, এনপিসিবিএলের সহকারী ব্যবস্থাপক ইখতিয়ার উদ্দিন, শামীম আহম্মেদ, মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, মো. গোলাম, ঊর্ধ্বতন সহকারী ব্যবস্থাপক মো. মনির, ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী গোলাম আজম, টেকনিশিয়ান রিয়াজ উদ্দিন ও ইসমাইল হোসেন।
নোটিশে বলা হয়, বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকা ও এনপিসিবিএলে শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডে ছিলেন তারা। তাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না সেটি আগামী ১০ দিনের মধ্যে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৪ মে ) রাতে রূপপুর প্রকল্পের সাইট ইনচার্জ রুহুল কুদ্দুস বলেন, বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলনের জেরে এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর কয়েকদিন আগেও ১৮ জনকে চাকরি থেকে অব্যাহতি (টার্মিনেশন) দেওয়া হয়।
প্রকল্পের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, বিভিন্ন দাবিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি বড় অংশ ২৮ এপ্রিল থেকে আন্দোলন শুরু করে। গত ৬ মে তারা ঈশ্বরদীতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেন। পরদিন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে কোম্পানির অফিসে তারা অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ করেন। এতে এনপিসিবিএল কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে চাকরিবিধি ও কোম্পানির আইন মেনে চলার চিঠি দেন। এরমধ্যে ১৩ মে তারা পুনরায় প্রকল্প এলাকায় বিক্ষোভ করে। এসময় প্রকল্পের বিভিন্ন বিভাগে দায়িত্বরত ম্যানেজারদের হুমকি-ধমকি দেন তারা।
এর আগে শৃংখলা ভঙ্গের দায়ে পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের ১৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরি হতে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’ তাঁদের রূপপুর প্রকল্প ও গ্রিন সিটি বহুতল আবাসিক এলাকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করে পৃথক চিঠি দেওয়া হয়েছে। চাকরিচ্যুত ব্যক্তিরা নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (এনপিসিবিএল) রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন।

কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. জাহেদুল হাছান স্বাক্ষরিত এক পত্রে এই অব্যাহতির কথা জানানো হয়। এতে ১৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রত্যেককে শনিবার (১০ মে) রাতে ই-মেইলসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন মহলে জানানো হয়। চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সূত্রে জানা গেছে, নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (এনপিসিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ড. মো. জাহেদুল হাছান স্বাক্ষরিত অব্যাহতিপত্রে কোম্পানির ১৮ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা ঢাকায় আলোচনা অব্যাহত রেখেছেন। অব্যাহতি প্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের রয়েছেন ১৫ জন বিএসসি এবং ৩ জন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার।
নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ হলেন, ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট হাসমত আলী (প্রধান কার্যালয়), উর্দ্বতন সহকারী ব্যবস্থাপক শহিদুল ইসলাম, আবু রায়হান, রফিকুল হাসান, আয়নাল হোসেন, নাঈম আল সাকিব, আবু সাঈদ, এ কে এম আব্দুল আল আমিন, শাহ ইখতিয়ার আলম, ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ, সহকারী ব্যবস্থাপক আব্দুল আল নোমান, আসিফ খান, মুহাম্মদ ইমামুল আরেফিন, ইকরাম, রুহুল আমিন, উপ-সহকারী ব্যবস্থাপক ইসমাইল হোসেন, রুবেল হোসেন এবং টেকনিশিয়ান ফিরোজ আহমেদ।
ভুক্তভোগী কর্মকর্তাদের মধ্যে উপ-সহকারী ব্যবস্থাপক রুবেল হোসেন জানান, এমডি ড. জাহেদুল হাছান রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ধ্বংসের নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তার নানা অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও দূর্নীতির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করায় আমাদেরকে চাকুরীচ্যুত করা হয়েছে।

অব্যাহতিপত্রে বলা হয়, নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের ইমপ্লইজ সার্ভিস রেজুলেশন’ ২০২৫ এর প্রবিধান ৫২.১ অনুযায়ী অব্যাহতি প্রদান করা হলো। একই সঙ্গে পৃথক আরেকটি পত্রে নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের রূপপুর প্রকল্প এলাকায় ও গ্রিণসিটিতে প্রবেশ বন্ধে অনুরোধ করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে।

ভুক্তভোগী কর্মকর্তাদের মধ্যে উপ-সহকারী ব্যবস্থাপক রুবেল হোসেন জানান, এমডি ড. জাহেদুল হাসানের অপসারণসহ বিভিন্ন দাবী-দাওয়া নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করায় আমাদেরকে চাকুরীচ্যুত করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জনৈক কর্মকর্তা জানান, আন্তর্জাতিক স্পর্শকাতক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হিসেবে রূপপুর প্রকল্প সার্বক্ষণিক আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থার নজরদারিতে থাকে। পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে আন্দোলন, সমাবেশ বিশ্বে নজিরবিহীন। নিরপত্তার শর্ত ভেঙে প্রকল্প এলাকায় মিছিল-সমাবেশ করে আন্দোলনকারীরা শুধু চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজই করেননি, প্রকল্পের অগ্রগতি ও পরবর্তী ধাপের লাইসেন্স প্রাপ্তিও হুমকিতে ফেলেছেন। ফলে, নীতিগত ভাবেই তাদের চাকুরিতে বহাল থাকার কোন সুযোগ নেই। তাদের অন্য কোন চক্রান্তে যোগসাজশ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, প্রকল্পের কর্মীদের চাকুরী সংক্রান্ত অভাব অভিযোগ থাকতেই পারে। কিন্তু আন্দোলনকারীদের হঠকারী আচরণে মনে হয়েছে তারা পরিকল্পিত ভাবে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে মাঠে নেমেছে। নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তাদের দাবির যৌক্তিকতা বিচার করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা তা শুনতে নারাজ।

সূত্রটি আরো জানায়, এনপিসিবিএল এর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকার মালিকানাধীন দেশের সকল প্রতিষ্ঠানের চেয়ে বেশী বেতন পেয়ে থাকেন। উদাহরণস্বরূপ তিনি জানান, এনপিসিবিএলে ৭ম গ্রেডের কর্মকর্তা সিনিয়র এসিটেন্ট ম্যানেজারের মূল বেতন ৭৫,৬০০ টাকা। বাড়ী ভাড়া ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ হারে ৩০,২৪০ টাকা থেকে ৪৫,৩৬০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ২৫০০ টাকা, স্পেশাল এলাউন্স ৫ শতাংশ হারে ৩৭৮০ টাকা এবং ৪০ শতাংশ প্রজেক্ট ভাতা ৩০২৪০ টাকাসহ সাকুল্যে ১,৪২,৩৬০ টাকা পান। এরসাথে ৪ শতাংশ ইনক্রিমেন্টও পান। একই ভাবে অন্যান্য গ্রেডের কর্মকর্তারাও সরকারী অন্যান্য কোম্পানির চেয়ে অনেক বেশী বেতন পেয়ে থাকেন। তাস্বত্তেও তারা নানা দাবিতে আন্দোলন-হট্টগোল করেছেন। এমনকি নির্মাণ ও অর্থায়নকারী রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান ও কর্মকৌশল নিয়ে বিরূপ মন্তব্য ও বিষোদগার করেছেন। যা এই প্রকল্পের জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
এ বিষয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. জাহেদুল হাছান বলেন, নীতিমালা ও চাকুরী বিধি অনুযায়ী অব্যাহতি প্রাপ্তদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর বেশী কিছু আমার বলার নেই।

বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে ঈশ্বরদীর রূপপুরে কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি বড় অংশ গত ২৮ এপ্রিল থেকে আন্দোলন শুরু করেন। ৬ মে তাঁরা ঈশ্বরদী শহরে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেন। পরদিন ৭ মে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে কোম্পানির অফিসে তারা অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ করেন। এতে এনপিসিবিএল কর্তৃপক্ষ তাঁদের চাকরিবিধি ও কোম্পানির আইন মেনে চলার জন্য চিঠি দেয়।