পৃথিবী থেকে ১২৪ আলোকবর্ষ দূরে এক দৈত্যাকার গ্রহে প্রাণের অস্তিত্বের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা। সৌরজগতের বাইরের প্রাণের সন্ধানে এটি একটি যুগান্তকারী অগ্রগতি বলে বিবেচিত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার গার্ডিয়ান, নিউইয়র্ক টাইমসসহ বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম এ খবর জানিয়েছে।
জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপে ধরা পড়া এই গ্রহের নাম রাখা হয়েছে কে ২-১৮ বি। পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা এই গ্রহের বায়ুমণ্ডলে এমন দুটি রাসায়নিক গ্যাসের চিহ্ন পেয়েছেন, যেগুলো পৃথিবীতে কেবল জীবপ্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তৈরি হয়।
গ্যাস দুটি হচ্ছে ডাইমিথাইল সালফাইড (ডিএমএস) ও ডাইমিথাইল ডিজালফাইড (ডিএমডিএস)। পৃথিবীতে মূলত সামুদ্রিক ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটনের মতো শৈবালজাতীয় অণুজীব এসব গ্যাস তৈরি করে। এসব গ্যাসের অস্তিত্বের জন্য ধারণা করা হচ্ছে, গ্রহটিতে বিপুল পরিমাণে অণুজীব থাকতে পারে।
তবে বিজ্ঞানীরা জোরালোভাবে বলছেন, প্রকৃত জীবন্ত প্রাণীর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে, এমন ঘোষণা দেওয়া ঠিক হবে না। বরং একে জীবপ্রক্রিয়ার ইঙ্গিত হিসেবে দেখতে হবে।
এই আবিষ্কারে নেতৃত্ব দেওয়া ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিকু মধুসূদন গার্ডিয়ানকে বলেন, 'এখন পর্যন্ত সৌরজগতের বাইরে প্রাণের অস্তিত্বের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রমাণ এটি। তবে আমরা সতর্ক থাকছি। নিজেদের প্রশ্ন করে যাচ্ছি—এই সংকেত কি আসলেই বাস্তব? বাস্তব হলে এটি আসলে কী বোঝায়?'
কে ২- ১৮ বি গ্রহটি পৃথিবীর চেয়ে ৮ দশমিক ৬ গুণ বড়। পৃথিবীর চেয়ে এর ব্যাসার্ধ ২ দশমিক ৬ গুণ বড়। সূর্যের চেয়ে আকারে ছোট, এমন এক লাল বামন তারার চারপাশে ঘুরছে গ্রহটি। কক্ষপথের 'বাসযোগ্য অঞ্চলে' ঘুরছে গ্রহটি। অর্থাৎ, গ্রহ থেকে দূরত্বের হিসেবে এখানে তরল পানির অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা আছে। প্রাণের অস্তিত্বের জন্য পানিকে অপরিহার্য উপাদান হিসেবে দেখা হয়।
গ্রহটি পৃথিবী থেকে প্রায় ১২৪ আলোকবর্ষ দূরে লিও নক্ষত্রমণ্ডলে অবস্থান করছে।